একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে নিবন্ধিত ৪০টি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে অগাস্টের শেষ সপ্তাহ থেকে সংলাপে বসছে নির্বাচন কমিশন; আইনি সংস্কার, সীমানা পুনঃনির্ধারণসহ ইসির রোডম্যাপ নিয়ে আলোচনা হবে সেখানে।
Published : 07 Aug 2017, 08:08 PM
বিগত দুই নির্বাচন কমিশন রাজনৈতিক দলগুলোকে তাদের নামের আদ্যক্ষর ও নিবন্ধনের ঊর্দ্ধক্রমানুসারে সংলাপে ডাকলেও কে এম নূরুল হুদা নেতৃত্বাধীন ইসি কাজটি করছে নিবন্ধনের অধঃক্রম অনুসারে।
সেই হিসাবে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন বর্জন করা বিএনপির পরে এবার ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সঙ্গে বসবে ইসি।
ইসির ভারপ্রাপ্ত সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ রোববার সাংবাদিকদের বলেন, “আগস্ট-সেপ্টেম্বর নাগাদ আমরা রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে কথা বলব। আগস্টের শেষ দিকে এই সংলাপ শুরু করব। আমরা নিবন্ধিত দলের তালিকার শেষ দিক থেকে সংলাপে আমন্ত্রণ জানাব। যারা শেষে রয়েছে তাদের আগে ডাকা হবে।”
এই হিসাবে ৪২ নম্বর নিবন্ধিত দল বিএনএফ সংলাপের ডাক পাবে সবার আগে। আর সবার শেষে থাকবে নিবন্ধন তালিকার প্রথম দল এলডিপি। নিবন্ধন ক্রমে ৬ নম্বরে থাকা আওয়ামী লীগের আগেই ৭ নম্বর ক্রমিকের বিএনপি ইসির আমন্ত্রণ পাবে।
এ পর্যন্ত মোট ৪২টি দল ইসির নিবন্ধন পেলেও জামায়াত ও ফ্রিডম পার্টির নিবন্ধন বাতিল হওয়ায় দল রয়েছে ৪০টি।
ইসি সচিব জানান, প্রতিদিন দুটি দলের সঙ্গে সংলাপ হবে। ছোট দলগুলোর ১০-১২ জন করে প্রতিনিধি আসতে পারবে। বড় দলগুলোর বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়নি।
“অগাস্টের শেষ দিকে ছয়টি দলের সঙ্গে আমরা সংলাপ করব। ঈদের ছুটির পর আবার ১০ সেপ্টেম্বর থেকে সংলাপ শুরু হবে।”
এটিএম শামসুল হুদার ইসি তাদের মেয়াদের সর্বশেষ সংলাপে ২০১১ সালে দলের নামের ‘আদ্যক্ষর’ অনুযায়ী আমন্ত্রণ জানায়। বাংলা বর্ণমালার ক্রম অনুযায়ী সেই সংলাপ শুরু হয় ইসলামী আন্দোলনকে নিয়ে।
এরপর কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ নেতৃত্বাধীন ইসি ২০১২ সালে নিবন্ধিত দলের ঊর্দ্ধক্রমানুসারে দলগুলোকে আমন্ত্রণ জানায়। প্রথম ডাক পায় এলডিপি, সংলাপ শেষ হয় খেলাফত মজলিসে।
সংসদে সে সময় বিরোধী দলে থাকা বিএনপি ওই সংলাপ বর্জন করে। আর ক্ষমতায় থাকা আওয়ামী লীগ দুই দফা সময় পিছিয়ে নেয়।
ইসি সচিব জানান, অক্টোবরে ‘নির্বাচন বিশেষজ্ঞ’, সাবেক নির্বাচন কমিশনার ও নারী নেতাদের সঙ্গে সংলাপে বসবে ইসি।
একাদশ সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে গত ৩১ জুলাই শুরু হওয়া এই সংলাপে প্রথম দিন নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিদের ডেকেছিল ইসি। সেদিন মোট ৫৯ জনকে আমন্ত্রণ জানানো হলেও উপস্থিত ছিলেন ৩৩ জন।
দ্বিতীয় ধাপে ১৬ ও ১৭ অগাস্ট গণমাধ্যম প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনায় বসার কথা রয়েছে ইসির। তাতে অন্তত ৬০ জন সম্পাদক ও জ্যেষ্ঠ সাংবাদিককে আমন্ত্রণ জানানো হবে বলে ইসির ভারপ্রাপ্ত সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, “প্রস্তুতি চলছে। দুই-একদিনের মধ্যে আমন্ত্রণপত্র পাঠানো হবে। আমরা সবার কাছ থেকে মতামত নেব। কমিশন ঠিক করবে- কোনটা গ্রহণ করা হবে, কোনটা হবে না।”
ইসি কর্মকর্তারা জানান, অনলাইন, প্রিন্ট, ইলেকট্রনিক ও রেডিওর প্রতিনিধিদের একটি প্রাথমিক তালিকা তৈরি হয়েছে, তবে তা পরিমার্জন-সংযোজন করা হতে পারে।
গতবার বিটিভি, বেতার, বিবিসি, বেসরকারি তিনটি রেডিওর প্রতিনিধিসহ অন্তত ৭৮ জনকে এ সংলাপে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল।
হেলালুদ্দীন জানান, কেউ মেইল করে ইসিকে মতামত দিতে চাইলে তা দিতে পারবেন। তবে ইসির পক্ষ থেকে কোনো বিজ্ঞপ্তি দিয়ে মতামত চাওয়া হবে না।