ডিএনসিসি ভোটে ‘জয় পাওয়ার মতো’ প্রার্থীর খোঁজে আ. লীগ

নির্বাচনে লড়ে জয়ী হতে পারবেন এমন প্রার্থীকেই ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের উপ-নির্বাচনে মেয়র পদে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ মনোনয়ন দেবে বলে জানিয়েছেন দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 6 Dec 2017, 08:35 AM
Updated : 6 Dec 2017, 10:31 AM

দলীয় নেতা ছাড়াও সরাসরি আওয়ামী লীগের রাজনীতি করেন না- এমন প্রার্থীকেও এই নির্বাচনে অংশ নিতে নৌকার টিকেট দেওয়া হতে পারে বলে আভাস দিয়েছেন তিনি।

সমসাময়িক বিষয় নিয়ে বুধবার সচিবালয়ে এক ব্রিফিংয়ে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী কাদের বলেন, “আমরা আসলে (প্রার্থী মনোনয়নে) চমকের বিষয়টা ভাবছি না। যে প্রার্থী জয়ী হতে পারবে, বিজয়ী হতে পারবে, উইনেবল প্রার্থী আমরা খুঁজছি।”

দলীয় মনোনয়ন পেয়ে জয়ী হতে পারেন এমন কয়েকজনকে নিয়ে আওয়ামী লীগ ভাবনাচিন্তা করছে জানিয়ে তিনি বলেন, “দলের ভেতরেও করছি, দলের বাইরেও আওয়ামী লীগ সমর্থক কিন্তু আওয়ামী লীগের নেতা না এমন প্রার্থীদের নিয়েও ভাবনাচিন্তা করছি।”

তবে আওয়ামী লীগের কাউকে, নাকি দলের বাইরে থেকে মেয়র পদে মনোনয়ন দেওয়া হবে তা প্রার্থী চূড়ান্ত হওয়ার আগে বলেননি কাদের।

“চূড়ান্ত হওয়ার আগে তো কিছু বলতে পারছি না। সিডিউল ডিক্লায়ার হলে সময়মত আমাদের প্রার্থী আমরা ঘোষণা করব।”

২০১৫ সালের ২৮ এপ্রিল ঢাকা উত্তর-দক্ষিণ ও চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনে ভোট হয়। আওয়ামী লীগের সমর্থনে ওই নির্বাচনে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র নির্বাচিত হন আনিসুল হক।

প্রায় দুই বছর ধরে ওই দায়িত্ব পালনের মধ্যেই চলতি বছর জুলাইয়ে যুক্তরাজ্যে গিয়ে অসুস্থ হওয়ার পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত ৩০ নভেম্বর তার মৃত্যু হয়।

এরপর ঢাকা উত্তরের মেয়র পদ শূন্য ঘোষণা করে গত ৪ ডিসেম্বর গেজেট প্রকাশ করেছে সরকার। গেজেট প্রকাশের ৯০ দিনের মধ্যে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র পদে উপ-নির্বাচন দিতে হবে নির্বাচন কমিশনকে।

উপ-নির্বাচনে আনিসুল হকের পরিবার থেকে কাউকে মনোনয়ন দেওয়া হবে কি না- সেই প্রশ্নে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক কাদের বলেন, “শোকের দরিয়ায় তারা ভাসছে। একটা পরিবার শোকের মধ্যে আছে এবং দলের লোকেরাও পরিবারের মধ্যে। এই অবস্থায় পরিবারকে এসব বিষয় নিয়ে বিব্রত করা, আমি আপনাদেরকেও (সাংবাদিক) অনুরোধ করব- এখন তার পরিবারকে টেনে আনবেন না।

“তার পরিবারের মধ্যে কেউ প্রার্থী হবে কি না সেটা সময় আসুক, নির্বাচনের সিডিউল ডিক্লায়ার হোক তারপরে দেখা যাবে। আমরা কোথায় কীভাবে… পরিবারের লোক, এই হিসেবে আমরা কাউকে মনোনয়ন দেব না। আমরা মনোনয়ন দেব তাকে যে নির্বাচনে জয়ী হতে পারবে, যে উইনেবল ক্যান্ডিডেট।”

আনিসুল হকের মত যোগ্য প্রার্থী খুঁজে পাওয়া সম্ভব কি না- এমন প্রশ্নে কাদের বলেন, “আওয়ামী লীগ বড় দল। আনিসুল হক বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধের প্রশ্নে আমাদের কাছের ছিলেন, হয়ত তিনি সরাসরি রাজনীতি করেননি।

“বঙ্গবন্ধু, মুক্তিযুদ্ধ, মুক্তিযুদ্ধে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্ব- এ ব্যাপারে যারা বিশ্বাসী, সে রকম প্রার্থীও আমরা দিতে পারি; অথবা আমাদের দলের মধ্যে নৌকার প্রার্থী … গভীরভাবে চিন্তাভাবনা করছি।”

আনিসুল হক তার আড়াই বছরের কর্মকাণ্ডে অনেক সম্ভাবনা, প্রতিশ্রুতি ও প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের উজ্জ্ব্বল দৃষ্টান্ত রেখে গেছেন বলে মনে করেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক।

“এখন আমরা এমন প্রার্থী দেব, যে প্রার্থী আনিসুল হকের স্বপ্ন, সেই আধুনিক নগরীর স্বপ্ন দেখাতে আনিসুল হককে যে উদ্দেশ্যে আমাদের নেত্রী সারপ্রাইজ মনোনয়ন দিয়েছিলেন সেই উদ্দেশ্য বাস্তবায়নে, অসমাপ্ত কাজ যাকে দিয়ে সম্পন্ন হবে এবং জনগণও বিশ্বাস করতে হবে যে আনিসুল হকের কাজটা এই ব্যক্তিকে দিয়ে সম্পন্ন করা সম্ভব, সে রকম ব্যক্তিকেই আমরা খুঁজব।”

নির্বাচন কমিশন নিয়ম অনুযায়ী নির্বাচন করবে জানিয়ে কাদের বলেন, ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচন করার বাধ্যবাধকতা আছে, এটা কারও এড়িয়ে যাওয়ার কোনো উপায় নেই।

“বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, একটা মানুষ মরে গেলেও তড়িঘড়ি করে নির্বাচন দেওয়া হচ্ছে। হয়ত তারা নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত নয়, তারা প্রস্তুত না থাকলেও তো নির্বাচন আর থেমে থাকবে না। ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে তারা অংশ নেয়নি, নির্বাচন থেমে থাকেনি।”