মমতাই থাকছেন ক্ষমতায়: জরিপ

সিপিএম-কংগ্রেস জোটেও কাজ হচ্ছে না; পশ্চিমবঙ্গে রাজ্যে ক্ষমতায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তৃণমূল কংগ্রেসই থাকছে বলে জরিপের ফলাফল বলছে।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 16 May 2016, 06:06 PM
Updated : 16 May 2016, 07:49 PM

সোমবার প্রকাশিত বুথ ফেরত অধিকাংশ জরিপের ফল বিশ্লেষণে দেখা যায়, পশ্চিমবঙ্গে পরিবর্তন না ঘটলেও চমক আসছে পাশের রাজ্য আসামে। সেখানে কংগ্রেসকে হটিয়ে ক্ষমতায় যাচ্ছে বিজেপি।

ভারতের বাংলাদেশ-লাগোয়া রাজ্য দুটিতে গত মাসে ভোট শেষ হলেও বুথফেরত জরিপ প্রকাশে নিষেধাজ্ঞা ছিল নির্বাচন কমিশনের।

সোমবার তামিলনাড়ু, কেরালা ও কেন্দ্রশাসিত পদুচেরিতে ভোটগ্রহণ শেষে সন্ধ্যায় সেই নিষেধাজ্ঞার সময় পেরিয়ে যাওয়ার পর ভারতের গণমাধ্যমে আসতে থাকে বুথফেরত জরিপের ফল।

তাতে দেখা যায়, মমতার তৃণমূল পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার ২৯৪টি আসনের মধ্যে দেড় শতাধিক আসনে জয়ী হয়ে আবার সরকার গঠন করতে যাচ্ছে।

এনডিটিভি বলছে, ১৭৯টি আসনে জিততে যাচ্ছে জোড়াফুল প্রতীকের প্রার্থী। বামফ্রন্ট ও কংগ্রেস জোট পাচ্ছে ১০৯টি আসন এবং বিজেপি তিনটি আসনে জয়ী হতে যাচ্ছে।

টাইমস অফ ইন্ডিয়া তৃণমূলকে এগিয়ে রাখলেও আসন দেখাচ্ছে ১৬৭টি। তাদের আভাস, বামফ্রন্টের আসন বেড়ে হচ্ছে ৭৫টি, কংগ্রেস পাচ্ছে ৪৫ আসন। আর কেন্দ্রে ক্ষমতাসীন বিজেপি এই রাজ্যে চারটি আসনে জিততে চলেছে।

বামফ্রন্টের দীর্ঘ জমানার অবসান ঘটিয়ে ২০১১ সালে পশ্চিমবঙ্গে ক্ষমতা নেয় কংগ্রেসের এক সময়ের নেত্রী মমতার দল তৃণমূল। 

গত নির্বাচনে তৃণমূল ১৮৪টি আসনে জিতেছিল। কাস্তে-হাতুড়ি প্রতীক জেতে ৬০ আসনে এবং কংগ্রেসের পাঞ্জা প্রতীক জেতে ৪০ আসনে।

সেবার মমতার রাজনৈতিক মিত্র ছিল নিজের আগের দল কংগ্রেস। কিন্তু রাজনীতির পালাবদলের খেলায় এবার তাকে একাই লড়তে হয়। অন্যদিকে রাজ্যে এক সময়ের ক্ষমতাসীন ও বিরোধী দল বামফ্রন্ট ও কংগ্রেস জোট বাঁধে তাকে হটাতে। 

পশ্চিমবঙ্গের ভোটের ফল বাংলাদেশের জন্য বেশ গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে দেখা হয়।

বামফ্রন্টের জ্যোতি বসু মুখ্যমন্ত্রী থাকার সময় দুই দেশের কেন্দ্রীয় সরকারের মধ্যে গঙ্গার পানি বণ্টন চুক্তি হয়েছিল। তাতে জ্যোতি বসুর ভূমিকার কথাও স্মরণ করা হয়।

অন্যদিকে মুখ্যমন্ত্রী মমতার আপত্তির কারণে আটকে যায় দুই দেশের তিস্তার পানি বণ্টন চুক্তি। তবে পরে মমতার অবস্থান পরিবর্তনের ইঙ্গিত দেখা গেলেও তা এখনও আলোর মুখ দেখেনি।  

গণমাধ্যমে জরিপের ফল এলেও মমতাই ক্ষমতায় থাকছে, না কি হটতে হচ্ছে, তা দেখার জন্য ১৯ মে পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। সেদিনেই ভোটের ফল ঘোষণা হবে।

এদিকে বুথফেরত জরিপের ফল আসামে তরুণ গগৈর নেতৃত্বাধীন কংগ্রেস সরকারের ভরাডুবির আভাস দিচ্ছে। সেখানে চমক দেখাতে চলেছে কেন্দ্রের ক্ষমতায় থাকা বিজেপি।

আসামের ভোটচিত্র

জরিপের প্রতিফলন বাস্তবে ঘটলে উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় এই রাজ্যে এটাই হবে বিজেপির প্রথম জয়।

আসামের বিধানসভার ১২৬টি আসনের মধ্যে ৭৩টিতে সহজ জয় পেতে চলেছে বিজেপি, এমন আভাস দিচ্ছে এনডিটিভি। কংগ্রেস পাচ্ছে মাত্র ৩৭টি আসন। প্রধান মুসলিম দল এআইইউডিএফ ১২টি আসন পেতে চলেছে।

তামিলনাড়ুতে ক্ষমতাসীন জয়ললিতার দল এআইএডিএমকের সঙ্গে ডিএমকের হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের আভাস মিলেছে জরিপে।

রাজ্যের ২৩৪টি আসনের মধ্যে এআইএডিএমকে ১১০টিতে এবং ডিএমকে ১০৯টিতে জয় পেতে চলেছে বলে আভাস পাওয়া যাচ্ছে।

‘ক্যাপ্টেন’ বিজয়কান্তের নেতৃত্বাধীন জোটসহ অন্যরা পেতে পারেন ১৫টি আসন। এর ফলে রাজ্যে নতুন সরকার কারা গঠন করবে তার নির্ধারক হতে চলেছেন তিনি।

বুথফেরত জরিপে কেরালায়ও ক্ষমতাসীন কংগ্রেসের ভরাডুবির আভাস মিলেছে। সেখানে ক্ষমতায় ফিরতে যাচ্ছে বামফ্রন্ট।  

এই রাজ্যটিতে বরাবরই কংগ্রেস ও বামফ্রন্টের পালাবদল দেখা যায়। এবারও তাই ঘটতে চলছে বলেই ধারণা করা হচ্ছে।

কেরালা বিধানসভার ১৪০টি আসনের মধ্যে বামপন্থিরা জয়ী হতে চলেছে ৮০টি আসনে। কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন জোট ইউডিএফ পেতে পারে ৫৭ আসন, আর বিজেপি দুটি আসন।

কেন্দ্রশাসিত পুদুচেরির ক্ষমতায় ফিরে আসতে পারে ডিএমকে। বিধানসভার ৩০টি আসনের মধ্যে ১৮টির বেশিতে জয় পেতে পারে তারা। ক্ষমতাসীন আঞ্চলিক দল এআইএনআরসি পেতে পারে ১০টি আসন।