এটা জুয়াড়িদের দেশ হয়ে গেছে: ফখরুল

দেশ পরিচালনায় ব্যর্থ হয়ে সরকার জুয়ার আশ্রয় নিয়েছে, বলেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 22 Sept 2019, 09:02 AM
Updated : 22 Sept 2019, 09:02 AM

গত কয়েকদিনে ক্ষমতাসীন দলের নেতাদের পৃষ্ঠপোষকতায় বিভিন্ন ক্লাবে চলা জুয়ার আসরে অভিযানের প্রসঙ্গ টেনে রোববার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে এক মানববন্ধন কর্মসূচিতে তিনি এ কথা বলেন।

ফখরুল বলেন, “গত কয়েকদিন ধরে খবরের কাগজে দেখছেন আপনারা- কী অবস্থা? মনে হচ্ছে দেশটা জুয়াড়িদের দেশ হয়ে গেছে। এই সরকারকে আমি যদি বলি- এটা জুয়াড়িদের সরকার, তাকে আমার কোনো অপরাধ হতে পারে বলেন? সম্পূর্ণভাবে এখন গ্যাম্বলারদের মধ্যে পড়ে গেছে, গ্যাম্বলিংয়ে চলে গেছে।

“আমরা বলতে চাই, এই সরকার সব কিছুতেই ব্যর্থ হয়ে এখন জুয়ার আশ্রয় নিয়েছে। জুয়া খেলে যদি কোনো রকমে টেকা যায়। এভাবে টেকা যাবে না। এটা হচ্ছে গণতন্ত্রের দেশ, গণতন্ত্রকামী মানুষের দেশ, স্বাধীনতা যুদ্ধ করা দেশ এটা।”

এই মুহূর্তে সরকারের পদত্যাগ করা উচিত মন্তব্য করে ফখরুল বলেন, “অন্যথায় জনগণ অতীতে যেভাবে রায় দিয়েছে, সেভাবেই আপনাদের বিরুদ্ধে অবস্থান নেবে এবং আপনাদেরকে বাধ্য করবে জনগণের সরকার গঠন করার জন্য, পার্লামেন্ট গঠন করার জন্য এবং নির্বাচন করার জন্য।”

সম্প্রতি ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের বিরুদ্ধে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের কাছে উন্নয়ন প্রকল্প থেকে চাঁদা দাবির অভিযোগ ওঠার পর তাদের সরে যেতে হয়।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, “চিন্তা করতে পারেন! ছাত্রনেতা, ছাত্রলীগের প্রেসিডেন্ট তিনি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলরকে বলেছেন যে, আপনার ৪০০-৫০০ কোটি টাকার যে প্রজেক্ট আছে এজন্য আমাকেই দিতে হবে ৮৬ কোটি টাকা। সেটাকে বলছে ফেয়ার শেয়ার। সেটা নাকি তার ভাগ।

“আজকের খবরের কাগজে দেখবেন, এই যে শামীম (জি কে শামীম)। সে ৫০০ কোটি টাকার কাজ করছে বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোতে এবং এটা সম্পূর্ণ সে পায়, সরকারের নির্দেশেই পায়। আজকে প্রত্যেকটি আওয়ামী লীগের ছোট নেতা, বড় নেতা, পাতি নেতা, তাদের দাপটে বাংলাদেশে আর কেউ থাকতে পারছে না। সরকারি কর্মচারীরা চুপচুপ চলে যান মান-সন্মান, ইজ্জত নিয়ে। যা হুকুম করে তাই করতে হয়- চাঁদা দাও, নইলে যাও, টেন্ডার দাও, নইলে যাও। এই হচ্ছে অবস্থা।”

অর্থনীতি মুখ থুবড়ে পড়েছে

ফখরুল বলেন, “অর্থনীতি নাকি মডেল হয়ে গেছে, সাংঘাতিক রোলিং অর্থনীতি। এমন মডেল হয়েছে যে, মুখ থুবড়ে পড়েছে। ব্যাংকে গেলে- টাকা নাই। আপনি দুই লক্ষ টাকার চেক নিয়ে যান- বলবে ভাই আজকে দেওয়া যাবে না, কালকে আসুন। ১০ লক্ষ তো প্রশ্নই উঠে না।

“আর কী করছেন? যারা ঋণখেলাপি, তাদের ঋণ মাফ করে দিচ্ছেন। কারণ আপনাদের বড় বড় নেতা-মন্ত্রী-এডভাইজার হাজার হাজার কোটি টাকার ঋণ নিয়েছে।”

তিনি বলেন, “আজকের পত্রিকায় আছে, এই যে ক্যাসিনো, এই ক্যাসিনোতে চাকরি করে কারা? বিদেশিরা, তারা টাকা পাচার করে। গতিএক বছরে ২৭ হাজার কোটি টাকা পাচার হয়ে গেছে।

“কানাডাতে বেগমপাড়াতে বাড়ি কিনে, মালয়েশিয়াতে সেকেন্ড হোম কিনে, লন্ডনের সবচাইতে পশ এলাকা আছে, সেখানে বাড়ি কেনা হয়। আমরা সব খবরই রাখি। কে কত টাকা পাচার করছেন, কে কতটি বাড়ি কিনছেন, কে কতগুলো ব্যবসা করছেন, সুইস ব্যাংকে কার কত টাকা জমা হচ্ছে- এদেশের মানুষ সমস্ত খবরই রাখে।”

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের উদ্যোগে এই মানববন্ধন হয়।

সংগঠনের সভানেত্রী আফরোজা আব্বাসের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক সুলতানা আহমেদের পরিচালনায় মানববন্ধনে বিএনপির নুরে আরা সাফা, মহিলা দলের হেলেন জেরিন খান, নেওয়াজ হালিমা আরলি, খান শামসুন্নাহার প্রমুখ বক্তব্য দেন।