ভারতের ‘শেয়ারবাজার সম্রাট’ রাকেশ ঝুনঝুনওয়ালার মৃত্যু

আশির দশকে এক আত্মীয়ের কাছ থেকে ১০০ ডলার ধার করে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করেন, কয়েক দশকের মধ্যে ভারতের এ ‘ওয়ারেন বাফেটের’ সম্পদের পরিমাণ পৌঁছায় কয়েকশ কোটি ডলারে।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 14 August 2022, 09:44 AM
Updated : 14 August 2022, 09:44 AM

শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ করে শতকোটি ডলারের সম্পদ গড়া, ভারতের ‘ওয়ারেন বাফেট’ খ্যাত ধনকুবের রাকেশ ঝুনঝুনওয়ালা আর নেই।

রোববার সকালে মুম্বাইয়ের একটি হাসপাতালে ৬২ বছর বয়সী এ বিলিয়নেয়ারের মৃত্যু হয়।

আনুষ্ঠানিকভাবে তার মৃত্যুর কারণ ঘোষণা করা না হলেও কিডনি বিকল হয়ে তিনি মারা গেছেন বলে বিবিসি জানতে পেরেছে।

আশির দশকে এক আত্মীয়ের কাছ থেকে ১০০ ডলার ধার করে শেয়ার বাজারে বিনিয়োগ করে ধীরে ধীরে অঢেল সম্পদের মালিক হন ঝুনঝুনওয়ালা।

ফোর্বস ম্যাগাজিনের কিছুদিন আগের এক হিসাবেও তার সম্পদের পরিমাণ দেখানো হয়েছে প্রায় ৫৮০ কোটি ডলার।

বিবিসি লিখেছে, ১৯৯১ সালে শেয়ার বাজার পুনর্গঠনের সময়ে বিনিয়োগকারীদের যে প্রজন্ম লাভবান হয়েছিল, তিনি ছিলেন তারই অংশ।

এ ধনকুবেরের মৃত্যুতে শোক জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বলেছেন, “রাকেশ ঝুনঝুনওয়ালা ছিলেন অদম্য। জীবন্ত, বুদ্ধিমান এবং অন্তর্দৃষ্টিসম্পন্ন ব্যক্তি ছিলেন তিনি। অর্থনীতিতে ব্যাপক অবদান রেখে গেছেন তিনি।

“ভারতের অগ্রগতি নিয়ে তার ব্যাপক আগ্রহ ছিল। তার মৃত্যুতে আমি শোকাহত। তার পরিবার ও ভক্ত-অনুরাগীদের প্রতি আমার সমবেদনা।”

ঝুনঝুনওয়ালা একবার বলেছিলেন, পুঁজিবাজারে আয়কর কর্মকর্তা বাবার বিনিয়োগ ও লেসদেন দেখেই তিনি অনুপ্রাণিত হয়েছিলেন।

২৫ বছর বয়সে, ১৯৮৫ সালে এক আত্মীয়ের কাছ থেকে ১০০ ডলার ধার করে শেয়ারবাজারে বিনিয়োগে নামের ঝুনঝুনওয়ালা।

পরবর্তীতে তিনি ‘রেয়ার এন্টারপ্রাইজেস’ প্রতিষ্ঠা করেন। নিজের নামের প্রথম দুটি অক্ষর, সঙ্গে স্ত্রী রেখার নামের প্রথম দুই অক্ষর, দুইয়ে মিলে কোম্পানির ওই নাম রাখা হয়।

আনন্দবাজার লিখেছে, ভারতীয় শেয়ার বাজারের ‘বিগ বুল’ খ্যাত ঝুনঝুনওয়ালা শেয়ার বাজারে বিনিয়োগে কখনোই ভুল করতেন না বলে ধারণাও রয়েছে।

কিছুদিন আগে তিনি একটি জুতা কোম্পানির শেয়ার কিনেছিলেন, সেটির দরও মাত্র কয়েক দিনের মাথায় আকাশ ছোঁয়। এক দিনেই তিনি লাভ করেন ২২১ কোটি রুপি।

শেয়ার বাজারে বিনিয়োগ করে অঢেল সম্পত্তি গড়ার কারণেই তাকে ভারতের ‘ওয়ারেন বাফেট’ বলা হতো।

মহামারীর সময় যখন বিশ্বের বেশিরভাগ কোম্পানি লোকসান গুণছিল, তখনও তার সম্পত্তির পরিমাণ বেড়েছিল।

রাকেশ ঝুনঝুনওয়ালার পৃষ্ঠপোষকতায় চলতি মাস থেকেই ভারতে আকাসা এয়ারলাইন্সের যাত্রা শুরু হয়েছে, যারা সস্তায় বিমান পরিষেবা দেওয়া শুরু করে।

কোভিড মহামারীর দুই বছরে ভারতের অভ্যন্তরীণ বিমান চলাচল খাত ব্যাপক লোকসান গুণলেও এ বছর অনেক মানুষকেই বিমানে চড়তে দেখা যাচ্ছে।

১৯৬০ সালের ৫ জুলাই হায়দরাবাদের এক মধ্যবিত্ত পরিবারে জন্ম নিলেও তিনি বেড়ে উঠেছিলেন মুম্বাইয়ে। সিডেনহ্যাম কলেজ অব কমার্স অ্যান্ড ইকনমিক্স থেকে স্নাতক শেষে ইনস্টিটিউট অব চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টস অব ইন্ডিয়ায় পড়ালেখা করেন তিনি।

কলেজে পড়ার সময় থেকেই তার স্টক মার্কেট নিয়ে আগ্রহ ছিল, যা তিনি তার বাবার কাছ থেকেই পেয়েছিলেন।