কারা কর্তৃপক্ষের আবেদনে তার জন্য বিএসএমএমইউতে একটি কেবিন তার জন্য তৈরি করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন এই চিকিৎসা বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ আলী আসগর মোড়ল।
তিনি শনিবার সকাল পৌনে ১০টার দিকে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমরা তার জন্য একটি কেবিন রেডি করেছি। তার চিকিৎসায় গঠিত মেডিকেল বোর্ড সেখানে তাকে দেখবেন।”
তাকে বিএসএমএমইউতে ভর্তি করা হচ্ছে কি না- জানতে চাইলে আলী আসগর বলেন, “সেটা মেডিকেল বোর্ড ঠিক করবে।”
বিএসএমএমইউতে পুলিশের তৎপরতা দেখা যাচ্ছে শনিবার সকাল থেকে। হাসপাতালের কেবিন ব্লকের চারপাশে পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।
হাসপাতাল কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, খালেদা জিয়ার এক্সরে ও রক্ত পরীক্ষা করা হবে। সেজন্য হাসপাতালে রেডিওলজি ও ইমেজিং বিভাগে এক্সরে কক্ষ নং ১/এ এবং কেবিল ব্লকে প্যাথলজি বিভাগে রক্ত পরীক্ষার করার কক্ষ প্রস্তত রাখা হয়েছে।
বিএসএমএমইউ সংলগ্ন শাহবাগ মোড়ে পুলিশের একটি প্রিজন ভ্যান রয়েছে সকাল থেকে, আছে জলকামানের গাড়িও।
তৎপরতা রয়েছে পুরান ঢাকার নাজিমউদ্দিন সড়কে পুরনো কারাগারেও। তবে কারা কর্তৃপক্ষের কোনো ভাষ্য পাওয়া যায়নি।
৭৩ বছর বয়সী খালেদা জিয়া দুই মাস ধরে পুরনো কারাগারে একমাত্র বন্দি হিসেবে থাকছেন।
তার চিকিৎসায় একটি মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়েছে, যার নেতৃত্বে রয়েছেন ঢাকা মেডিকেল কলেজের অর্থোপেডিক বিভাগের প্রধান অধ্যাপক মো. শামসুজ্জামান। বোর্ডে সদস্য রয়েছেন ডা. মনসুর হাবীব (নিউরোলজি), টিটু মিয়া (মেডিসিন) ও সোহেলী রহমান (ফিজিক্যাল মেডিসিন)।
এই মেডিকেল বোর্ড গত সপ্তাহে কারাগারে বিএনপি চেয়ারপারসনকে দেখে এসে জানিয়েছিল, তার অসুস্থতা গুরুতর নয়।
বিএনপি চেয়ারপারসনের ব্যক্তিগত চিকিৎসকরা আগে জানিয়েছিলেন, খালেদা জিয়ার হৃদযন্ত্র, চোখ ও হাঁটুর সমস্যা রয়েছে। সেজন্য তাকে নিয়মিত নানা রকম ওষুধ খেতে হয়।
দুই মাস আগে কারাবন্দি হওয়ার পর খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসকরা তাকে দেখতে চাইলেও কারা কর্তৃপক্ষের অনুমতি পায়নি।
বিএনপি তাদের নেত্রী খালেদার অসুস্থতা নিয়ে উদ্বেগ জানিয়ে আসছে। তার জন্য গঠিত মেডিকেল বোর্ডকে ‘লোক দেখানো’ বলেও প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন দলটির নেতা মওদুদ আহমদ।
শুক্রবার বিকালে দলীয় নেত্রীকে দেখে এসে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাংবাদিকদের বলেন, “ম্যাডামের স্বাস্থ্য খুব একটা ভালো নয়। তার আর্থরাইটিসের সমস্যা বেশ বেড়ে গেছে। তার হাঁটতেও কষ্ট হয়। যেটাকে কিছুটা স্নায়ুবিক সমস্যা বলা হয়, সেটাও দেখা দিয়েছে। সত্যিকার অর্থেই তিনি কিছুটা স্বাস্থ্য সমস্যায় পড়েছেন।”
বিএনপি মহাসচিব তার নেত্রীর ব্যক্তিগত চিকিৎসকদের কারাগারে যাওয়ার অনুমতি চাইছেন।
“আমরা মনে করি, যারা তার নিয়মিত চিকিৎসা করেন, তাদেরকে দিয়ে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হোক এবং যে চিকিৎসা দরকার, অবিলম্বে তা দেওয়া হোক।”
গত ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া এতিমখানা ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় ৫ বছরের সাজার রায়ের পর থেকে বিএনপি চেয়ারপারসন কারাগারে রয়েছেন।
তিনি আপিল করে জামিনের আবেদন জানালেও তার শুনানি মে মাসে নির্ধারিত রয়েছে। ফলে তার আগে তার কারামুক্তির কোনো সম্ভাবনা নেই।