মিন্দাতে মিয়ানমার সেনাবাহিনী-অভ্যুত্থানবিরোধী বিদ্রোহীদের তুমুল লড়াই

মিয়ানমারের উত্তরপশ্চিমের শহর মিন্দাতে সেনাবাহিনীর সঙ্গে স্থানীয় একটি মিলিশিয়া বাহিনীর যোদ্ধাদের তুমুল লড়াই চলছে।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 15 May 2021, 03:36 PM
Updated : 15 May 2021, 03:36 PM

শনিবার শহরটির বাসিন্দারা এ খবর দিয়েছেন বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।

ফেব্রুয়ারিতে গণতান্ত্রিক সরকারকে উৎখাত করে ক্ষমতা দখলের পর থেকে মিয়ানমারের জেনারেলদেরকে অভ্যুত্থানবিরোধীদের টানা বিক্ষোভ, ধর্মঘট ও নাশকতা সামলাতে হয়েছে; দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার দেশটির ওপর সেনাবাহিনী যে এখনও একচ্ছত্র নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করতে পারেনি, চিন রাজ্যের মিন্দাতে চলা লড়াই তা-ও দেখাচ্ছে।

“আমরা জীবন নিয়ে পালিয়েছি। শহরটিতে প্রায় ২০ হাজার মানুষ আটকা পড়েছে, তাদের বেশিরভাগই শিশু ও বৃদ্ধ। আমার বন্ধুর ভাইয়ের তিন মেয়ে গোলার আঘাতে আহত হয়েছে, তারা এখনও অনেক ছোট, কৈশোরেও পড়েনি,” বলেছেন শহরটির এক বাসিন্দা।

পাহাড়ি শহর মিন্দাত থেকে ভারত সীমান্তের দূরত্ব ১০০ কিলোমিটারের মতো।

বৃহস্পতিবার সামরিক জান্তা শহরটিতে সামরিক আইন জারি করে এবং তাদের অ্যাখ্যা দেওয়া ‘সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের’ বিরুদ্ধে আক্রমণের মাত্রা বাড়ানো শুরু করে।

শনিবার দুই পক্ষের মধ্যে হওয়া তুমুল লড়াই নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানতে জান্তার মুখপাত্রকে ফোন করা হলেও তিনি তা ধরেননি বলে জানিয়েছে রয়টার্স।

সেনাবাহিনী কামান ও হেলিকপ্টার নিয়ে হামলা চালাতে চালাতে অগ্রসর হলে চিনল্যান্ড প্রতিরক্ষা বাহিনীর যোদ্ধারা পিছু হটে বলে ফোনে জানিয়েছেন জান্তাবিরোধীদের বানানো স্থানীয় প্রশাসনের এক সদস্য।

সেনাবাহিনীর হামলায় বেসামরিক নাগরিকদের মৃত্যু হয়েছে বলে জানালেও সংখ্যা নিশ্চিত করতে পারেননি তিনি।

জান্তাবিরোধী ছায়া ‘ন্যাশনাল ইউনিটি গভর্নমেন্টের’ আন্তর্জাতিক সহযোগিতা বিষয়ক মন্ত্রী ড. সাসা মিন্দাতে গত ২ দিনে ৫ বেসামরিক নিহত হয়েছে বলে দাবি করেছেন। 

মিয়ানমারে গত কয়েক দশক ধরেই বৃহত্তর স্বায়ত্তশাসনের দাবিতে সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে অন্তত দুই ডজন জাতিগত সশস্ত্র গোষ্ঠী লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে।

তবে চিনল্যান্ড প্রতিরক্ষা বাহিনী গঠিত হয়েছে ফেব্রুয়ারির অভ্যুত্থানের প্রতিক্রিয়ায়।

শনিবারের লড়াই নিয়ে জান্তাবিরোধী এ সশস্ত্র গোষ্ঠীর কারও মন্তব্য পাওয়া যায়নি।

ফেব্রুয়ারির অভ্যুত্থানের পর দেশজুড়ে চলা আন্দোলন দমনে সামরিক জান্তার দমনপীড়ন এখন পর্যন্ত ৭৮৮ বিক্ষোভকারীর প্রাণ কেড়ে নিয়েছে বলে জানিয়েছে মিয়ানমারের ঘটনাবলী পর্যবেক্ষণ করা সংস্থা অ্যাসিস্ট্যান্স অ্যাসোসিয়েশন ফর পলিটিকাল প্রিজনার্স।

নিহতের এ সংখ্যা সঠিক নয় বলে দাবি করে আসছে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী।

সম্প্রতি এক সংবাদ সম্মেলনে জান্তার মুখপাত্র জ মিন তুন জানিয়েছেন, তাদের প্রশাসনের বিরোধীদের চালানো বিভিন্ন ‘সন্ত্রাসী হামলায়’ ৬৩ জন নিহত হয়েছে। হামলাকারীদের সম্বন্ধে তথ্য দিতে জনগণের প্রতি তিনি আহ্বানও জানিয়েছেন।