এবারের ঈদকে ‘বেদনাদায়ক এবং কষ্টকর’ হিসেবে বর্ণনা করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, দেশের মানুষ ‘দুঃখ-কষ্টের’ মধ্য দিয়ে ঈদ করছে।
পরিবার ছেড়ে কারাগারে আটক থাকা দলীয় নেতা-কর্মীদের অনুপস্থিতি দলের জন্য কষ্টের বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি।
ফখরুল বলেন, “এবারকার ঈদ ছিল আমাদের জন্য অত্যন্ত বেদনাদায়ক এবং কষ্টকর। একদিকে আমাদের অসংখ্য নেতা-কর্মী কারাগারে রয়েছেন। তারা তাদের পরিবারের সঙ্গে শরিক হতে পারেননি।”
নিত্যপণ্যের বাজার লাগামের বাইরে চলে গেছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, “সাধারণ মানুষ, তারা চাল-ডাল-তেল-লবণ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের যে অস্বাভাবিক নজিরবিহীন মূল্য বৃদ্ধি, তাতে করে তারা এই ঈদের আনন্দকে উপভোগ করবার জন্যে যেটুকু ন্যূনতম সামগ্রী কেনা দরকার, তারা সেটা ক্রয় করতে পারেনি। দুঃখ-কষ্টে কাটছে তাদের।
“এমন কি আপনারা যদি লক্ষ্য করেন যে, এবারকার ঈদের বাজার- সেটাও কিন্তু একেবারে কোনো রকমের জমে উঠতে পারেনি। কারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতা একেবারেই কমে গেছে সেক্ষেত্রে দ্রব্যমূল্য জিনিসপত্রের দাম অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে।”
শনিবার ঈদুল ফিতরের নামাজ শেষে বেলা ১১টায় শেরে বাংলানগরে দলের প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের কবর জিয়ারতের পর সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন মির্জা ফখরুল।
ওই সময় দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া এবং ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পক্ষ থেকে দেশবাসীকে ‘ঈদ মোবারক’ জানান তিনি।
আগে প্রতি ঈদে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া তার স্বামী জিয়াউর রহমানের কবর জিয়ারত করতেন। ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি দুর্নীতি মামলার রায়ে খালেদা কারাগারে যাওয়ার পর থেকে দলের মহাসচিবসহ স্থায়ী কমিটির সদস্যরা এ ধারাবাহিকতা অনুসরণ করছেন।
সরকারের সমালোচনা করে মির্জা ফখরুল বলেন, “এই সরকার মিথ্যা প্রচারণার মধ্য দিয়ে, মানুষকে ভুল বোঝানোর মধ্য দিয়ে বিশেষ করে মিডিয়ার সাহায্যে সরকার বোঝাতে চায় দেশ খুব ভালো আছে, অর্থনীতি ভালো আছে।
“কিন্তু প্রকৃতপক্ষে দেশে আজকে একটা নীরব দুর্ভিক্ষ চলছে, দেশে অর্থনৈতিক চরম সংকট সৃষ্টি হয়েছে। এই সংকটের কারণে দেশ অতি দ্রুত ভয়াবহ অর্থনৈতিক সংকটের দিকে যাবে বলে অর্থনীতিবিদরা মনে করছেন। মিথ্যা কথা বলে, প্রচার করে এই সরকার ক্ষমতায় টিকে আছে জোর করে।”
এ অবস্থার ‘পরিবর্তনে’ মানুষেকে ‘জেগে’ ওঠার আহ্বান জানিয়ে ফখরুল বলেন, “দেশকে মুক্ত করতে মানু্ষকে জেগে উঠতে হবে। আমরা বিশ্বাস করি, বাংলাদেশের জনগণ সবসময় সংগ্রামের মধ্য দিয়ে, আন্দোলনের মধ্য দিয়ে তাদের অধিকারকে ফিরিয়ে এনেছে।
“একমাত্র উত্তরণের পথ হচ্ছে সরকারের পদত্যাগ। এই সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে, সংসদ বিলুপ্ত করতে হবে। এবং একটা নিরপেক্ষ নির্বাচনের মধ্য দিয়ে সরকার গঠন করতে হবে।”
দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, নজরুল ইসলাম খানসহ অন্যান্যদের সঙ্গে নিয়ে জিয়াউর রহমানের কবর জিয়ারতের পর ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান মির্জা ফখরুল।
এ সময়ে বিএনপি হাবিব উন নবী খান সোহেল, সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, মীর সরফত আলী সপু, আবদুল বারী ড্যানী, সালাহউদ্দিন ভুঁইয়া শিশির, আবু সাঈদ, আবদুস সাত্তার পাটোয়ারি, মহানগর আমিনুল হক, রফিকুল আলম মজনু, ইশরাক হোসেন, যুব দলের সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু, শফিকুল ইসলাম মিল্টন, তাঁতী দলের আবুল কালাম আজাদ, মজিবুর রহমানসহ মহানগরসহ অঙ্গসংগঠনের নেতৃরা উপস্থিত ছিলেন।