কাশ্মীর: মেহবুবার সঙ্গে ‘কাউকেই দেখা করতে দিচ্ছে না’

জম্মু ও কাশ্মীরের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা মুফতিকে নির্জনে আটকে রাখা হয়েছে এবং তার সঙ্গে পরিবারের সদস্য, আইনজীবী কিংবা দলের কর্মী-সমর্থক কাউকেই দেখা করতে দেওয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ করেছেন তার মেয়ে ইলতিজা জাভেদ।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 7 August 2019, 07:39 AM
Updated : 7 August 2019, 07:39 AM

সংবিধানের বিশেষ মর্যাদা বাতিলের পর যোগাযোগবিচ্ছিন্ন কাশ্মীর থেকে মঙ্গলবার এক অডিও বার্তায় ইলতিজা এ অভিযোগ করেন, জানিয়েছে এনডিটিভি।

“আমার মাকে গতকাল (সোমবার) নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তাকে হরি নিবাস নামের একটি সরকারি গেস্টহাউজে আটকে রাখা হয়েছে। এরপর থেকেই তার সঙ্গে কোনো ধরনের যোগাযোগ নেই। আমাকেও অনুমতি দেয়া হয়নি তাকে দেখার। ল্যান্ডলাইন, সেলফোন সবকিছু বন্ধ রাখায় কোনো ধরনের যোগাযোগই করা যাচ্ছে না,” বলেছেন তিনি।

ভারতের রাজ্যসভায় আইনি বাধ্যবাধকতাসহ সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদ তুলে নেওয়ার পর তুমুল প্রতিক্রিয়ার ভয়ে সোমবার থেকেই কাশ্মীরকে একেবারে বিচ্ছিন্ন করে ফেলা হয়।

রোববার রাত থেকেই মেহবুবা মুফতি ও ন্যাশনাল কনফারেন্সের নেতা ওমর আবদুল্লাহকে গৃহবন্দি করে রাখা হয়েছিল। সোমবার মেহবুবাকে শ্রীনগরের বাসভবন থেকে সরিয়ে কাছাকাছি একটি সরকারি গেস্টহাউজে নিয়ে যাওয়া হয়।

“তাকে নির্জনে আটকে রাখা হয়েছে। আমার মাকে আইনজীবী কিংবা দলের নেতা-কর্মীদের সঙ্গেও দেখা করার অধিকার দেওয়া হচ্ছে না,” অভিযোগ ইলতিজার।

ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের ভূমিকার কড়া নিন্দাও শোনা গেছে তার কণ্ঠে।

“এটা আমার মা কিংবা ওমরের বিষয় নয়। আমার মনে হয়, এমনকী ভারতের সরকারও বুঝতে পারছে, তারা যা করছে তা অবৈধ, এখানকার জনগণ এটা এভাবে ফেলে রাখবে না.. তারা (ভারত সরকার) নির্বাচিত প্রতিনিধিদের সঙ্গে চোর-ডাকাত, অপরাধীদের মতো ব্যবহার করছে,” বলেছেন তিনি।

সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদ বাতিলের বিষয়টি মঙ্গলবার ভারতের পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ লোকসভায় উঠলে সেখানেও সরকার ও বিরোধী পক্ষ একে অপরের মুখোমুখি অবস্থান নেয়।

৩৭০ অনুচ্ছেদ জম্মু ও কাশ্মীরকে অনেক ক্ষেত্রেই স্বায়ত্তশাসন দিয়েছিল; এ অনুচ্ছেদের ফলে কাশ্মীরিদের নিজস্ব সংবিধান, আলাদা পতাকা ও স্বতন্ত্র আইন বানানোর অধিকার ছিল। রাজ্যটির কেবল পররাষ্ট্র, প্রতিরক্ষা ও যোগাযোগ ব্যবস্থা ছিল কেন্দ্রীয় সরকারের হাতে।

ওই অনুচ্ছেদের বলেই কাশ্মীর স্থায়ী বাসিন্দা নির্ধারণ, সম্পত্তির মালিকানা ও মৌলিক অধিকার সংক্রান্ত আলাদা আইন তৈরি করেছিল। সেসব আইনে ভারতের অন্য এলাকার বাসিন্দাদের কাশ্মীরের জমি-সম্পদ ক্রয় কিংবা এখানে স্থায়ীভাবে বসবাসে নিষেধাজ্ঞা ছিল।

“এটা ভারতের জন্য একটি ঐতিহাসিক মুহুর্ত। আজ আমরা যা নিয়ে আলোচনা করছি, তা প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে প্রভাব ফেলবে,” মঙ্গলবার লোকসভায় জম্মু ও কাশ্মীর পুনর্গঠন বিল উত্থাপনের সময় বলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ।

বিলে এখনকার জম্মু-কাশ্মীর রাজ্যকে ভাগ করে দু'টি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল করার কথা বলা হয়েছে।

জম্মু-কাশ্মীরের পৃথক আইনসভা থাকলেও লাদাখের জন্য তা থাকবে না। বিলে একইসঙ্গে জম্মু-কাশ্মীরের ক্ষেত্রে সাংবিধানিক প্রধান হিসেবে লেফটেন্যান্ট গভর্নর বা উপ-রাজ্যপাল পদ সৃষ্টির বিধানও রাখা হয়েছে।

লোকসভায় ক্ষমতাসীন বিজেপির ব্যাপক সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকায় বিলটি সহজেই পাস হয়ে যায়।