মঙ্গলবার জাতীয় প্রেস ক্লাব মিলনায়তনে এক আলোচনা সভায় তিনি বলেন, “দেশে এখন গণতন্ত্র নেই, কথা বলার স্বাধীনতা নেই। এটা এখন তুলনা করা হয় বিদেশি পত্রিকায় বিদেশি সংবাদ মহলে যে, বাংলাদেশ এখন উত্তর কোরিয়ার মতো হয়ে গেছে। অর্থাৎ যেখানে মানুষের কোনো স্বাধীনতা নেই।”
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ত্রয়োদশ কারাবন্দি দিবস উপলক্ষে আয়োজিত এই সভায় উপস্থিত নেতাকর্মীদের সামনে দলীয় চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে কারামুক্ত করতে আন্দোলনের প্রস্তুতি নেওয়ার আহ্বান জানান ফখরুল।
তিনি বলেন, “এই চক্র আমাদের ভাঙতে হবে, এই ব্যুহ ভাঙতে হবে। ভেঙে আমাদেরকে এই অন্ধকার থেকে আলোতে বেরিয়ে আসতে হবে।
“আসুন এ দিবসে আমাদের নেতা (তারেক রহমান) ও আমাদের নেত্রীকে (খালেদা জিয়া) মুক্ত করবার জন্যে আমরা সেই শপথ নিয়ে সামনের দিকে এগিয়ে যাই।”
কয়েকটি মামলায় যাবজ্জীবন সাজা হওয়া তারেক রহমানকে দেশে ফেরানোর উদ্যোগ নেওয়ার কথা জানিয়েছে সরকার।
বিএনপিকে নিশ্চিহ্ন করার ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে ‘অসংখ্ ‘ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেন বিএনপি মহাসচিব।
তিনি বলেন, “আজকে দেখবেন টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়া পর্যন্ত সমস্ত গ্রামে দেখবেন আমাদের নেতাকর্মী, সাধারণ মানুষ আজকে মামলা-মোকদ্দমায় জর্জরিত হয়ে গেছে।
“উদ্দেশ্যটা কী? উদ্দেশ্য একটাই জাতীয়তাবাদী দর্শনের রাজনীতি যারা করে, এই রাজনীতির চিন্তা যারা করে তাদেরকে নিশ্চিহ্ন করে দিতে হবে।”
তবে বিএনপি ‘ফিনিক্স পাখির’ মতো জেগে উঠবে বলে আশা প্রকাশ করেন মির্জা ফখরুল।
বিএনপি ‘সাধারণ মানুষের রাজনীতি’ করে দাবি করে তিনি বলেন, “এর রাজনীতি মানুষের অন্তরে গেঁথে আছে। আমরা বার বার লক্ষ করেছি বিএনপিকে যতই ধ্বংস করে ফেলার চেষ্টা করা হয়, বিএনপি আবার ফিনিক্স পাখির মতো জেগে ওঠে।
“অতীতে বার বার চেষ্টা হয়েছে বিএনপিকে ধ্বংস করবার কিন্তু বিএনপিকে কেউ ধ্বংস করতে পারেনি। ইনশাল্লাহ বিএনপি জেগে উঠবে, ফিনিক্স পাখির মতোই জেগে উঠবে।”
‘গ্যাসের দাম বাড়লে প্রতিরোধ’
তিনি বলেন, “এই সরকার তাদের দুর্নীতিকে ঢেকে রাখার জন্য সব রকম আর্থিক যে ব্যয়, সেটা জনগণের ওপর চাপিয়ে দিচ্ছে। আপনারা দেখেছেন যে, গ্যাসের দাম বাড়ানোর চিন্তা করা হচ্ছে।
“সেই গ্যাসের দাম বাড়ানোর ব্যাপারে আমরা খুব স্পষ্ট করে বলতে চাই, গ্যাসের দাম বাড়ানো যাবে না। গ্যাসের দাম বাড়ানোর এই সিদ্ধান্ত জনগণ প্রতিরোধ করবে।”
ডাকসু নির্বাচনে বিএনপি ‘খুশি’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘‘আমরা খুব খুশি হয়েছি যে, ছাত্রদল ডাকসুতে নির্বাচন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। জয়-পরাজয় বড় কথা নয়, ছাত্রদলের অস্তিত্ব প্রমাণ করার জন্যে এটা খুব প্রয়োজন ছিল। এটাকেই কেন্দ্র করে ছাত্রদল সামনের দিকে এগিয়ে যাবে ইনশাল্লাহ- আমরা সেটা বিশ্বাস করি।”
অনুষ্ঠানে ডাকসু নির্বাচনে ছাত্রদলের প্যানেল থেকে প্রার্থী হওয়ায় কয়েকজনকে পরিচয় করে দেওয়া হয়।
‘বাংলাদেশ ছাত্রফোরাম’ ও ‘উত্তরাঞ্চল ছাত্র ফোরামে’র যৌথ উদ্যোগে এই আলোচনা সভা হয়। ছাত্র ফোরামের উপদেষ্টা ব্যারিস্টার মীর হেলালের সভাপতিত্বে ও ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় নেতা নাজমুল হাসানের পরিচালনায় আলোচনা সভায় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, বরকত উল্লাহ বুলু, কেন্দ্রীয় নেতা হাবিবুর রহমান হাবিব, আবদুল হাই শিকদার, গোলাম হাফিজ কেনেডি, এবিএম মোশাররফ হোসেন, আমিরুল ইসলাম খান আলিম, তাইফুল ইসলাম টিপু, আবদুল কাদের ভুঁইয়া জুয়েল, রফিকুল ইসলাম মজনু, মামুন হাসান, আবদুল খালেক, রবিউল আলম, তরিকুল ইসলাম টিটু, আরিফা সুলতানা রুমা, আবদুল ওহাব, আবুল বাশার ও আশরাফুল ইসলাম উজ্জ্বল বক্তব্য দেন।