মঙ্গলবার দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক আলোচনা সভায় তিনি বলেন, “নির্বাচনের আর মাত্র এক মাস আছে। এই এক মাসের মধ্যে বাংলাদেশের অনেক কিছুতে পরিবর্তন আসবে।
“তারা (ক্ষমতাসীন দল) যে নির্বাচনকালীন সরকারের কথা-বার্তা বলছে সেটা ইমাজেনারি, এটা তাদের নিজেদের ইনভেন্টেড। নির্বাচনকালীন সরকার বলতে সংবিধানে কিছু নেই। তাদের নিজেদের খেয়াল খুশি মতো করবে। আসলে ওই নির্বাচনকালীন সরকারে তারাই থাকবে।”
বাংলাদেশ জাতীয় মানবাধিকার পরিষদের উদ্যোগে ‘ভোটাধিকার, ন্যায় বিচার ও মানবাধিকার: বর্তমান বাংলাদেশ’ শীর্ষক এই আলোচনা সভা হয়।
দেশের বর্তমান সংকট উত্তরণে সংবিধানের বাইরে গিয়েই নির্বাচকালীন নিদর্লীয় সরকার গঠনে জাতীয় ঐক্যমত সৃষ্টি হয়েছে বলে মন্তব্য করেন মওদুদ।
তিনি বলেন, “আমরা নির্বাচনের যে রূপরেখা দেব নির্বাচনকালীন সরকারের জন্যে তার উপর ভিত্তি করে আজকে সমস্ত জাতির ঐক্য সৃষ্টি হয়েছে। আওয়ামী লীগ ও ১৪ দল ছাড়া বাংলাদেশে সকল রাজনৈতিক দল ঐক্যমতে পৌঁছেছে যে, আগামী নির্বাচন হবে একটা নিরপেক্ষ নির্দলীয় সরকারের অধীনে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন।
“এটা যদি সংবিধান থেকে বেরিয়ে এসে করা হয় তাতে কোনো অসুবিধা নাই। সংবিধান কোনো বাধা নয়। সংবিধান মানুষের জন্য, সংবিধানের জন্য মানুষ নয়। আমরা এই ব্যবস্থাকে আবার বৈধ্তা দিতে পারব আগামী সংসদে নির্বাচনের পর পরবর্তি সংশোধনী এনে।”
কারাবন্দি খালেদা জিয়ার চিকিৎসা নিয়ে সরকার ছলচাতুরি করছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
“বেগম খালেদা জিয়া অত্যন্ত অসুস্থ। সরকার একটি মেডিকেল বোর্ডে করেছে। এই বোর্ড গঠনটা প্রতারণা ছাড়া আর কিছু না। ৫ জন সদস্যের মধ্যে একজন আছেন বিশেষজ্ঞ বলা যেতে পারে। বাকী ৪ জনের মধ্যে তিনজন একেবারে তরুণ, তারা আওয়ামী লীগ করেন, তারা শুধু পদ-পদবীতেই নয়, তারা আওয়ামী লীগের এক্টিভিস্ট।
“মেডিকেল বোর্ডের প্রতিবেদন বলছে, বেগম জিয়ার স্বাস্থ্য ঝুঁকিপূর্ণ নয়। তাকে পিজি হাসপাতালে ভর্তি করার ব্যবস্থা করার যেতে পারে। যদি ঝুঁকিপূর্ণ না হয় উনি হাসপাতালে যাবেন কেন? সরকার তার স্বাস্থ্য নিয়ে যে ছলচাতুরি করছে, যে ষড়যন্ত্র করছে, এর জবাব একদিন সরকারকে দিতে হবে, দায়-দায়িত্ব নিতে হবে। এ বোর্ডের স্ববিরোধী প্রতিবেদন দিয়ে দেশের মানুষকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করা হচ্ছে।”
সরকারি চাকরির কোটা পর্যালোচনায় গঠিত ‘উচ্চ পর্যায়ের কমিটি’ নবম থেকে ত্রয়োদশ গ্রেড পর্যন্ত, অর্থাৎ প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির পদে কোনো কোটা না রেখে মেধার ভিত্তিতে নিয়োগের নিয়ম চালুর যে সুপারিশ করেছে, সেটিকেও প্রতারণা বলেন মওদুদ।
তিনি বলেন, “প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির জন্য কোটা থাকবে না। কোটা আন্দোলনকারীরা সরকারি সকল চাকরির কোটা পদ্ধতির সংস্কার চেয়েছিল। আজকে যে রিপোর্ট বেরিয়েছে এই ধরনের সংস্কার তারা চায়নি। এটা একটা প্রতারণা।”
“কোটা আন্দোলনকারীদের সাথে একটা বিশ্বাসঘাকতার পরিচয় দিয়েছে। এটা পুনর্বিবেচনা করা উচিৎ।”
আলোচনা সভায় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আহমেদ আজম খান, নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের মুহাম্মদ রহমাতুল্লাহ, খালেদা ইয়াসমীন, নিপুন রায় চৌধুরী প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।