নাগরিক তালিকা: দাঙ্গার আশঙ্কায় আসামে সেনা মোতায়েন

আসামে নাগরিকদের তালিকা প্রকাশের পর দাঙ্গা বাঁধার আশঙ্কায় রাজ্যটিতে প্রায় ৬০ হাজার নিরাপত্তা রক্ষী মোতায়েন করেছে ভারত সরকার।

>>রয়টার্স
Published : 29 Dec 2017, 10:39 AM
Updated : 29 Dec 2017, 10:41 AM

‘অবৈধ বাংলাদেশি’ চিহ্নিত করার উদ্যোগের অংশ হিসেবে রোববার রাজ্য সরকার ওই তালিকা প্রকাশ করতে যাচ্ছে।

১৯৫১ সালের পর রাজ্যটিতে প্রথমবার নাগরিকদের তালিকা করা হলো, যা ন্যাশনাল রেজিস্টার অব সিটিজেন্স (এনআরসি) নামে পরিচিত।

আসামে প্রতিবেশী বাংলাদেশ থেকে আসা অনেক মানুষ, বিশেষ করে মুসলমানরা অবৈধভাব বসবাস করছে বলে দাবি ক্ষমতাসীন দল ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি)।

বাংলাদেশ লাগোয়া এই রাজ্যে গত বছর প্রথমবারের মতো ক্ষমতায় আসে হিন্দু জাতীয়তাবাদী দল বিজেপি।

ক্ষমতায় আসার পরেই দলটি আসাম থেকে ‘অবৈধ মুসলিমদের’ বিতাড়নের প্রতিজ্ঞা করে।

তাদের যুক্তি ‘অবৈধ মুসলিমরা’ হিন্দুদের চাকরি কেড়ে নিচ্ছে।

আসামের অর্থমন্ত্রী হেমন্ত বিশ্বাস শর্মা রয়টার্সকে বলেন, “আসামে বসবাস করা অবৈধ বাংলাদেশিদের সনাক্ত করতে এই তালিকা করা হয়েছে।

“যাদের নাম এনআরসি তে নেই তাদের বিতাড়ন করা হবে।”

রাজ্য সরকারের এ উদ্যোগ  আসামে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা শুরু হয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

মুসলিম অধিবাসী সংখ্যার দিক দিয়ে ভারতের রাজ্যগুলোর মধ্যে আসামের অবস্থান দ্বিতীয়।

স্থানীয় মুসলিম নেতাদের অভিযোগ, মিয়ানমারের রোহিঙ্গা মুসলিমদের মতো তাদেরও দেশছাড়া করতে এনআরসি হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা হবে।

মুসলিমদের বিতাড়নের পাশাপাশি বাংলাদেশে যেসব হিন্দু নিপীড়নের শিকার, তাদের ভারতে আশ্রয় দেওয়ার ঘোষণাও দেন অর্থমন্ত্রী হেমন্ত। এ ক্ষেত্রে কেন্দ্রের নীতি অনুসরণ করা হবে বলে জানান তিনি।

বিষয়টি জানতে দিল্লির সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও তাদের কোনো বক্তব্য পায়নি রয়টার্স।

এদিকে বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল রয়টার্সকে বলেন, তারা এ ধরনের কোনো খবর জানেন না।

তিনি বলেন, “আমরা ভারত সরকারের কাছ থেকে এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক বা অনানুষ্ঠানিক কোনো খবরই পাইনি।”

ধারণা করা হয়, আসামে বসবাসকারী ২০ লাখের বেশি মুসলমানের শেকড় বাংলাদেশে।

এনআরসিতে জায়গা পেতে আসামের বাসিন্দাদের ১৯৭১ সালের ২৪ মার্চের আগে তার পরিবার সেখানে বসবাস করতো সংক্রান্ত প্রমাণপত্র জামা দিতে হয়েছে, যা অনেকের নেই।

স্থানীয় একটি মাদ্রাসার শিক্ষক আসিফুল রহমান বলেন, “আমার দাদা-দাদি এবং আমার বাবা-মা সবাই ভারতে জন্ম নিয়েছে। কিন্তু আমাদের হাতে তার কোনো তথ্য না থাকায় আজ ভারতীয় হিসেবে নিজেদের প্রমাণ করতে লড়াই করতে হচ্ছে।

“আমাদের বাবা-মা এবং দাদা-দাদি অশিক্ষিত ছিলেন। তাই তারা কোনো আইনি কাগজপত্র রাখেননি। যে কারণে ভারতীয় প্রমাণে আমাদের পরীক্ষা দিতে হচ্ছে।”