কোভিড-১৯: দিল্লিতে ৬ দিনের লকডাউন

করোনাভাইরাস সংক্রমণের নতুন রেকর্ড ও রোগীর ভারে স্বাস্থ্য ব্যবস্থা চূর্ণ হয়ে পড়ার মতো চাপের মধ্যে ভারতের রাজধানী অঞ্চল দিল্লিতে ছয় দিনের লকডাউন দেওয়া হয়েছে।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 19 April 2021, 10:53 AM
Updated : 19 April 2021, 10:53 AM

দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল ১৯ এপ্রিল, সোমবার স্থানীয় সময় রাত ১০টা থেকে ২৬ এপ্রিল ভোর ৫টা পর্যন্ত লকডাউনের ঘোষণা দিয়েছেন, জানিয়েছে ভারতীয় গণমাধ্যম। 

এ সময় সব বেসরকারি দপ্তর, অডিটোরিয়াম, রেস্তোরাঁ, বিপণিবিতান, জিম, স্পা, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকাবে। পাশাপাশি সব ধরনের সামাজিক, ধর্মীয় ও রাজনৈতিক জমায়েতও বন্ধ থাকবে।

লকডাউন চলাকালে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের বাড়ি থেকে কাজ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।  

বেসরকারি দপ্তর, প্রতিষ্ঠান বন্ধের সিদ্ধান্ত এলেও সরকারি দপ্তর খোলা থাকবে। পাশাপাশি মুদি ও খাবারের দোকান, খাবার হোম ডেলিভারির ব্যবস্থা চালু থাকবে। ব্যাংক, এটিএম ও বিমা পরিষেবা অব্যাহত থাকবে।

আমন্ত্রিত ৫০ জনকে নিয়ে বিয়ের অনুষ্ঠান করা যাবে, তবে এর জন্য আলাদা করে পাস নিতে হবে। তিন ভারের একভাগ দর্শক নিয়ে সিনেমা হল চালু রাখা যাবে।    

দিল্লিতে নমুনা পরীক্ষা করতে আসা প্রতি তিন জনে একজন ‘পজিটিভ’ হচ্ছেন জানিয়ে শহরটি হাসপাতাল শয্যা, অক্সিজেন ও ভাইরাসবিরোধী রেমডেসিভিরের মতো প্রয়োজনীয় ওষুধের তীব্র সংকটের মোকাবেলা করছে বলে কেজরিওয়াল জানিয়েছেন।

বিশ্বে করোনাভাইরাস সংক্রমণে শীর্ষে থাকা যুক্তরাষ্ট্রের পর দ্বিতীয় স্থানে আছে ভারত, দেশটিতে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা দেড় কোটি ছাড়িয়ে গেছে। এ পরিস্থিতিতে দেশটির হাসপাতালগুলোতে শয্যা, অক্সিজেন ও গুরুত্বপূর্ণ ওষুধের সংকট দেখা দিয়েছে বলে বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে।  

রোববার দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী জানান, দুই কোটির বেশি মানুষের নগরীটিতে আইসিইউ বেডের সংখ্যা একশ’র নিচে নেমে এসেছে।

দিল্লিবাসীদের বিভিন্ন অভিযোগে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ভেসে যাচ্ছে বলে জানিয়েছে গণমাধ্যম।

সোমবার সকালে ভারতের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, আগের ২৪ ঘণ্টায় দুই লাখ ৭৩ হাজার ৮১০ জন নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছে, মৃত্যু হয়েছে এক হাজার ৬১৯ জনের।

এ সময় দিল্লিতে নতুন করে আরও ২৫ হাজার ৪৬২ জন করোনাভাইরাস সংক্রমিত হয়েছেন। 

দেশটিতে সংক্রমণ ও মৃত্যু যত বাড়ছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী প্রশাসনের উপর চাপও তত বাড়ছে। স্বাস্থ্য খাতের এ চরম সংকট মোদী প্রশাসন যেভাবে অবহেলা করছে তা নিয়ে সমালোচনার ঝড় উঠেছে।

দেশটিতে যখন করোনাভাইরাস সংক্রমণ লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে তখনও সেখানে নানা ধর্মীয় উৎসব আয়োজনের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। এসব আয়োজনে নিয়মকানুনের তোয়াক্কা না করে লাখ লাখ মানুষ ভিড় করছেন।

অন্যদিকে চলছে স্থানীয় সরকার নির্বাচন। যেখানে খোদ মোদী এবং তার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ নিজেরাই বড় বড় সমাবেশের আয়োজন করছেন। যেসব সমাবেশে ন্যূনতম স্বাস্থ্য বিধি মানা হচ্ছে না।