পুলিশ ভোটার ডাকছে, জীবনেও শুনিনি: মির্জা আব্বাস

“আল্লাহ বাঁচাইছে যে, কুত্তার ভোট দেওয়ার অধিকার নাই। যদি থাকত তাহলে কী সর্বনাশটা হয়ে যেত এখন!”

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 1 Feb 2023, 11:57 AM
Updated : 1 Feb 2023, 11:57 AM

বিএনপির ছেড়ে দেওয়া ছয় আসনে উপ-নির্বাচনে ভোটারদের অনাগ্রহের বিষয়টি তুলে ধরলেন বিএনপি নেতা মির্জা আব্বাস।

বুধবার যে সময় দেশের তিন বিভাগের ছয় আসনে ভোট চলছিল, সে সময় ঢাকায় বিএনপির ‘নীরব পদযাত্রা’ কর্মসূচিতে অংশ নেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য।

এই কর্মসূচিতে তিনি বলেন, “ব্রাহ্মণবাড়িয়াসহ বিভিন্ন জায়গায় আজ উপ-নির্বাচন হচ্ছে। সকাল থেকে ভোট কেন্দ্রে ভোটার নাই। মিডিয়াকে প্রচার হচ্ছে- ব্রাহ্মণবাড়িয়ার একটি কেন্দ্রে তিন/চারটি কুকুর ঘুমিয়ে আছে।

“আল্লাহ বাঁচাইছে যে, কুত্তার ভোট দেওয়ার অধিকার নাই। যদি থাকত তাহলে কী সর্বনাশটা হয়ে যেত এখন!

“এখন একটা খবর শুনলাম, একটা কেন্দ্রে কেনো ভোটার যাচ্ছে না। পুলিশ নাকি মাইকিং করতেছে, ভোটার ডাকতেছে। আমি আমার জীবনে শুনি নাই ভাই এ রকম কথা… অর্থাৎ পুলিশ মাইকে ডাকছে, ভোট দিতে আসেন।”

এ সময় বিএনপির নেতা-কর্মীরা ‘ভুয়া’ ‘ভুয়া’ বলে স্লোগান দিতে থাকেন।

নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবি মানতে সরকারকে চাপে ফেলার লক্ষ্যে সংসদ থেকে বিএনপি পদত্যাগ করায় সংসদ নির্বাচনের এক বছর আগে চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২ ও ৩, বগুড়া-৪ ও ৬, ঠাকুরগাঁও-৩ এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনে উপ-নির্বাচন করতে হচ্ছে। সবগুলো আসনেই সকাল থেকে ভোটার উপস্থিতি কম দেখা গেছে।

নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা ফিরিয়ে আনাসহ ১০ দাবিতে বিএনপির চার দিন ‘নীরব পদযাত্রা’ কর্মসূচি পালন করছে ঢাকায়।

শেষ দিনের কর্মসূচিতে বুধবার দুপুরের পর কমলাপুরে সিপাহী বীরশ্রেষ্ঠ মোস্তফা কামাল স্টেডিয়াম থেকে মালিবাগ রেলগেইট পর্যন্ত পদযাত্রা করে ঢাকা মহানগর দক্ষিণের নেতা-কর্মীরা।

কর্মসূচিতে খিলগাঁও-মুগদা-শাহজাহানপুর-বাসাবো এলাকার নেতা-কর্মী ছাড়াও মহিলা দল, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল, ছাত্রদলের কয়েক হাজার নেতা-কর্মী অংশ নেন।

কর্মদিবসে এই কর্মসূচির কারণে দীর্ঘ যানজট তৈরি হয়। পদযাত্রা উপলক্ষে কমলাপুর স্টেডিয়াম-খিলগাঁও সড়কে ব্যাপক পুলিশ মোতায়েন করা হয়।

পদযাত্রা শুরুর আগে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে মির্জা আব্বাস ছাড়াও ঢাকা মহানগর বিএনপির (উত্তর) আহ্বায়ক আবদুস সালাম ও সদস্য সচিব র্রফিকুল আলম মজনু বক্তব্য রাখেন।

বিএনপির এই পদযাত্রা কর্মসূচির কারণে আওয়ামী লীগের ভিত ‘নড়বড়ে হয়ে গেছে’ বলে মন্তব্য করেন মির্জা আব্বাস।

তিনি বলেন, “আমরা যদি চিৎকার করি, আওয়ামী লীগ ভয় পায়, আমরা যদি নীরব থাকি, আওয়ামী লীগ ভয় পায়। আমরা নীরব পদযাত্রা করার কথা বলেছি, কিন্তু বিএনপির পদযাত্রায় রাস্তা প্রকম্পিত হচ্ছে, তাতে তারা ভয় পেয়ে গেছে। একেকজন চাটুকার একেক রকম কথা বলছে। কেউ বলছে বিএনপির মরণ যাত্রা, কেউ বলছে এটা, কেউ বলছে সেটা।

“আওয়ামী লীগ কিন্তু পায়ের আওয়াজ পেয়ে গেছে। ওই যে কারা আসছে? এরা কারা? এরা গণতন্ত্র চায়, এরা ভোটে অধিকার চায়, এ দেশের গণমানুষের অধিকার আদায় করতে চায়। আমি নেতা-কর্মীদের মধ্যে যে আত্মবিশ্বাস দেখছি, আমি বিশ্বাস করি, এই সরকারের পতন ইনশাল্লাহ অবশ্যই আমরা ঘটাব।”

১৯ দিনের ব্যবধানে দুই বার বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর সমালোচনা করে মির্জা আব্বাস বলেন, “বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী বলছেন, মাসে মাসে বিদ্যুতের দাম সমন্বয় করা হবে। ভাবটা এরকম যে, এটা কারও একটা রাজত্ব, রাজার হুকুম মতো দেশ চলবে।

“আমরা বলতে চাই, এই গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের হুকুম মতো চলবে, কারও রাজতন্ত্রে নয়।”

বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা হাবিবুর রহমান হাবিব, খায়রুল কবির খোকন, আবদুস সালাম আজাদ, মীর সরাফত আলী সপু, রফিকুল ইসলাম, সাইফুল আলম নিরব, রিয়াজ উদ্দিন নসু, মীর নেওয়াজ আলী, ঢাকা মহানগর উত্তরের কাজী আবুল বাশার, ইশরাক হোসেন, নবী উল্লাহ নবী, ইউনুস মৃধা, লিটন মাহমুদ, হাবিবুর রশীদ হাবিব, তানভীর আহমেদ রবিন, মহিলা দলের আফরোজা আব্বাস, রুমা আখতার, নার্গিস আখতার, যুবদলের মামুন হাসান, মোনায়েম মুন্না, স্বেচ্ছাসেবক দলের এসএস জিলানি, রাজিব আহসান, শ্রমিক দলের মোস্তাফিজুল করীম মজুমদার, সুমন ভুঁইয়া, তাঁতী দলের আবুল কালাম আজাদ, ছাত্রদলের কাজী রওনকুল ইসলাম শ্রাবণ, সাইফ মাহমুদ জুয়েলও পদযাত্রায় অংশ নেন।