সব বিভাগে অক্টোবরে সমাবেশ করবে গণতন্ত্র মঞ্চ

ঢাকায় সাত সংগঠনের এ জোটের সমাবেশ থেকে এই ঘোষণা দেওয়া হয়।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 30 Sept 2022, 03:03 PM
Updated : 30 Sept 2022, 03:03 PM

বর্তমান সরকার পতনের রূপরেখা চূড়ান্ত করতে অন্যান্য বিরোধী রাজনৈতিক দলের সঙ্গে মতবিনিময়ের পাশাপাশি সাত দলের জোট গণতন্ত্র মঞ্চ অক্টোবর থেকে সব বিভাগে সমাবেশ করবে।

শুক্রবার ঢাকায় এ জোটের এক সমাবেশে গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন।

শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে ‘সরকার ও শাসন ব্যবস্থা পরিবর্তনের লক্ষ্যে ঐক্যবদ্ধ হোন’ শীর্ষক সমাবেশে সভাপতির বক্তব্য রাখেন গণতন্ত্র মঞ্চের আহ্ববায়ক সাকি।

সমাবেশের শেষভাগে ৮ অক্টোবর কারওয়ান বাজারে সমাবেশের মাধ্যমে ঢাকার থানা পর্যায়ের সমাবেশ শুরুর ঘোষণা দিয়ে তিনি জানান, অক্টোবর থেকে প্রতিটি বিভাগে সমাবেশের পর গণতন্ত্র মঞ্চ অন্যান্য বিরোধী রাজনৈতিক দলের সঙ্গে ‘রাজনৈতিক মতবিনিময়’ করবে, যেখানে ‘আওয়ামী সরকার পতনের রূপরেখা চূড়ান্ত করা হবে’৷

পূজায় নিরাপত্তা কঠোর করার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, “বিএনপি, বাম গণতান্ত্রিক জোট বা গণতন্ত্র মঞ্চের সমাবেশ- মিছিলে যারা হামলা করেছে, তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত করে শাস্তির বিধান নিশ্চিত করতে হবে৷

“পাশাপাশি আগামীকাল থেকে শুরু হওয়া হিন্দু সম্প্রদায়ের শারদীয় দুর্গোৎসবে কোনো সাম্প্রদায়িক হামলা যেন না হয়, সেজন্য নিরাপত্তা ব্যবস্থা কঠোর করতে হবে৷”

আওয়ামী লীগের দিকে ইঙ্গিত করে গণতন্ত্র মঞ্চের আহ্বায়ক সাকির অভিযোগ, “দেখুন নিজেরা মুখে বলে অসম্প্রদায়িকতা তারা লালন করে। কীভাবে, ক্ষমতায় থাকার জন্য সাম্প্রদায়িকতাকে উস্কে দেয়, সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা তৈরি করে।

“প্রীতম দাসের বিরুদ্ধে ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্টে মিথ্যা মামলা করে ওই এলাকায় হিন্দু সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা তৈরি করে। তারা আন্দোলন দমন করতে চায়, কতটা নোংরা পদ্ধতি।”

বর্তমান সরকারের কার্যক্রমের সমালোচনা করে তিনি বলেন, “বাংলাদেশের সব রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান তারা দখল করেছেন। দেশের রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানের কর্তা ব্যক্তিরা আওয়ামী লীগ নেতার চাইতে বড় আওয়ামী লীগ নেতা হিসেবে বক্তব্য দেয়। এই অভিজ্ঞতা একটি রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানও বাকি নাই, সব জায়গায় মানুষ একই অভিজ্ঞতা দেখে “

ইডেনে মহিলা কলেজে ছাত্রলীগের ‘জোরজবরদস্তির’ বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে সরকারপ্রধানের প্রতি আহ্বান জানান সাকি।

সরকার জনগণের বিরুদ্ধে ‘যুদ্ধ ঘোষণা’ করেছে অভিযোগ করে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, “সংবিধানকে যদি সংশোধন করা না যায়, তবে পরবর্তীতে ক্ষমতায় যারা যাবে তারাই ফ্যাসিবাদী ও স্বৈরাচারী আচরণ করবে৷ “

নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, “আমরা রাষ্ট্র ব্যবস্থা, দেশ বদলাতে চাই। সেজন্য আমরা এই সরকারকেও বদলাতে চাই। যারা আমাদের সাথে এ আন্দোলনে যুক্ত হতে চান, শর্ত একটাই, জনগণের মুক্তির শর্ত৷”

জেএসডি সভাপতি আ স ম আব্দুর রব অভিযোগ করে বলেন, “দেশের অবস্থা অত্যন্ত খারাপ৷ এদেশে প্রতিদিন মানুষ গুম হচ্ছে, খুন হচ্ছে। দেশের মানুষের জন্য চাল-ডাল কেনার টাকা নাই, অথচ তারা স্বীকার করে না৷ তাদের ভোট চোর বললে খুব গায়ে লাগে৷ তারা তো আসলে ভোট চোর। তারা দেশকে বিদেশে বিক্রি করে দিচ্ছে, কারণ তারা ক্ষমতা দীর্ঘায়িত করতে চায়৷ তাদের হটাতে গেলে প্রয়োজনে এক সাগর রক্ত দেব।”

গণতন্ত্র মঞ্চের সদস্য সচিব নূরুল হক নূরের অভিযোগ, “আজকে তাদের চরিত্রে এতটাই পচন ধরেছে যে, বিরোধী দলকে দমন-পীড়ন করার জন্য আওয়ামী লীগের, ছাত্রলীগের গুণ্ডাদের লেলিয়ে দিয়েছে৷ “

সমাবেশে ছিলেন ভাসানী ঐক্য পরিষদের আহ্বায়ক শেখ রফিকুল ইসলাম, রাষ্ট্রচিন্তার আহ্বায়ক হাসনাত কাইয়ুম, নাগরিক ঐক্যের সাধারণ সম্পাদক শহীদুল্লাহ কায়সার, জেএসডির সাধারণ সম্পাদক সানা হোসেন তালুকদার।