ভোট এলেই মাথাচাড়া দেয় এক শ্রেণি: হাসিনা

বাংলাদেশে নির্বাচন এলেই একটা শ্রেণি ‘মাথাচাড়া’ দিয়ে ওঠে মন্তব্য করে তাদের কঠোর সমালোচনা করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। 

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 17 Jan 2018, 02:36 PM
Updated : 17 Jan 2018, 02:36 PM

বুধবার জাতীয় সংসদে প্রশ্নোত্তরে তিনি বলেন, “তারা কোনো ভালো কাজই দেখে না। ভালো কাজ দেখার মতো সেই দৃষ্টিভঙ্গিই তাদের নেই।

“তারা ভালো দেখেন যখন ইমার্জেন্সি হয়। দুর্বলভাবে ক্ষমতায় এসে তাদের ডাকে, আতু করে ডাক দিলে তারা ছুটে যায়।”

অনির্বাচিত সরকারের সমর্থনকারী এই শ্রেণিকে দেশের মানুষের জন্য সব থেকে ‘যন্ত্রণাদায়ক’ আখ্যায়িত করেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা।

“মানুষের অকল্যাণ করার জন্যই তারা সব সময় ব্যস্ত,” বলেন তিনি।

২০০৭ সালে জরুরি অবস্থা জারির পর অনেকেই ওই অনির্বাচিত সরকারের প্রশংসা করেছেন উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, “তারা খুব খোশমেজাজে ছিলেন, উৎফুল্ল ছিলেন। দল গঠন করবেন, ক্ষমতায় যাবেন, ক্ষমতার মসনদে বসবেন, কিন্তু হয়নি।”

নোবেলজয়ী মুহাম্মদ ইউনূস ওই সময় রাজনৈতিক দল গঠনের উদ্যোগ নিয়েও পরে পিছিয়ে যান।

পরেও ওই গোষ্ঠী চেষ্টা করে বিফল হয়েছে মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “নির্বাচন হল আমরা ক্ষমতায় এলাম। এরপর ২০১৪ সালে চেষ্টা করা হল, নির্বাচন বানচাল করে কোনো বাকা পথে ক্ষমতায় আসা যায় কি না। জনগণের চেষ্টায় যখন তা হল না, তখন অনেকেই শুয়ে পড়লেন… আহারে আর পতাকাটা পেলাম না, আর বুঝি হবে না!

“গণতান্ত্রিক ধারা চললে তাদের ভালো লাগে না। যখন উন্নয়নের পথে দেশ এগিয়ে যায় তারা উন্নয়নটা চোখে দেখে না।”

জাতীয় পার্টির ফখরুল ইমাম তার প্রশ্নে প্রধানমন্ত্রীর ভূয়সী প্রশংসা করে জানতে চান, সুন্দরবন সংলগ্ন রামপালে কেন বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ করা হচ্ছে। 

এই প্রশ্নের জবাব দিতে গিয়ে হাসতে হাসতে শেখ হাসিনা বলেন, “উনি কথা দিয়ে এত আলো জ্বালানোর পর হঠাৎ সুইচটা অফ করে দিলেন কেন?”

বিদ্যুতের প্রয়োজন আছে কি না তা দক্ষিণাঞ্চলের জনগণের কাছে জানতে ফখরুল ইমামকে পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, “আমি এইটুকু বলতে চাই- ‘কী পাইনি তার হিসাব মেলাতে মন মোর নহে রাজি’। কী পেলাম না সেই হিসাব করি না, কী পেলাম সেই হিসাবও কষি না। কাজ করি মানুষের জন্য, মানুষের কল্যাণের জন্য।

“যতই বিশেষণ দেওয়া হোক আমার ওপর তার প্রভাব পড়ে না। আমি শুধু একটাই চিন্তা করি- দেশের মানুষ পেটপুরে খেতে পারছে কি না? চিকিৎসা পাচ্ছে কি না ? প্রতিটি মানুষকে ঘর দিতে পারছি কি না? প্রতিটি ছেলে-মেয়ে স্কুলে যেতে পারছে কি না? লেখাপড়া শিখতে পারছে কি না?”

শেখ হাসিনা বলেন, “আমি উচ্চবিত্তদের জন্য চিন্তা করি না। চিন্তা করি তৃণমূলের মানুষের জন্য, যাদের জীবন মাটির সঙ্গে মিশে আছে।”

প্রধানমন্ত্রী বলেন, “একমুখে বিশেষণ দেবে, আবার ঊনিশ থেবে বিশ হলেই ওই মুখে গালিও দেবে। যে হাতে মালা দেবে সেই হাতে ঢিলও মারবে। সেটাও আমার জানা আছে। সেটা নিয়েও চিন্তা করি। আমার চিন্তা মানুষের জন্য কতটা করতে পেরেছি, তাদের জীবন কতটা উন্নতি করতে পেরেছি।

“হাজার বিশেষণ দিলেও আমার মাথা কখনও খারাপ হবে না। আমি কখনও বেতালা হব না, সেটা আমি জানি। এতে আমার ওপর কোনো প্রভাব ফেলবে না।”