জাতীয় পার্টিতে ৮ নেতার পদোন্নতি, একজনের পদত্যাগ

হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ ছোট ভাই জি এম কাদেরকে জাতীয় পার্টির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান করার পর সপ্তাহ না ঘুরতেই দলটির সভাপতিমণ্ডলীতে আটজনকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 9 May 2019, 01:24 PM
Updated : 16 July 2019, 12:40 PM

এর পরই জাতীয় পার্টির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিবের পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন লিয়াকত হোসেন খোকা।

বৃহস্পতিবার জাতীয় পার্টির প্যাডে ওই আট নেতাকে সভাপতিমণ্ডলীতে অন্তর্ভুক্তির কথা জানানো হয়। বিবৃতিটি এসেছে দলীয় চেয়ারম্যান এরশাদেরই নামে।

এই আট নেতা হলেন- সাতক্ষীরার সৈয়দ দিদার বখত, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কাজী মামুনুর রশিদ, নীলফামারীর জাফর ইকবাল সিদ্দিকী, ফেনীর নাজমা আখতার, গাজীপুরের আব্দুস সাত্তার মিয়া, পুরান ঢাকার আলমগীর সিকদার লোটন, চাঁদপুরের এমরান হোসেন মিয়া ও নীলফামারীর রানা মোহাম্মদ সোহেল।

এদের মধ্যে লোটন বেশ কিছু দিন ধরে দলীয় বিভিন্ন সভায় জি এম কাদেরের পক্ষে কথা বলে আসছেন।

জিএম কাদের এবং এরশাদের স্ত্রী রওশন এরশাদের মধ্যে জাতীয় পার্টির নেতৃত্ব নিয়ে দ্বন্দ্ব রয়েছে। এর আগে জানুয়ারিতে এরশাদ চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুরে যাওয়ার পর জি এম কাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্বভার গ্রহণের পর ‘রওশনপন্থি’ বলে পরিচিত নেতারা নাখোশ মনোভাব দেখান বিভিন্ন সভায়।

এরশাদ তার ভাইকে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান করার পাশাপাশি দলের ভবিষ্যৎ চেয়ারম্যান হিসেবেও মনোনীত করছেন। তবে দলটির অপর পক্ষের নেতারা কাউন্সিলের মাধ্যমেই দলীয় নেতৃত্ব নির্বাচনের কথা বলছেন।

জি এম কাদের সম্প্রতি এই বছরই দলের কাউন্সিল অনুষ্ঠানের কথা বলেছেন। তার আগে দলটির সভাপতিমণ্ডলীতে আটজনকে নতুন করে নেওয়া হল।

নতুনদের নিয়ে জাতীয় পার্টির সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য সংখ্যা ৫৩ জনে দাঁড়িয়েছে বলে দলটির যুগ্ম দপ্তর সম্পাদক এম এ রাজ্জাক খান জানিয়েছেন।

হঠাৎ করে সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য বাড়ানোর কারণ জানতে চাইলে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জি এম কাদের বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “এই সংখ্যা নিয়ে কোনো প্রশ্ন নয়। জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান নিজ ক্ষমতাবলে (পার্টির গঠনতন্ত্রের ২০/১/ক ধারা মোতাবেক) এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এমনিতেও প্রেসিডিয়ামের অনেক সদস্যই আসেন না। সামনে পার্টির জাতীয় কাউন্সিল আছে। সব কমিটিতেই সদস্য সংখ্যা আমরা ঠিক করে দেব।”

তিনি একথা বললেও দলীয় পদ ছেড়ে দেওয়া নারায়ণগঞ্জ-৩ আসনের সাংসদ লিয়াকত আলীর কথায় অন্য কিছুর আভাস মিলছে।

পদত্যাগের কারণ জানতে চাইলে তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “জাতীয় পার্টিতে এখন যারা নেতৃত্ব দিচ্ছেন তারা দলকে নষ্ট করে দিচ্ছেন। এখন যা হচ্ছে তা ঠিক হচ্ছে না। তবে কোনো নির্দিষ্ট ব্যক্তির বিরুদ্ধে আমার অভিযোগ নেই।”

জাতীয় পার্টির সভাপতিমণ্ডলীতে আসা নেতাদের মধ্যে চারজন এরশাদের উপদেষ্টামণ্ডলীতে ছিলেন। তারা হলেন- দিদার বখত, কাজী মামুনুর রশিদ, জাফর ইকবাল সিদ্দিকী ও নাজমা আখতার।

দিদার এরশাদ সরকারের তথ্য প্রতিমন্ত্রী ছিলেন। তৈরি পোশাক ব্যবসায়ী জাফর ইকবাল সিদ্দিকী নবম জাতীয় সংসদে নীলফামারী-১ (ডোমার-ডিমলা) আসন থেকে সংসদ সদস্য হয়েছিলেন।

ফেনীর নাজমা আখতার এবার সংরক্ষিত নারী আসনে সংসদ সদস্য হয়েছেন জাতীয় পার্টি থেকে, নবীনগর থেকে লড়েছিলেন কাজী মামুনুর রশীদ।

জাতীয় পার্টির ভাইস চেয়ারম্যানের পদ থেকে সভাপতিমণ্ডলীতে এসেছেন আলমগীর শিকদার লোটন ও চাঁদপুরের এমরান হোসেন মিয়া।

এছাড়া আব্দুস সাত্তার মিয়া গাজীপুর জেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি এবং রানা মোহাম্মদ সোহেল নীলফামারী জেলা জাতীয় পার্টির সহসভাপতি।

আর কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য থেকে সভাপতিমণ্ডলীতে আসা রানা মোহাম্মদ সোহেল একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নীলফামারী -৩ (জলঢাকা) থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন।