পাকিস্তানে জয়নবের ধর্ষকের ফাঁসি কার্যকর

ছয় বছর বয়সী শিশু জয়নব আনসারিকে ধর্ষণ ও হত্যার দায়ে এক ব্যক্তির ফাঁসি কার্যকর করেছে পাকিস্তান।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 17 Oct 2018, 08:03 AM
Updated : 17 Oct 2018, 08:16 AM

জানুয়ারিতে একটি ময়লার ভাগারে শিশু জয়নবের লাশ পাওয়া যাওয়ার পর ইমরান আলিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল।

বুধবার ভোররাতে লাহোরের কোট লখপত কারাগারে ইমরানের ফাঁসি কার্যকর করা হয়, খবর বিবিসির।

এ সময় জয়নবের বাবা ও তার অন্যান্য স্বজনরা সেখানে উপস্থিত ছিলেন।

পাকিস্তানের কাসুর শহরে এ ধরনের বেশ কয়েকটি শিশু খুনের ঘটনার পর এ হত্যাকাণ্ডে বড় ধরনের প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়। পাকিস্তানজুড়ে ক্ষোভ ও প্রতিবাদ ছড়িয়ে পড়ে। 

শিশু জয়নবকে ধর্ষণ ও হত্যার জন্য মৃত্যুদণ্ড পাওয়া ইমরান আলীকে আরও ছয়টি শিশুর বিরুদ্ধে একই ধরনের অপরাধ করার জন্য দায়ী করা হয়।

ইমরানের ফাঁসি কার্যকরের পর জয়নবের বাবা আমিন আনসারি ‘সন্তোষ’ প্রকাশ করেছেন।

“আমি তার ভয়ঙ্কর মৃত্যু নিজ চোখে দেখেছি,” এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন তিনি।

বেঁচে থাকলে জয়নবের বয়স বুধবার সাত বছর দুই মাস হতো বলে জানিয়েছেন আনসারি। কর্তৃপক্ষ ফাঁসি কার্যকরের ঘটনাটি টেলিভিশনে সরাসরি সম্প্রচার করেনি বলে দুঃখ প্রকাশ করেন তিনি। 

ইমরান আলীকে আরও ছয়টি শিশুর বিরুদ্ধে একই ধরনের অপরাধের জন্য দায়ী করা হয়। ছবি: পুলিশ হ্যান্ডআউট

এর আগে জনসম্মুখে অপরাধী ইমরানের ফাঁসি কার্যকরের জন্য আবেদন জানিয়েছিলেন তিনি, কিন্তু লাহোর হাইকোর্ট ওই আবেদন খারিজ করে দেয়।

চলতি বছরের ৪ জানুয়ারি জয়নব নিখোঁজ হয়েছিল। পাঁচ দিন পর একটি ময়লার ভাগাড়ে তার লাশ পাওয়া যায়।

পুলিশ জানায়, পূর্ববর্তী দুই বছরে কাসুরে এ ধরনের বেশ কয়েকটি শিশু হত্যার ঘটনা ঘটেছে। কিন্তু জয়নবের হত্যাকাণ্ডের পর যে ধরনের প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয় তাতে লোকজনের ধৈর্যের বাঁধ ভেঙে যাওয়ার বিষয়টি প্রকাশ পায়।

ব্যাপক বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে; এসবের সঙ্গে পুলিশের অযোগ্যতার বিরুদ্ধেও প্রতিবাদ শুরু হয়। নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে দুই জন নিহত হন।

জয়নবের পরিবারের অভিযোগ, নিখোঁজের অভিযোগ করা হলেও লাশ পাওয়ার আগ পর্যন্ত পাঁচ দিন ধরে পুলিশ কোনো পদক্ষেপই নেয়নি।

পুলিশ নয়, শেষ কোথায় জয়নবকে দেখা গিয়েছিল তা সিসিটিভি ফুটেজ ঘেটে খুঁজে বের করে স্বজনরা।

ওই ফুটেজে দেখা যায়, এক ব্যক্তি একটি বালিকাকে সঙ্গে করে নিয়ে যাচ্ছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এই ফুটেজ ছড়িয়ে পড়ে। এরপর হ্যাশট্যাগ দিয়ে #জাস্টিসফরজয়নব লেখা ভাইরাল হয়ে ওঠে। অনেকে এ ঘটনার বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানাতে থাকেন।

অবশেষে ২৩ জানুয়ারি ডিএনএ নমুনা মিলে যাওয়ার পর ২৪ বছর বয়সী ইমরান আলীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

ফেব্রুয়ারিতে জয়নব ধর্ষণ ও হত্যা মামলায় দোষী সাব্যস্ত ইমরানকে মৃত্যুদণ্ড দেয় আদালত। এই রায়ের বিরুদ্ধে তার আপিলও ব্যর্থ হয়। চলতি মাসে পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট আরিফ আলভি তার সাধারণ ক্ষমার প্রার্থনা প্রত্যাখ্যান করেন।