আম্পান: পশ্চিমবঙ্গে মৃত্যু বেড়ে ৮০, ক্ষয়ক্ষতি দেখলেন মোদী

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় আম্পানে ভারতের পশ্চিমবঙ্গে মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে ৮০ হয়েছে বলে রাজ্যটির মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায় জানিয়েছেন।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 22 May 2020, 08:19 AM
Updated : 22 May 2020, 08:19 AM

ক্ষয়ক্ষতি মেরামতে প্রাথমিকভাবে তিনি রাজ্যের তহবিল থেকে এক হাজার কোটি রুপি বরাদ্দও দিয়েছেন।

শুক্রবার ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী হেলিকপ্টারে পশ্চিমবঙ্গের ক্ষতিগ্রস্ত বেশ কয়েকটি এলাকা পরিদর্শন করেছেন বলে আনন্দবাজারের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।

তার সঙ্গে মমতা এবং পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়ও ছিলেন।

ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন শেষে মোদী প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের নিয়ে ক্ষয়ক্ষতির মূল্যায়নে বসবেন। এদিন তার ঘূর্ণিঝড় আম্পানে ক্ষতিগ্রস্ত উড়িষ্যার বিভিন্ন এলাকাও পরিদর্শন করার কথা রয়েছে।

আম্পানের ধ্বংসযজ্ঞ দেখতে মোদী ৮৩ দিন পর রাজধানী ছেড়ে বাইরে এলেন। এর আগে সর্বশেষ ফেব্রুয়ারিতে তিনি উত্তরপ্রদেশ গিয়েছিলেন।  

বুধবার দুপুরে পশ্চিমবঙ্গে আঘাত হানা আম্পানে রাজ্যটির বেশ কয়েকটি জেলা লণ্ডভণ্ড হয়ে গেছে। এর মধ্যে উত্তর ও দক্ষিণ চব্বিশ পরগণা এবং পূর্ব মেদেনীপুরে সবচেয়ে বেশি ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

দুর্গম অনেক স্থানের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন থাকায় ক্ষয়ক্ষতির প্রকৃত চিত্র এখনও উঠে আসেনি বলে অনেকে মনে করছেন।

সবমিলিয়ে পশ্চিমবঙ্গের ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ এক লাখ কোটি রুপি ছাড়াতে পারে বলে মমতা আশঙ্কা করছেন।  

ঝড়ে কলকাতায় ১৯ জন ও রাজ্যের অন্যত্র আরও ৬১ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে বৃহস্পতিবার জানিয়েছেন তিনি।

মৃতদের পরিবারকে আড়াই লাখ রুপি ক্ষতিপূরণ দেয়ার পাশাপাশি ক্ষয়ক্ষতি মোকাবেলায় দেয়া অর্থ হিসাব করে খরচ করতেও নির্দেশ দিয়েছেন মমতা।

“১৭৩৭ সালে সর্বশেষ এমন দুর্যোগ হয়েছিল। সতর্কবার্তা পেয়ে ৫ লাখ মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নেয়া হয়েছিল বলে লাখো প্রাণ বেঁচেছে। উত্তর ও দক্ষিণ চব্বিশ পরগণার বিপুল ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এ ঝড়ের তীব্রতা আইলার চেয়েও বেশি ছিল। এ দুর্যোগ করোনাভাইরাসের চেয়েও ভয়াবহ,” বলেছেন তিনি। 

ক্ষয়ক্ষতি মোকাবেলায় কেন্দ্রীয় সরকার কিছু দেয়নি বলেও বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের জানান এ তৃণমূল কংগ্রেসপ্রধান।  

“আর্থিক অবস্থা খারাপ। কেন্দ্রের কাছ থেকে কিছুই পাইনি। আয় কিছুই নেই। পুরো খরচ ঘর থেকে করতে হচ্ছে। কীভাবে চলবে জানি না,” বলেছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী।

একইদিন মোদী বলেছেন, ঘূর্ণিঝড়ের ক্ষয়ক্ষতি মোকাবেলায় তার সরকার পশ্চিমবঙ্গের পাশে থাকবে।

ঝড়ের পর উপড়ে পড়া গাছ, বিদ্যুতের খুঁটি ও বাড়িঘরের ধ্বংসস্তূপ সরাতে পশ্চিমবঙ্গজুড়ে ব্যাপক অভিযান চলছে বলে বিবিসির এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।

আম্পান আঘাত হানার আগে লাখ লাখ মানুষকে আশ্রয় কেন্দ্রে সরিয়ে নেয়ার সময় সামাজিক দূরত্বের নির্দেশনা বজায় রাখাই সবচেয়ে বড় প্রতিবন্ধকতা ছিল বলে কর্মকর্তারা বলছেন। প্রাণঘাতী এ ভাইরাসে সংক্রমিত হওয়ার ভয়ে অনেকে আশ্রয় কেন্দ্রে যেতেও রাজি ছিলেন না।

আশ্রয় কেন্দ্রগুলোতে হাজার হাজার মানুষের উপস্থিতির কারণে সামনের দিনগুলোতে পশ্চিমবঙ্গে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে যেতে পারে বলেও স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা করছেন।

রাজ্যটিতে শুক্রবার সকাল পর্যন্ত কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত তিন হাজার ২০০র কাছাকাছি পৌঁছেছে বলে জানিয়েছে এনডিটিভি; মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২৫৯ তে।