করোনাভাইরাস সঙ্কটের মধ্যে ভারতে দাবদাহ, পঙ্গপাল

ভারতজুড়ে নতুন করেনাভাইরাসে আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা বাড়তে থাকার মধ্যেই রাজধানী দিল্লিসহ দেশটির উত্তরাঞ্চল তীব্র দাবদাহের কবলে পড়েছে।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 27 May 2020, 08:19 AM
Updated : 27 May 2020, 08:53 AM

মঙ্গলবার উত্তর ভারতের বহু এলাকায় তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যায়, দিল্লির সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪৭ দশমিক ৬ সেলসিয়াস ছোঁয় বলে জানিয়েছে বিবিসি।

বাংলাদেশ সময় বুধবার সকালে জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের হালনাগাদ করা তথ্য অনুযায়ী, ভারতে কোভিড-১৯ আক্রান্তের সংখ্যা এক লাখ ৫১ হাজার ৮৭৬ জনে দাঁড়িয়েছে এবং মৃতের সংখ্যা ৪ হাজার ৩৪৬ জন।

করোনাভাইরাস সংক্রমণ রোধে ভারতজুড়ে লকডাউন চলার মধ্যেই দেশটির মধ্য ও পশ্চিমাঞ্চলের মধ্যপ্রদেশ, উত্তর প্রদেশ, রাজস্থান, পাঞ্জাব ও হরিয়ানায় পঙ্গপালের আক্রমণ শুরু হয়েছে। ঝাঁকে ঝাঁকে পঙ্গপাল এই রাজ্যগুলোর বহু গ্রাম ও শহরে ঢুকে পড়েছে, হানা দিয়েছে ফসলের ক্ষেতে। এতে দেশজুড়ে ভাইরাস আতঙ্কের মধ্যে পঙ্গপাল নিয়ে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে।

এই পরিস্থিতির সঙ্গে দাবদাহ যুক্ত হওয়ায় পরিস্থিতি আরও নাজুক হয়ে দাঁড়িয়েছে।

গত কয়েক দশকের মধ্যে চলতি বছর এই সময়ে দেশটিতে তাপমাত্রা সর্বোচ্চ পর্যায়ে উঠেছে। বৈশ্বিক আবহাওয়া পর্যবেক্ষণকারী ওয়েবসাইট এল ডোরাডো জানিয়েছে, মঙ্গলবার পুরো বিশ্বের মধ্যে দিল্লি ও সংলগ্ন এলাকার তাপমাত্রা সবচেয়ে বেশি ছিল।

উত্তর ভারতজুড়ে দেখা দেওয়া এমন দাবদাহের জন্য গত সপ্তাহে পূর্ব ভারত ও বাংলাদেশে আঘাত হানা শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় আম্পানও আংশিক দায়ী বলে ভারতের আবহাওয়া কর্মকর্তারা স্থানীয় গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন।

“সুপার সাইক্লোন আম্পান দেশের অপরাপর অংশ থেকে সব জলীয় বাষ্প শুষে নিয়েছে,” হিন্দুস্তান টাইমস সংবাদপত্রকে বলেছেন আঞ্চলিক আবহাওয়া পূর্বাভাস কেন্দ্রের প্রধান কুলদ্বীপ শ্রীবাস্তব।

সাম্প্রতিক বছরগুলোতে দাবদাহের কারণে ভারতে অনেক লোকের মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু বর্তমান দাবদাহের কারণে কারও মৃত্যু হয়েছে কি না, সে বিষয়ে কোনো তথ্য এখনও পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছে বিবিসি।

লকডাউনের মধ্যে শহরগুলো ছেড়ে মহাসড়ক ধরে হেঁটে অথবা সাইকেলে নিজ গ্রামের পথে রওনা হওয়া হাজার হাজার পরিযায়ী শ্রমিককে এখন এই তীব্র দাবদাহের মোকাবেলা করতে হচ্ছে। তাদের অনেকের কাছেই পর্যাপ্ত খাবার ও পানি নেই। তা সত্ত্বেও গনগনে তাপের মধ্যে তারা নিজ নিজ গন্তব্যে পৌঁছানোর চেষ্টা করছেন। 

এর আগে এসব পরিযায়ী শ্রমিকদের মধ্যে অনেকে পথেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন। তাদের মধ্যে দিনমজুর, রিক্সাচালক ও সব্জি বিক্রেতারা ছিলেন। এখনও সারাদিন ধরে এদেরই সবচেয়ে বেশি সময় ধরে প্রখর সূর্যের নিচে থাকতে হচ্ছে। 

দাবদাহের কারণে ফসল ধ্বংসকারী পঙ্গপালের বিরুদ্ধে লড়াইয়েও ছেদ পড়ছে। রাজস্থানসহ বিভিন্ন জায়গায় শতাধিক শ্রমিক গাড়ির ওপর বসানো স্প্রে, কীটনাশক ও ড্রোন নিয়ে তীব্র গরমের মধ্যে পঙ্গপালের বিরুদ্ধে লড়াই অব্যাহত রাখার চেষ্টা করছে বলে জানা গেছে।