মিয়ানমারে আরও ২ সাংবাদিক গ্রেপ্তার

মিয়ানমারের জান্তা সরকার দেশটির আরও ২ স্থানীয় সাংবাদিককে গ্রেপ্তার করেছে বলে জানিয়েছে সেনা নিয়ন্ত্রিত একটি টেলিভিশন।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 22 August 2021, 06:23 AM
Updated : 22 August 2021, 06:23 AM

দেশটিতে ১ ফেব্রুয়ারির অভ্যুত্থানের পর থেকে গণমাধ্যমের ওপর যে আক্রমণ চলছে, সিথু অং মিন্ট ও হতেত হতেত খিনকে গ্রেপ্তার তার সর্বশেষ নজির, বলছেন পর্যবেক্ষকরা।

মিন্টের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মিথ্যা তথ্য ছড়ানোর অভিযোগ আনা হয়েছে; আর খিনকে ধরা হয়েছে মিন্টকে আশ্রয় দেওয়া এবং ছায়া জাতীয় ঐক্য সরকারকে সমর্থন ও তার হয়ে কাজ করার অভিযোগে।

এ দুজনকে গত ১৫ আগস্ট গ্রেপ্তার করা হয় বলে সেনা নিয়ন্ত্রিত টিভির খবরের বরাত দিয়ে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।

ফ্রন্টিয়ার মিয়ানমারের কলামনিস্ট সিথু ভয়েস অব আমেরিকা রেডিও’র ধারাভাষ্যকার হিসেবেও কাজ করতেন। ফ্রিল্যান্সার খিন বিবিসি বার্মিজ বিভাগের হয়েও কাজ করেছেন।

রয়টার্স জানিয়েছে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেওয়া যেসব পোস্টের জন্য সিথুর বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ আনা হয়েছে, সেগুলোতে এ সাংবাদিক মিয়ানমারের জান্তা সরকারের সমালোচনা করেছিলেন, ধর্মঘটে যোগ দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছিলেন, সমর্থন দিয়েছিলেন নিষিদ্ধঘোষিত বিরোধীদের আন্দোলনে।

সিথু ও খিনকে গ্রেপ্তারের তীব্র নিন্দা জানিয়েছে রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডারস (আরএসএফ)। এ দুই সাংবাদিককে ‘নির্জন কারাবাসে’ রাখা হয়েছে জানিয়ে তাদের আটককে ‘বেআইনি’ বলেও অ্যাখ্যা দিয়েছে তারা। 

“তাদেরকে যেভাবে আটকে রাখা হয়েছে তার কড়া নিন্দা জানাচ্ছি আমরা। এই নির্মমতাই দেখাচ্ছে, মিয়ানমারের সামরিক জান্তা সাংবাদিকদের সঙ্গে কি ধরনের ব্যবহার করে,” বলেছেন আরএসএফ এশিয়া-প্যাসিফিক ডেস্কের প্রধান ডেনিয়েল বাসটার্ড।

গণতান্ত্রিক সরকারকে উৎখাত করে ফেব্রুয়ারিতে সামরিক বাহিনীর ক্ষমতা দখলের পর থেকেই দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার দেশ মিয়ানমার রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিকভাবে বেশ টালমাটাল সময় পার করছে।

জান্তা শাসনে সেখানে এখন পর্যন্ত নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে হাজারেরও বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছে মিয়ানমারের সাম্প্রতিক ঘটনাবলী পর্যবেক্ষণকারী গোষ্ঠী অ্যাসিস্ট্যান্স অ্যাসোসিয়েশন ফর পলিটিকাল প্রিজনার্স (এএপিপি)।

দেশটির সামরিক বাহিনী এরই মধ্যে অসংখ্য গণমাধ্যমের নিবন্ধন বাতিল করেছে। বলেছে, গণমাধ্যমের ভূমিকার প্রতি শ্রদ্ধাশীল হলেও তাদের দৃষ্টিতে মিথ্যা কিংবা জনমনে অস্থিরতা সৃষ্টি করে এমন সংবাদ প্রকাশ ‘বরদাশত করা হবে না’।

মিয়ানমারের এখনকার শাসকরা স্বাধীন সাংবাদিকতাকে অপরাধ হিসেবে গণ্য করছে বলে গত মাসে কমিটি ফর প্রটেক্ট জার্নালিস্টসের এক প্রতিবেদনেও বলা হয়েছে।

অভ্যুত্থানের পর থেকে মিয়ানমারে এখন পর্যন্ত ৯৮ সাংবাদিককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস ওয়াচ। তারা গণমাধ্যম কর্মীদের ওপর নির্যাতন বন্ধে সেনা সরকারের প্রতি আহ্বানও জানিয়েছে।

গ্রেপ্তার সাংবাদিকদের মধ্যে ৪৬ জন জুলাইয়ের শেষেও নিরাপত্তা হেফাজতে ছিলেন।

সিথু ও খিনের বিচার কবে শুরু হবে, তা জানা যায়নি।