বুধবার সকালে রাজধানীর নয়া পল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দলটির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী সাংবাদিকদের কাছে এ অভিযোগ করেন।
তিনি বলেন, “দেশে আজ মগ দস্যু ও ঠগীদের অভয়ারণ্যে পরিণত হয়েছে। দেশে এখন কন্ট্রাক্ট গুম চলছে। প্রভাবশালীরা তাদের স্বার্থসিদ্ধির জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীতে যারা গুমের দায়িত্বে আছেন, তাদের সাথে কন্ট্রাক্ট করে প্রতিপক্ষকে অদৃশ্য করাচ্ছে।”
আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর ভাগ্নেকে র্যাবের পোশাকে তুলে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, “ক্ষমতাসীনদের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদেরকেই যদি গুমের শিকার হতে হয়, তাহলে সধারণ মানুষের নিরাপদে বেঁচে থাকার আর কোনো অবলম্বনই থাকবে না।”
সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী তানজিম আহমদ সোহেল তাজের ভাগ্নে সৈয়দ ইফতেখার আলম সৌরভ গত ৯ জুন চট্টগ্রাম থেকে নিখোঁজ হন। ঢাকার এক ব্যবসায়ীদের মেয়ের সঙ্গে সম্পর্কের জের ধরে তাকে অপহরণ করা হয়েছে বলে সৌরভের পরিবারের অভিযোগ। ঘটনার পেছনে সরকারি কোনো বাহিনীর কর্মকর্তাদের হাত রয়েছে বলেও সন্দেহ সোহেল তাজের।
এর আগে গত শনিবার বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য হাসান মামুনকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয়ে তুলে নিয়ে যাওয়ার ঘটনা তুলে ধরে রিজভী বলেন, “এই ঘটনা গুম হওয়া ইলিয়াস আলী, সাইফুল ইসলাম হিরু, চৌধুরী আলম, সাজেদুল ইসলাম সুমনের ধারাবাহিকতারই একটি নমুনা।
“দেশে গণতন্ত্র ও সুশাসনকে আওয়ামী বাক্সে বন্দি করে রাখার জন্যেই গুমকে জাতীয় জীবনের অংশ করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী ক্ষমতার নিবিড় নিবিষ্ট ধ্যানে নিমগ্ন থাকার জন্যই বাংলাদেশ আজ গুম-খুনের লীলাভুমিতে পরিণত হয়েছে।”
গত শুক্রবার মধ্য রাতে রাজধানীর শান্তিনগরের বাসা থেকে ছাত্রদলের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাবেক সভাপতি হাসান মামুনকে র্যাবের পোশাকে একদল লোক তুলে নিয়ে যায় বলে রিজভী অভিযোগ করেন।
তিন দিন পর সোমবার র্যাব-৮ এর এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় প্রশ্নফাঁসের অভিযোগে পাবলিক পরীক্ষা (অপরাধ) আইনে পটুয়াখালী থানার মামলায় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
খালেদা জিয়ার জামিন
রিজভী বলেন, “আপনারা জানেন, গতকাল উচ্চ আদালত কথিত দুই বানোয়াট মামলায় দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে জামিন দিয়েছে। এই দুইটি বানোয়াট মামলা সরকারি দলের যে ব্যক্তিরা করেছে তারা মামলাবাজ এবং মানুষের বিরুদ্ধে মামলা করেই তারা আনন্দ লাভ করে।
“আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, সরকার যদি বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির প্রশ্নে হস্তক্ষেপ না করে তাহলে তিনি মুক্তি পাবেন। এখন আরো দুইটি মামলার জামিন বাকি রয়েছে। উক্ত দুইটি মামলায় সরকার নিম্ন আদালতকে প্রভাবিত করে বেগম জিয়াকে সাজা দিয়েছে।”
বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আবুল খায়ের ভুঁইয়া, শাহিদা রফিক, কেন্দ্রীয় নেতা আবদুস সালাম আজাদ, আলবার্ট পি কস্টা, যুব দলের শফিকুল ইসলাম মিল্টন, গোলাম মাওলা শাহিন, মৎস্যজীবী দলের আবদুর রহিম এসময় উপস্থিত ছিলেন।