প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীকে নিয়ে শনিবার তিনি সাংবাদিকদের বলেন, “তিনি (হাসান সরকার) নির্বাচনের প্রথম দিন থেকে নির্বাচন কমিশন, সরকার ও সাধারণ মানুষকে প্রশ্নবিদ্ধ করছেন।
“আমি বলব, উনি একজন মুরুব্বি মানুষ, মিথ্যাচার না করে মানুষের প্রতি সম্মান থাকা উচিত। মাঠে এসে মানুষের কাছে ভোট চাওয়া উচিত। ওনারা ৪০ বছরে কী করেছে, বাকী দিন কী করবে, সেটা মানুষের কাছে উত্তর দেওয়া উচিত।”
মেয়রের মতো বড় কোনো পদে প্রথমবার প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে আসা ৩৯ বছর বয়সী জাহাঙ্গীরের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী ধানের শীষ প্রতীকের হাসান উদ্দিন সরকার।
৭০ বছর বয়সী মুক্তিযোদ্ধা হাসান উদ্দিন সরকার এরশাদের সামরিক শাসনামলে দুই দফায় জাতীয় সংসদ সদস্য ছিলেন। তিনি টঙ্গী পৌরসভা চেয়ারম্যান হিসাবে দুই মেয়াদে দায়িত্ব পালন করেছেন। বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য হাসান এক মেয়াদে গাজীপুর জেলা পরিষদের চেয়ারম্যানও ছিলেন।
মেয়র পদে সাত প্রার্থীর পাশাপাশি ২৫৬ জন সাধারণ কাউন্সিলর এবং ৮৪ জন সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর প্রার্থী এই নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। ৫৭টি সাধারণ ওয়ার্ড ও ১৯টি সংরক্ষিত মহিলা ওয়ার্ডে মোট ভোটার সংখ্যা ১১ লাখ ৩৭ হাজার ৭৩৬ জন।
শনিবার বৃষ্টিস্নাত দুপুরে নগরীর টঙ্গীর বড় দেওড়া এলাকায় গণসংযোগে গিয়ে পথসভার পর সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন ব্যবসায়ী জাহাঙ্গীর আলম।
বৃষ্টির মধ্যে প্রচারে এসে জলাবদ্ধতার জন্য দীর্ঘদিন ধরে এই এলাকায় স্থানীয় পরিষদে দায়িত্ব পালন করা বিএনপি নেতাদের দায়ীকে করেন তিনি।
গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর বলেন, “আমার সাথে যিনি বিএনপির প্রার্থী হয়েছেন, উনি টঙ্গীর পৌরসভার দুইবারের মেয়র ছিলেন। জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ছিলেন, দুইবারের সংসদ সদস্য ছিলেন। ২০১৩ সাল থেকে এখন পর্যন্ত বিএনপির মেয়রই আছে। কোথাও ড্রেনেজ ব্যবস্থা নাই, কোথাও চলার রাস্তার সুযোগ নাই, মানুষ খুব কষ্ট করছে।”
নির্বাচিত হলে গাজীপুরকে একটি বাসযোগ্য শহর করার অঙ্গীকার ব্যক্ত করে আওয়ামী লীগ প্রার্থী বলেন, “রাস্তাঘাট ক্লিন করতে চাই, ফুটপাত করতে চাই, ড্রেনেজ ব্যবস্থা করতে চাই, মানুষ যাতে নিরাপদে চলতে পারে। কিন্তু মানুষ এখানে হতাশায় ভুগছে। মানুষ এখানে যতবার ভোট দিয়েছে, ততবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।”
“এখানে আবার ২৮৪ জন কাউন্সিলরও কিন্তু প্রার্থী রয়েছে। সবারই অধিকার আছে ভোট দেওয়ার। সুতরাং হুমকি দিয়ে লাভ হবে না, প্রেসনোট দিয়ে জনগণের কাছে যাওয়া যাবে না। কাজ হচ্ছে, সরাসরি কাছে গিয়ে তাদের প্রশ্নের উত্তর এবং ভবিষ্যতে তাদের জন্য কী করা হবে, সেটা জানানো।”
নির্বাচন ‘শতভাগ সুষ্ঠু’ হবে মন্তব্য করে জাহাঙ্গীর আলম বলেন, “হাজার হাজার মানুষ নির্বাচন পাহারা দেবে, সেখানে সুষ্ঠু না হওয়ার কোনো পথ নাই। পরিবেশ পরিস্থিতি মানুষের অনুকূলে আছে শতভাগ। যারা ভোট দিবেন তারা বৃষ্টি, রৌদ্র যেখানে যে অবস্থায় আছে, ঈদের মধ্যে যারা বাহিরে ছিল তারাও আজকে গাজীপুরে চলে আসছে।
“তারা আওয়ামী লীগ ও নৌকাকে ভোট দিতে চায়, তেমনি এলাকার উন্নয়নও চায়। আমি তাদের জন্য নিরাপদ, ক্লিন ও গ্রিন একটি শহর উপহার দিতে চাই।”
ভোট সুষ্ঠু হওয়ার জন্য ‘যা করার দরকার তা করতে’ দলীয় নেতাকর্মীদের নির্দেশনা দেওয়া আছে বলে জানান তিনি।
এর আগে পথসভায় ভোটারদের উদ্দেশ্যে জাহাঙ্গীর বলেন, “আমি বলেছি, এমন একটি শহর গড়ে তুলতে চাই, যেখানে নারী-পুরুষ সমান মর্যাদা পাবে, সবার কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে।
মেয়র পদে থেকে কোনো আত্মীয়করণ বা দলীয়করণ না করে ‘সবার জন্য বাসযোগ্য’ সিটি করপোরেশন গড়ে তোলারও অঙ্গীকার করেন তিনি।