চারশ বছর পুরনো শহর ঢাকা, প্রায় দুই কোটি মানুষের বাস, মেট্রোপলিটান নগরী হয়ে ওঠার ক্ষেত্রে একটি অভাব প্রকট হয়ে উঠেছিল, সেই অভাব ঘুচল অবশেষে, বাংলাদেশের রাজধানীতে গড়াল মেট্রোরেলের চাকা।
বুধবার উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে মেট্রোরেলের যাত্রা শুরুর অনুষ্ঠানে সর্বসাধারণের ঢোকার সুযোগ ছিল না, তারপরও স্টেশনের বাইরে উপস্থিত হয়ে ঢাকায় এই নতুনের শুরুর সাক্ষী হলেন অনেকে।
উত্তরার দিয়াবাড়ি থেকে প্রধানমন্ত্রী এবং নির্বাচিত নাগরিকদের নিয়ে মেট্রোরেলের প্রথম যাত্রা আগারগাঁও স্টেশনে এসে শেষ হয়।
উদ্বোধন অনুষ্ঠানের স্থান দিয়াবাড়ি প্রান্তের উত্তরা নর্থ স্টেশনের বাইরে যেমন জড়ো হয়েছিলেন অনেকে, একই চিত্র ছিল আগারগাঁওয়ে।
ব্যানার-ফেস্টুন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সচকিত উপস্থিতি এবং গণমাধ্যমকর্মীদের ব্যস্ততায় উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের কিছুটা আমেজ আগারগাঁওয়ে এসে পড়েছিল।
আগারগাঁওয়ে দেখা মিলল দেশের উত্তর-পশ্চিম প্রান্তের জেলা নওগাঁর মান্দা থানা আওয়ামী লীগের মহিলা সম্পাদিকা জেসমিন আরার। গত এক সপ্তাহ ধরে তিনি ঢাকায় অবস্থান করছেন শুধু এই অনুষ্ঠানটি সচক্ষে দেখার জন্য।
উচ্ছ্বসিত জেসমিন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমাদের জন্য এত বড় আনন্দ আর দ্বিতীয়টি নেই। বাংলাদেশের এত বড় অর্জনের সাক্ষী হতে গত এক সপ্তাহ ধরে আমি ঢাকায় অবস্থান করছি।
“সময়ের অভাবে উত্তরার দিয়াবাড়ি যেতে পারিনি। তাই এখানে দাঁড়িয়েছি যদি প্রধানমন্ত্রী যাওয়ার সময় তাকে এক নজর দেখা যায়।”
আগারগাঁওয়ে জড়ো হওয়া অধিকাংশই ছিলেন আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মী। তাদের অনেকে ঢাকায় এসেছিলেন গত ২৪ ডিসেম্বর আওয়ামী লীগের সম্মেলনে যোগ দিতে, সম্মেলন শেষে থেকে গেছেন আওয়ামী লীগ সরকারের আরেকটি অর্জনের সাক্ষী হতে।
তাদেরই একজন নাটোর জেলার লালপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতা কাজী আসিয়া জয়নুল বেনু।
তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “সম্মেলন উপলক্ষে ঢাকায় এসে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাতের সুযোগ হয়েছে। তবুও আজকে মেট্রোরেলের উদ্বোধন উপলক্ষে এখানে এসে দাঁড়িয়েছি। বাংলাদেশের এত বড় অর্জনের দিনে তো ঘরে বসে থাকতে পারি না। কালের সাক্ষী হতে আমি দাঁড়িয়েছি।”
দলীয় সভাপতি শেখ হাসিনার সুস্বাস্থ্য কামনা করে তিনি বলেন, “আমরা চাই, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আবার ভোটে জয়লাভ করুক। বাংলাদেশে আওয়ামী লীগের শাসন অব্যাহত থাকলে এরকম আরও মেট্রোরেল হবে। সেজন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সুস্থ থাকা খুব জরুরি।”
সিলেটের গোপালপুর বাসিন্দা নাসির উদ্দিনও ঢাকায় এসেছেন বেড়াতে, ছিলেন এক আত্মীয়ের বাসায়, সকালে সেখান থেকেই উপস্থিত হন আগারগাঁওয়ে। মেট্রোরেলে না চড়ে ঢাকা ছাড়তে চান না তিনি।
নাসির বলেন, “মেট্রোরেল নিয়ে আমাদের সিলেটের মানুষ অনেক বেশি উচ্ছ্বসিত। আমাদের এখন একটা মেট্রোরেল আছে। আগামীকাল মেট্রোরেলে চড়ে তারপরেই বাড়ি ফিরব।”
উদ্বোধনীর দিনে যাত্রী পরিবহন করছে না ঢাকার প্রথম মেট্রোরেল। তবে বৃহস্পতিবার থেকে যাত্রী পরিবহন শুরু হবে, তখন টিকেট কেটে যে কেউ চড়তে পারবেন বৈদ্যুতিক এই ট্রেনে।