দুর্নীতি মামলার সাজায় খালেদা জিয়ার কারাগারে যাওয়ার মাসপূর্তির দিনে তার মুক্তির দাবিতে বিএনপির এক ঘণ্টার এই কর্মসূচি শেষ হয়ে গেছে নির্ধারিত সময়ে ১৩ মিনিট আগেই।
পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে বিএনপির কর্মসূচি শুরু হয়। ব্যানার-ফেস্টুন নিয়ে স্লোগান দিয়ে খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবি জানাতে থাকেন দলটির নেতা-কর্মীরা।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ দলের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ এবং ২০ দলীয় জোটের কয়েকজন শরিক নেতা উপস্থিত ছিলেন এ কর্মসূচিতে।
বেলা পৌনে ১২টার দিকে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান এজেএম জাহিদ হোসেন যখন তার সংক্ষিপ্ত বক্তব্য শেষ করছিলেন, গোয়েন্দা পুলিশের সদস্যরা সমাবেশের পশ্চিম অংশ থেকে ঢাকা মহানগর উত্তরের ছাত্রদল সভাপতি মিজানুর রহমান খানকে ধরে টেনে হিঁচড়ে নিয়ে যেতে থাকলে তুমুল হট্টগোল শুরু হয়।
নেতা-কর্মীরা প্রথমে দাঁড়িয়ে যান, পরে শুরু হয় দৌড়াদৌড়ি। এরইমধ্যে পুরো এলাকা পুলিশ ঘিরে ফেলে।
পুলিশের সঙ্গে ধাক্কা-ধাক্কির মধ্যে ফুটপাতে বসা মির্জা ফখরুলসহ বিএনপির কয়েকজন নেতাকে পড়ে যেতে দেখা যায়। মিজানুর রহমান রাজ ছাড়াও ছাত্রদলের আরেক নেতাকে টেনে নিয়ে যান পুলিশ সদস্যরা।
নেতা-কর্মীদের দৌঁড়াদৌড়ির মধ্যে মাইক নিয়ে বিএনপি মহাসচিব ক্ষোভের সঙ্গে বলেন, “পুলিশ সম্পূর্ণ বিনা উসকানিতে আমাদের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে এই ঘটনা ঘটিয়েছে। আমি ধিক্কার জানাচ্ছি, নিন্দা জানাচ্ছি।
“যারা এই ঘটনা ঘটিয়েছে, দায়ী ব্যক্তিদের আমি অবিলম্বে বিচারের আওতায় আনার দাবি জানাচ্ছি।”
সকাল ১১টা থেকে বিএনপির এই কর্মসূচি বেলা ১২টায় শেষ হওয়ার কথা থাকলেও গণ্ডগোলের মধ্যে কর্মসূচির সমাপ্তি ঘটলে ফখরুলের আর বক্তব্য দেওয়ার সুযোগ হয়নি।
বিএনপির এই অবস্থান কর্মসূচি ঘিরে সকাল ১০টা থেকেই জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে বাড়তি পুলিশ মোতায়েন করা হয়। কাছাকাছি পুলিশের সাঁজোয়া যান ও জল কামানের গাড়িও দেখা যায়।
কর্মসূচির কারণে প্রেস ক্লাবের সামনের সড়কের এক পাশে যান চলাচল বিঘ্নিত হওয়ায় অন্য পাশ দিয়ে উভয়মুখী চলাচলের ব্যবস্থা করে পুলিশ।
২০ দলীয় জোট নেতাদের মধ্যে এলডিপির সাহাদাত হোসেন সেলিম, জাগপার খন্দকার লুৎফর রহমান, সাম্যবাদী দলের সাঈদ আহমেদও বক্তব্য দেন।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টুসহ কেন্দ্রীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন এ কর্মসূচিতে।
জিয়া এতিমখানা দুর্নীতি মামলার রায়ে গত ৮ ফেব্রুয়ারি সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দিয়ে কারাগারে পাঠয় ঢাকার একটি আদালত।
ওই রায়ের পর বিএনপি পাঁচ দফায় বিক্ষোভ সমাবেশ, মানববন্ধন, অবস্থান, প্রতীকী অনশন, গণস্বাক্ষর সংগ্রহ, জেলা প্রশাসকের কাছে স্মারকলিপি পেশসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে আসছে।