“বিদেশিদের তারা বোঝাতে চাইছে, বাংলাদেশে যেটা হয়েছে, সেটা আসলে গ্লোবাল অর্ডারের বাইরের কিছু একটা।”
Published : 08 Feb 2025, 05:46 PM
শেখ হাসিনার ‘অলিগার্ক গোষ্ঠীর’ পাশাপাশি ভারতীয় সংবাদমাধ্যমও ইউনূস নেতৃত্বাধীন সরকারের বিরুদ্ধে ‘অপপ্রচার’ চালাচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।
শনিবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক প্রকাশনা অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, “আওয়ামী লীগ ও পতিত স্বৈরাচার, চোরতন্ত্রের জননী, গুমের জননী- তারা চাচ্ছেন বাংলাদেশের যে ন্যারেটিভ, সেটাকে চ্যালেঞ্জ করতে।
“ওদের বার্তাগুলো খেয়াল করেন- তিন হাজার পুলিশ মারা গেছে; ড. ইউনূস জঙ্গি লিডার; ইউনূসকে জঙ্গিরা ঘিরে আছে। এগুলো কেন বলছে জানেন? এটা সুপরিকল্পিত প্রচারাভিযান। এতে ভারতীয় সংবাদমাধ্যমও জড়িত। এর পেছনে মিলিয়ন ডলার খরচ করছেন হাসিনার অলিগার্করা।”
তিনি বলেন, ‘‘একটা নতুন ন্যারেটিভ তৈরি করতে চাইছে। বিশ্বকে বোঝাতে চাইছে, তুমি যে এটাকে গণঅভ্যুত্থান বলতে চাইছ, এটা আসলে গণঅভ্যুত্থান না, সেটা আসলে এইটা হয়েছে।
“এটা বড় রকমের একটা চক্রান্ত। বিদেশিদের তারা বোঝাতে চাইছে, আমাদের দেশে যেটা হয়েছে, সেটা আসলে গ্লোবাল অর্ডারের বাইরের একটা কিছু।”
চব্বিশের গণ-অভ্যুত্থান নিয়ে ‘দ্রোহের গ্রাফিতি’ শিরোনামে এই প্রকাশনা অনুষ্ঠান হয়।
সেখানে প্রেস সচিব বলেন, “ড. ইউনূস ছয় দশক ধরে জনজীবনে আছেন এবং সবাই তাকে চেনেন। তাকে তারা এমনভাবে উপস্থাপন করছে, বাংলাদেশের যে অনন্য ইতিহাস, নতুন বাংলাদেশের ইতিহাস, এটা উল্টে দিতে চায়।’’
শেখ হাসিনার সরকার পতনের ছয় মাস পূর্ণ হয় গত বুধবার। সেদিন রাতে দিল্লি থেকে ভার্চুয়ালি ভাষণ দেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।
তার ভাষণ দেওয়ার সম্ভাবনায় আলোচিত ‘কন্টেন্ট ক্রিয়েটর’ ইলিয়াস হোসাইন ও পিনাকী ভট্টাচার্য আগেই ফেইসবুকে ‘ধানমণ্ডি ৩২ অভিমুখে বুলডোজার মিছিল’ কর্মসূচি ঘোষণা করেন।
সেই আহ্বানে হাজার তিনেক মানুষ ধানমন্ডির ৩২ নম্বর সড়কে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বাড়িতে হামলা ও ভাঙচুর চালায়। হামলা হয় সারা দেশে আওয়ামী লীগের কার্যালয়সহ অনেক নেতার বাড়িতে।
এসব ঘটনার প্রতিক্রিয়ায় শফিকুল আলম বলেন, “যে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে বাংলাদেশে, তাতে যারাই তার (শেখ হাসিনা) কথা শুনছে, তাদের মাথা ঠিক থাকছে না। তারপরও সবাইকে প্রফেসর ইউনূস শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন।
“আমাদের কাজ হচ্ছে কী ভয়াবহ ১৫টা বছর ছিল, সেটা গবেষণার মাধ্যমে সবাইকে জানানো। প্রত্যেক ক্যাম্পাসে সেমিনার করব, দেয়ালে দেয়ালে অন্যায়-অবিচারের কথা লিখে রাখব, যেন বাংলাদেশে এই পতিত স্বৈরাচার ও তাদের সাঙ্গ-পাঙ্গরা ফিরতে না পারে।”
প্রেস সচিব বলেন, ‘‘১৯৭১ সালে আমাদের একটি মহৎ-মহান বিপ্লব হল, একটি মুক্তিযুদ্ধ করলাম, ভয়ংকর রকমের একটি মিলিটারির বিরুদ্ধে, কিন্তু এটার ডকুমেন্টেশন নেই। খুবই দুর্বল ডকুমেন্টেশন।’’
এর কারণ ব্যাখ্যা করে তিনি বলেন, ‘‘শেখ মুজিবের প্রথম কয়েকটা মাসে একটা ভঙ্গুর অর্থনীতির মাঝে ছিলাম। আরেকটা হচ্ছে, তার বাজে রকমের অর্থনৈতিক পলিসি, এটাকে আমি সুইসাইডাল বলব। সেটা বাংলাদেশকে আরও গরিবীর দিকে নিয়ে গেছে।
“মানুষ তখন বাঁচার যন্ত্রণায় ছিল, গ্রাফিতি কী করবে আর! ফলে ১০-১৫ বছর পর দেখা গেল, ১৯৭১ সালের পরে জন্ম নিয়েও মুক্তিযোদ্ধা হয়ে গেছে, এমনকি ডাকাত হয়ে গেছে মুক্তিযোদ্ধা, মন্ত্রীও হয়েছে।’’