দলের ৪১তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে সোমবার রাজধানীতে শোভাযাত্রা বের করে বিএনপি সোমবার বিএনপি। বিকাল ৩টায় নয়া পল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে শুরু হয়ে নাইটিঙ্গেল মোড় দিয়ে শান্তিনগরে এসে তা শেষ হয়।
দলীয় ও জাতীয় পতাকা, রঙ-বেরঙের ব্যানার-ফেস্টুন, জিয়াউর রহমান, খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের প্রতিকৃতিসহ নানা বাদ্যযন্ত্র নিয়ে বিএনপি ও দলের সহযোগী সংগঠনের হাজার হাজার নেতাকর্মী এই শোভাযাত্রায় অংশ নেয়।
এই কর্মসূচি আয়োজনে জমকালোভাব থাকলেও নেতা-কর্মীদের স্লোগান আর সমাবেশে বক্তব্যে খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিই প্রাধান্য পেয়েছিল।
“তাই আজকে বাংলাদেশের সমস্ত মানুষকে জাগ্রত করতে হবে। বিএনপির দায়িত্ব সবচেয়ে বেশি। কারণ বিএনপি হচ্ছে সেই দল, যে দল তৈরি করেছিলেন স্বাধীনতার ঘোষক শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান। ৪০ বছরে বিএনপি পাঁচ বার জনগণের ভোটে রাষ্ট্র ক্ষমতায় গেছে। বিএনপি দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে ৯ বছর আপসহীন সংগ্রামের মধ্য দিয়ে গণতন্ত্রকে ফিরিয়ে এনেছে।”
নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বিএনপি মহাসচিব বলেন, “আমরা যদি দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্তি করতে চাই, তারেক রহমান সাহেবকে যদি দেশে ফিরিয়ে আনতে চাই, তাহলে আমাদেরকে অবশ্যই ত্যাগ স্বীকার করে রাজপথে এসে এই স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে, ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়ে আন্দোলন করতে হবে।
দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, “আমরা ভারাক্রান্ত মন নিয়ে এই র্যালিতে উপস্থিত হয়েছি। আমাদের চেয়ারপারসন তিন তিন বারের প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া আমাদের সাথে নেই, তিনি কারাগারে বন্দি রয়েছে।
“আজকে সরকারের সব খেলা শেষ। তারা আমাদেরকে দুর্বল করতে চেয়েছিল, আমরা দুর্বল নই, আগের থেকে আরও শক্তিশালী দল। দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া জেল থেকে এবং আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান লন্ডন থেকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন। আগের চেয়ে আমরা শক্তিশালী, জনগণ আমাদের পেছনে আছে। আজকে র্যালি প্রমাণ করেছে, দেশের জনগণ দেশনেত্রীর সাথে আছে, বিএনপির সাথে আছে।”
স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, “এই সরকারের পতন ছাড়া খালেদা জিয়ার মুক্তি হবে না। আসুন, আমরা সরকার পতন আন্দোলনের দিকে যাই। এই সরকার জনগণের নয়, এদের কোনো অধিকার নেই বাংলাদেশের সরকার পরিচালনা করার।”
প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানির পরিচালনায় দলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীও সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন।
পরে দলীয় পতাকা ও লাল-সবুজের জাতীয় পতাকা হাতে নিয়ে শোভাযাত্রায় অংশ নেয় মহানগর বিএনপি উত্তর-দক্ষিণ, মুক্তিযোদ্ধা দল, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল, মহিলা দল, কৃষক দল, মৎস্যজীবী দল, তাঁতী দল, ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন, ইঞ্জিনিয়ার্স অ্যাসোসিয়েশন, অ্যাগ্রিকালচারিস্ট অ্যাসোসিয়েশনসহ বিভিন্ন সহযোগী সংগঠনের হাজার হাজার নেতাকর্মী।
শোভাযাত্রার সম্মুখভাগ যখন নাইটিঙ্গেল মোড়ে তখন মিছিলের শেষ ভাগ ছিলো ফকিরাপুল বাজার পর্যন্ত।
শোভাযাত্রায় বিএনপি নেতাদের মধ্যে ছিলেন আবদুল্লাহ আল নোমান, বরকতউল্লাহ বুলু, মো. শাহজাহান, আবদুল আউয়াল মিন্টু, এজেডএম জাহিদ হোসেন, আহমেদ আজম খান, জয়নুল আবদিন ফারুক, মশিউর রহমান, আবুল খায়ের ভুঁইয়া, আবদুল হাই, খায়রুল কবির খোকন, হাবিব উন নবী খান সোহেল, শামা ওবায়েদ, মাহবুবে রহমান শামীম, মীর সরফত আলী সপু, শিরিন সুলতানা, হাবিবুল ইসলাম হাবিব, মীর নেওয়াজ আলী নেওয়াজ, আমিরুল ইসলাম খান আলিম, রফিকুল ইসলাম বাচ্চু, মোস্তাফিজুর রহমান বাবুল, আবদুস সালাম আজাদ, শামীমুর রহমান, আবদুল আউয়াল খান, তাইফুল ইসলাম টিপু, মুনির হোসেন, বেলাল আহমেদ, দেওয়ান মো. সালাউদ্দিন, নাজিমউদ্দিন আলম, সেলিম রেজা হাবিব, ইশরাক হোসেন, খন্দকার মারুফ হোসেন, মশিউর রহমান বিপ্লব, শামসুল আলম তোহা, নবী উল্লা নবী, আবু নাসের মো. রহমাতুল্লাহ, সাদেক খান, সাইফুল ইসলাম নিরব, সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু, মোরতাজুল করীম বাদরু, শফিউল বারী বাবু, আবদুল কাদের ভুঁইয়া জুয়েল, আনোয়ার হোসেইন, হাসান উদ্দিন সরকার, আফরোজা আব্বাস, জেবা খান, সুলতানা আহমেদ, হেলেন জেরিন খান, হাসান জাফির তুহিন, সালাউদ্দিন ভুঁইয়া শিশির, আবুল কালাম আজাদ, রফিকুল ইসলাম মাহতাব, রাজীব আহসান, আকরামুল হাসান প্রমুখ।
শোভাযাত্রার কারণে দুপুর থেকে নয়া পল্টনের সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। শোভাযাত্রা শুরু হওয়ার পর এক ঘণ্টা পরও নয়া পল্টন, ফকিরাপুল, মালিবাগ, বেইলি রোড, কাকরাইল, বিজয় নগর সড়কে ছিল ব্যাপক যানজট।