খালেদা নারী জাতির জন্য ‘কলঙ্ক’: হাসিনা

বিদেশ থেকে এতিমদের জন্য আসা টাকা তাদের না দেওয়ায় খালেদা জিয়াকে নারী জাতির জন্য ‘কলঙ্ক’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 11 July 2018, 04:23 PM
Updated : 11 July 2018, 04:23 PM

জাতীয় সংসদের বুধবারের অধিবেশনে প্রশ্নোত্তরে তিনি বলেন, “একজন নারী হিসেবে এতিমের অর্থ আত্মসাৎ করার কথা তো কখনও চিন্তাও করা যায় না। সামান্য কয়টা টাকা এতিমরা পাবে।

“এই টাকা নিয়ে দশ বছর মামলা চলল, এখন কারাগারে বন্দি। এতিমের টাকা আত্মসাতের দায়ে দুর্নীতির মামলায় সাজাপ্রাপ্ত আসামি হিসেবে কারাগারে বন্দি।”

এতিমখানা ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় পাঁচ বছরের সাজার রায়ের পর গত ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে খালেদা জিয়াকে নাজিম উদ্দিন রোডের পুরাতন ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে রাখা হয়েছে। বিএনপি অভিযোগ করে আসছে, ‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’ মামলায় দণ্ড দিয়ে তাদের নেত্রীকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “সেটা তো হয়েছে কোর্টের রায়ে। আমরা তো রাজনৈতিকভাবে অ্যারেস্ট করিনি। এটা করলেও তো ২০১৪ সালে করতে পারতাম, ২০১৫ সালে করতে পারতাম সেটা তো করিনি। কোর্টের রায়ে এটা হয়েছে।”

বিএনপির আইনজীবীরা খালেদা জিয়াকে নির্দোষ প্রমাণ করতে ব্যর্থ হয়েছে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, “দশ বছর মামলা চালাল, বিএনপির জাদরেল আইনজীবী ও ব্যারিস্টার সাহেবরা রয়েছে, কেউ প্রমাণ করতে পারেনি তিনি নির্দোষ। উল্টো মামলার রায় বের হওয়ার পূর্বে তারা দলের গঠনতন্ত্র সংশোধন করে দুর্নীতিবাজকে দলের নেতৃত্বে আসার সুযোগ করে দিল।”

“এর অর্থ তারা জানে, খালেদা জিয়া অপরাধী-এজন্য রায়ের আগেই এটা সংশোধন করেছে। এটা তো সমস্ত নারী জাতির জন্যই একটা কলঙ্ক। আমাদের নারি জাতির জন্য লজ্জার। কারণ একজন নারী মানে একজন মা। একজন মা হয়ে এতিমের টাকা কী করে চুরি করে বা অপব্যবহার করে?”

আরেক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, “দেশে সুষ্ঠু ও সুন্দর গণতান্ত্রিক পরিবেশ থাকলে উন্নতি ত্বরান্বিত হয়। গণতান্ত্রিক ধারা অব্যহত থাকলে উন্নয়ন অব্যাহত থাকে। ২০১৪ সালে ক্ষমতায় আসতে পেরেছি বলেই উন্নয়নের ধারাবাহিকতা রাখতে পেরেছি। গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকুক তা আমরা চাই।”

শেখ হাসিনা বলেন, “বর্তমান সরকারের সময়ে ছয় হাজারের ওপর নির্বাচন হয়েছে, কেউ তো কোনো নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন তুলতে পারেনি।”

আওয়ামী লীগ সরকারের বিগত নয় বছরে এক কোটি ৮৫ লাখ ৪০ হাজার ৫৯ জন ছাত্রীকে তিন হাজার ৪৪৩ কোটি ৭৭ লাখ টাকা উপবৃত্তি দেওয়া হয়েছে।

“সামাজিক, রাজনৈতিক, প্রশাসনিক ক্ষেত্রসহ সমাজের সকল ক্ষেত্রে নারীদের অধিকার প্রতিষ্ঠায় সরকার কাজ করে যাচ্ছে। নারী উন্নয়নে সরকারের এই কার্মকাণ্ড অব্যাহত থাকবে,” বলেন প্রধানমন্ত্রী।

আগামী নির্বাচনেও জয়ী হয়ে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকার ক্ষমতায় এলে কী কী মেগা প্রকল্প নেওয়া হবে- কাজী ফিরোজ রশীদের এই প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আমাদের উন্নয়নের লক্ষ্য হলো তৃণমুল পর্যায়। আমাদের প্রত্যেকটা গ্রামকে শহরে রূপান্তর করব। নাগরিক সুবিধা গ্রামের মানুষ সম্পূর্ণভাবে পাবে। সেইভাবে আমরা গ্রামকে তৈরি করব, যাতে গ্রামের মানুষকে শহরে ছুটে আসতে না হয়।”

পুনরায় ক্ষমতাসীন হলে গভীর সমুদ্রবন্দর, বিমানবন্দর, এশিয়ান হাইওয়ে, ট্রান্স এশিয়ান রেলওয়ের সঙ্গে সংযুক্তি হওয়াসহ প্রাচ্য ও পাশ্চাত্যের মধ্যে সেতু বন্ধন গড়ে তোলার পরিকল্পনার কথাও তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী।

তিনি বলেন, “নতুন মেয়াদে এলে দক্ষিণাঞ্চলে আরেকটি নিউক্লিয়ার বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন করা হবে। সেই পরিকল্পনা আমাদের রয়েছে। এজন্য দক্ষিণে জায়গা খুঁজছি। সেখানে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র অনেকগুলো চর রয়েছে। সেগুলোর তথ্য নিচ্ছি।”