গ্রেটার আন্দামানিজ জনগোষ্ঠীর সদস্য সংখ্যা এখন মাত্র ৫৩ জনের মতো হবে বলে ধারণা কর্মকর্তাদের। এদের মধ্যেই ৪ জনের দেহে কোভিড-১৯ এর উপস্থিতি পাওয়া গেছে বলে ভারতের এক স্বাস্থ্য কর্মকর্তার বরাত দিয়ে জানিয়েছে বিবিসি।
আক্রান্ত চারজনের মধ্যে দুইজনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে; বাকি দুইজন একটি কেয়ার সেন্টারে কোয়ারেন্টিনে আছেন।
বিপন্ন এ গ্রেটার আন্দামানিজ আদিবাসী গোষ্ঠীর সদস্যরা প্রবাল প্রাচীর ঘেরা দ্বীপপুঞ্জটির ৩৭টি দ্বীপের একটিতে থাকেন।
আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জে এখন পর্যন্ত ২ হাজার ৯৮৫ জনের দেহে প্রাণঘাতী ভাইরাসের উপস্থিতি মিলেছে; মৃত্যু হয়েছে ৪১ জনের। দ্বীপপুঞ্জটিতে জুনে প্রথম কোভিড-১৯ রোগী শনাক্ত হয়েছিল।
আন্দামান ও নিকোবরের রাজধানী পোর্ট ব্লেয়ারের কাছের দ্বীপে স্ট্রেইট আইল্যান্ডে বসবাস গ্রেটার আন্দামানিজ জনগোষ্ঠীর। গত সপ্তাহে এই দ্বীপের ৫৩ সদস্যের দেহে ভাইরাস শনাক্তকরণ পরীক্ষা করা হয়। ওই পরীক্ষা থেকেই চারজনের দেহে করোনাভাইরাসের উপস্থিতি পাওয়া যায় বলে জানিয়েছেন ঊর্ধ্বতন স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ড. অভিজিৎ রায়।
একদিনেই দ্বীপটির সব বাসিন্দার দেহে ভাইরাসের উপস্থিতি শনাক্তে পরীক্ষা করতে স্বাস্থ্যকর্মী ও জরুরি বিভাগের কর্মীরা গত সপ্তাহে অশান্ত সমুদ্রে নৌকা ভাসিয়ে দ্বীপটিতে গিয়েছিলেন।
“তারা (গ্রেটার আন্দামানিজ আদিবাসী) সবাই খুব সহযোগিতা করেছিল,” বলেছেন অভিজিৎ।
জনগোষ্ঠীটির অনেক সদস্যের পোর্ট ব্লেয়ারে যাতায়াত আছে; অনেকে সেখানে ছোটখাট কাজও করেন। পোর্ট ব্লেয়ার থেকেই বিপন্ন এ আদিবাসী গোষ্ঠীর মধ্যে ভাইরাসটি পৌঁছে গেছে বলে অনুমান করা হচ্ছে।
অভিজিৎ জানান, নতুন করোনাভাইরাস যেন দ্বীপপুঞ্জটির অন্যান্য আদিবাসী গোষ্ঠীর মধ্যেও ছড়িয়ে না পড়ে, তা নিশ্চিত করার বিষয়টিকেই এখন সবচেয়ে বেশি অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে।
আন্দামান দ্বীপপুঞ্জে বিপন্ন ৫টি আদিবাসী গোষ্ঠীর বাস। এগুলো হচ্ছে- জারাওয়াজ, নর্থ সেন্টিনেলিজ, গ্রেট আন্দামানিজ, অংগি ও শোম্পেন।
অংগি জনগোষ্ঠী যে দ্বীপে বসবাস করছে, সেখানে ভাইরাস শনাক্তে পরীক্ষা করতে স্বাস্থ্যকর্মী ও চিকিৎসকদের পাঠানো হয়েছে বলে অভিজিৎ জানিয়েছেন।
শোম্পেন জনগোষ্ঠীর সদস্যদের দেহেও ভাইরাসের উপস্থিতি শনাক্তে পরীক্ষা করা হবে, বলেছেন তিনি।
এর বাইরে জারাওয়াজ এবং নর্থ সেন্টিনেলিজরা এখনও মূলধারার জনগোষ্ঠীর সঙ্গে সংযুক্ত হয়নি। নর্থ সেন্টিনেলিজরা বহিরাগতদের শত্রু বিবেচনা করে; তাদের দ্বীপে বাইরের কাউকে প্রবেশের অনুমতিও দেওয়া হয় না।
দক্ষিণ ও মধ্য আন্দামানের বিশাল বনাঞ্চলে বাস করা যাযাবর জারাওয়াজ জনগোষ্ঠীর সদস্য সংখ্যা এখন ৪৭৬ বা এর কাছাকাছি; করোনাভাইরাসের প্রকোপ শুরু হওয়ার পর তারা জঙ্গলের আরও গভীরে ঢুকে নিজেদের আইসোলেশনে রেখেছে বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
আরও পড়ুন: