মালাওয়ির ‘দ্য নেশন অন সানডে’ পত্রিকার সম্পাদক এডিথ ক্যাম্বালামে, মিয়ানমারের ‘সেভেন ডে ডিজিটাল’ এর প্রধান সম্পাদক নিয়েন নিয়েন নাইং এবং টমসন রয়টার্সের মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক সম্পাদক সামিয়া নাখুল ২০২১ সালের জন্য এ পুরস্কার পাচ্ছেন।
শুক্রবার ওয়ান-ইফরার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, দক্ষিণ আফ্রিকা, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া এবং আরব অঞ্চলের ২০২১ সালের এডিটোরিয়াল লিডারশিপ অ্যাওয়ার্ডের জন্য তাদের মনোনীত করা হয়েছে।
সংবাদ প্রকাশক এবং সাংবাদিকদের অধিকার রক্ষায় কাজ করা আন্তর্জাতিক এই সংগঠনটি উইমেন ইন নিউজ (উইন) কর্মসূচির আওতায় প্রতি বছর এ পুরস্কার দেয়।
এবারের পুরস্কারজয়ী তিন সম্পাদক আগামী ২৯ নভেম্বর ‘ওয়ান ইফরা ওয়ার্ল্ড নিউজ মিডিয়া কংগ্রেস’ এ উইনের প্যানেলে অংশ নেবেন।
আর ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে স্পেনে ‘ওয়ার্ল্ড নিউজ মিডিয়া কংগ্রেসে’ তাদের আনুষ্ঠানিকভাবে পুরস্কৃত করা হবে বলে বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।
ওয়ান-ইফরার সিইও ভিনসেন্ট পেরেগনে বলেন, “সাংবাদিকতায় নেতৃত্ব বেশ কঠিন, গণমাধ্যমের ব্যবসা তার চেয়েও দুরূহ। ২০২১ সালে উইমেন ইন নিউজ এডিটোরিয়াল লিডারশিপ অ্যাওয়ার্ডে নির্বাচিতরা এক্ষেত্রে অনন্য উদাহরণ।”
এডিথ ক্যাম্বালামে মালাওয়ির এডিটরস ফোরামের ভাইস প্রসিডেন্ট । তিনি বোর্ড অব দ্য মিডিয়া কাউন্সিল অব মালাওয়ির ভাইস চেয়ারপার্সন এবং অ্যাসোসিয়েশন অব উইমেন ইন মিডিয়া ইন মালাওয়ির অন্তর্বর্তী প্রেসিডেন্ট।
গণমাধ্যমে তার কাজ করার অভিজ্ঞতা ১৫ বছরের বেশি। কর্মক্ষেত্রে নিষ্ঠার সঙ্গে বিভিন্ন দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি তিনি জেন্ডার অ্যাডভোকেট, গণমাধ্যমের প্রশিক্ষক এবং পরামর্শক হয়ে উঠেছেন।
ক্যাম্বালামে বলেন, “উইন লিডারশিপ অ্যাকসিলারেটর এর মাধ্যমে উইমেন ইন নিউজ এর সঙ্গে কাজ শুরুর সাত বছর পর আমি এই অ্যাওয়ার্ড পেলাম। আমি ভাবতেও পারিনি এটা আমাকে এ পর্যায়ে নিয়ে আসবে। আমি অত্যন্ত সম্মানিত ও কৃতজ্ঞ।
“আমি আশা করি এটা তরুণ নারী সাংবাদিকদের উৎসাহিত করবে এবং তাদের কঠোর পরিশ্রম ও সংবাদ কক্ষে তাদের অবদান নজরে আসার এবং স্বীকৃতি পাওয়ার মতে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠার বিষয়ে আশাবাদী করে তুলবে।”
মিয়ানমারে প্রধান বার্তা সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করা হাতে গোনা কয়েকজন নারীর একজন নিয়েন নিয়েন নাইং। ২০০১ সালে শিক্ষানবিশ হিসেবে তিনি সাংবাদিকতা শুরু করেন এবং এক পর্যায় দেশটির সবচেয়ে প্রভাবশালী সংবাদমাধ্যম ‘সেভেন ডে ডিজিটাল’ এর সম্পাদকের দায়িত্ব নেন।
২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে সামরিক অভ্যুত্থানের পর স্বাধীন গণমাধ্যমের ওপর দমন পীড়নের অংশ হিসেবে এই পত্রিকাটি বন্ধ করে দেওয়া হয়।
নাইং বলেন, “এই অ্যাওয়ার্ড পেয়ে আমি আপ্লুত, বিশেষ করে আমাদের দেশে যখন সংবাদ মাধ্যমের স্বাধীনতাকে কাটছাঁট করা হয়েছে। যখন সাংবাদিকরা, বিশেষ করে নারীরা হুমকি এবং চাপের মুখে তাদের আজীবন লালিত স্বপ্নকে পরিত্যাগ করছে।
“এই অ্যাওয়ার্ড মিয়ানমারের সকল নারী সাংবাদিকের প্রতিনিধিত্ব করুক এবং আমাদের দেশে গণমাধ্যমের স্বাধীনতাকে ফিরিয়ে আনার জন্য সাহস এবং দায়বদ্ধতার প্রতীক হয়ে উঠুক।”
রয়টার্সের সামিয়া নাখুল কাজ করে যাচ্ছেন সাহস ও দায়িত্বশীলতার সাথে। মধ্যপ্রাচ্য থেকে ৩৫ বছর ধরে তিনি প্রতিবেদন পাঠাচ্ছেন। ১৯৮০ সালে লেবাননে গৃহযুদ্ধের খবর সংগ্রহের মধ্য দিয়ে তার পেশাজীবন শুরু হয়।
নাখুল বলেন, “এই স্বীকৃতি আমাকে গভীরভাবে অনুপ্রাণিত এবং সম্মানিত করেছে। নতুন প্রজন্মের নারীদের আমি বলব: যাদের ভাষা নেই তুমিই তাদের ভাষা, একনিষ্ঠ থাকতে হবে, কঠোর হতে হবে, সত্যনিষ্ঠা লাগবে এবং কুণ্ঠাহীনভাবে কোনো পক্ষপাতিত্ব না করে তথ্য দিতে হবে।”