বিএনপির নতুন জোটে পুরনো জোটের সমর্থন

কামাল হোসেনের নেতৃত্বে নতুন জোটে বিএনপির যোগ দেওয়াকে সমর্থন জানিয়েছে তাদের পুরনো জোট ২০ দল।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 15 Oct 2018, 05:07 PM
Updated : 16 Oct 2018, 10:25 AM

সোমবার রাতে ২০ দলের নেতাদের এক বৈঠকে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের দাবিনামা ও লক্ষ্যগুলো পর্যালোচনা করে এই সিদ্ধান্ত হয় বলে জোটের সমন্বয়ক নজরুল ইসলাম খান জানিয়েছেন।

বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে জামায়াতে ইসলামী, বিজেপি ও এলডিপিসহ জোটের শরিক দলের নেতাদের নিয়ে এই বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার কামাল হোসেন নেতৃত্বাধীন জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গঠনের পর তাদের নিয়ে বিএনপির জোট শরিক দলগুলোর অসন্তোষের খবর প্রকাশের মধ্যে এই বৈঠক হল।

বৈঠক শেষে নজরুল এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, “গত ১৩ অক্টোবর জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট যে গঠিত হয়েছে, তার দাবিনামা ও লক্ষ্যসমূহ আজকের সভায় আমরা পর্যালোচনা করেছি।

“আমরা আলোচনা করে এই মর্মে ২৯ দলীয় জোট একমত হয়েছি যে, এটা স্বৈরাচারী সরকারকে হটিয়ে বাংলাদেশে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে একটা অগ্রগতি। আমরা সেজন্য এই ফ্রন্টকে স্বাগত জানাচ্ছি ২০ দলীয় জোটের পক্ষ থেকে।”

তিনি বলেন, “আমরা দেখেছি যে দাবিগুলো আছে, তাতে নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন, জাতীয় সংসদ বাতিল, নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন, বিচারিক ক্ষমতাসহ নির্বাচনের আগে থেকে সেনাবাহিনী নিয়োগ, এই ধরনের গুরুত্বপূর্ণ দাবি; যে দাবিতে অনেক দিন আগে থেকে আমরা আন্দোলন করছিলাম।

“এই জোট দেশের গণতন্ত্রের আন্দোলনের নেত্রী, গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলনের নেত্রী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তিও দাবি করেছে। ‘আমরা ২০ দলীয় জোটের পক্ষ থেকে সেজন্য ফ্রন্ট নেতৃবৃন্দকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি।”

দুই দশক আগে আওয়ামী লীগের শাসনামলে জামায়াত, বিজেপি ও ইসলামী ঐক্যজোটকে নিয়ে চারদলীয় ঐক্যজোট গঠন করেছিল বিএনপি।

২০১২ সালে নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে আওয়ামী লীগ সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনের লক্ষ্যে চারদলীয় জোটের পরিসর বাড়িয়ে ১৮ দলীয় জোট গঠন করেছিল বিএনপি। পরে আরও দুটি দল তাতে যোগ দেয়।

একাদশ সংসদ নির্বাচনের আগে ২০ দলীয় জোট রেখেই কামাল হোসেন, আ স ম আবদুর রব ও মাহমুদুর রহমান মান্নার সঙ্গে নতুন জোট জাতীয় ঐক্যফ্রন্টে যোগ দিল বিএনপি।

জামায়াতের সঙ্গ না ছাড়ায় জাতীয় ঐক্যফ্রন্টে যোগ দেয়নি এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরীর দল বিকল্প ধারা। অন্যদিকে জামায়াতের সঙ্গে আরেক জোটে থাকা বিএনপিকে নিজের জোটে নিলেও জামায়াত নিয়ে আপত্তির কথা বলেছিলেন গণফোরাম সভাপতি কামাল।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল বলেন, “আমরা আশা করছি এই ফ্রন্ট গঠনের মধ্য দিয়ে আগামী দিনে জনগণের আন্দোলন আরও জোরদার হবে, বেগবান হবে এবং এই সরকার জনগণের ন্যায়সঙ্গত দাবি মেনে দেশে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানের ব্যাপারে তাদের যে দায়িত্ব, সেই দায়িত্ব পালন করবে।”

২০ দলীয় জোটের বৈঠকে ছিলেন জামায়াতে ইসলামীর আবদুল হালিম, বিজেপির আন্দালিব রহমান পার্থ, এলডিপির রেদোয়ান আহমেদ, ইসলামী ঐক্যজোটের এম এ রকীব, খেলাফত মজলিসের আহমেদ আবদুল কাদের,

জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) মোস্তফা জামাল হায়দার, কল্যাণ পার্টির সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম, এনপিপির ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, জাগপার তাসমিয়া প্রধান, জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের নূর হোসাইন কাসেমী, মুফতি মুহাম্মদ ওয়াক্কাস, লেবার পার্টির মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, হামদুল্লাহ আল মেহেদি, ন্যাপ-ভাসানীর আজহারুল ইসলাম, ইসলামিক পার্টির আবু তাহের চৌধুরী, ডিএলের সাইফুদ্দিন মনি, ন্যাপের গোলাম মোস্তফা ভুঁইয়া, পিপলস লীগের সৈয়দ মাহবুব হোসেন, সাম্যবাদী দলের সাঈদ আহমেদ, এনডিপির মন্জুর হোসেন ঈসা।