মিয়ানমার সেনাবাহিনীর হামলায় ২ কর্মী নিহত হয়েছে: সেইভ দ্য চিলড্রেন

আন্তর্জাতিক দাতব্য সংস্থা সেইভ দ্য চিলড্রেন অভিযোগ করে বলেছে, মিয়ানমারে তাদের দুই কর্মী দেশটির সামরিক বাহিনীর হামলায় নিহত হয়েছে।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 29 Dec 2021, 05:19 AM
Updated : 29 Dec 2021, 05:31 AM

পূর্বাঞ্চলীয় কায়া রাজ্যে ওই হামলার পর নারী ও শিশুসহ ৩৫ জনেরও বেশি মানুষের লাশ পাওয়া গিয়েছিল বলে সংস্থাটি জানিয়েছে।

তারা বলেছে, সেনারা লোকজনকে তাদের গাড়ি থেকে জোর করে নামিয়ে কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করে ও বাকিদের হত্যা করে তাদের লাশ পুড়িয়ে দেয়।

মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছে বলে বিবিসি জানিয়েছে।

সেইভ দ্য চিলড্রেন বলেছে, তাদের যে দুই কর্মীকে হত্যা করা হয়েছে তারা ‘উভয়েই সদ্য পিতা হয়েছিলেন এবং তারা শিশুদের শিক্ষা নিয়ে কাজ করতেন’। জনসেবামূলক কাজ করার পর তারা ছুটিতে বাড়িতে যাচ্ছিলেন।

এক ‍টুইটে দাতব্য সংস্থাটি, এ ঘটনার জন্য দায়ীদের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার জন্য পদক্ষেপ নিতে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে।

মিয়ানমারের সরকারবিরোধীরাও হাপ্রুসো শহরের মো সো গ্রামের কাছে গত শুক্রবারের ওই হত্যাযজ্ঞের জন্য সেনাবাহিনীকে দায়ী করছে। হামলার পর আসা ছবিগুলোতে  পোড়া গাড়িগুলোর অবশেষ দেখা গেছে।

জান্তাবিরোধী মিলিশিয়া গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে বৃহত্তম একটি গোষ্ঠী কারেননি ন্যাশনাল ডিফেন্স ফোর্স জানিয়েছে, নিহতরা মিলিশিয়া বাহিনীর সদস্য ছিল না, তারা লড়াই থেকে বাঁচার চেষ্টারত বেসামরিক ছিল।

গোষ্ঠীটির একজন কমান্ডার বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেছেন, “মৃতদেহগুলো বিভিন্ন আকারের, তাদের মধ্যে শিশু, নারী ও বৃদ্ধরাও আছেন; এসব দেখে আমরা হতবাক হয়ে গেছি।”

মিয়ানমার সামরিক বাহিনীর একজন মুখপাত্র বলেছেন, শুক্রবার হাপ্রুসোতে তাদের সেনারা ‘সন্দেহজনকভাবে চালানো’ সাতটি গাড়ি থামানোর চেষ্টা করতেই লড়াই শুরু হয়ে যায়।

পরবর্তী সংঘর্ষের ঘটনায় সেনারা বেশ কিছু লোককে হত্যা করে বলে মুখপাত্র জাও মিন তুন শনিবার জানিয়েছেন।

এ হামলার খবরে জানানো প্রতিক্রিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন বলেছেন, ওই সামরিক বাহিনীকে জবাবদিহিতা করতে হবে। পাশাপাশি মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর কাছে অস্ত্র বিক্রিতে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ারও আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।

গত ১ ফেব্রুয়ারি সামরিক বাহিনী মিয়ানমারের গণতন্ত্রপন্থি নেত্রী ও শান্তিতে নোবেলজয়ী অং সান সু চির নেতৃত্বাধীন বেসামরিক সরকারকে অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে ক্ষমতাচ্যুত করে; এরপর থেকে দেশটিতে সামরিক জান্তাবিরোধী বিক্ষোভ-প্রতিবাদ চলে আসছে।

গ্রামাঞ্চলের জঙ্গলে জঙ্গলে জান্তার বিরুদ্ধে লড়তে সংগঠিত হচ্ছে বিভিন্ন বিদ্রোহী গোষ্ঠী, সঙ্গে যোগ দিয়েছে অনেক সাধারণ মানুষও। মাঝে মধ্যেই তাদের সঙ্গে সেনাবাহিনীর সংঘর্ষ হচ্ছে।

অ্যাসোসিয়েশন ফর অ্যাসিস্ট্যান্স অব পলিটিকাল প্রিজনার্সের হিসাব অনুযায়ী, জান্তাবিরোধী আন্দোলন ও সশস্ত্র সংগ্রামে এখন পর্যন্ত অন্তত ১ হাজার ৩৭৫ জনের প্রাণ গেছে,গ্রেপ্তার হয়েছে ৮ হাজারের বেশি।

সামরিক বাহিনী নিহত ও কারাবন্দিদের এ সংখ্যা নিয়ে আপত্তি জানিয়ে আসছে; সংঘর্ষে বিদ্রোহীদের পাশাপাশি অনেক সেনাও মারা পড়ছে বলে দাবি করছে তারা।