সিঙ্গাপুরের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গতবছর ১৩ অগাস্ট মৃত্যু হয় মুক্তি সংগ্রামী এই সাংবাদিকের। মৃত্যু পর্যন্ত তিনি ছিলেন সমকালের সম্পাদক।
মৃত্যুবার্ষিকীতে তার পরিবার, সমকালসহ বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে বিভিন্ন কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে। ঢাকার উত্তরার গোলাম সারওয়ারের বাসা এবং তার জন্মস্থান বরিশালের বানারীপাড়ায় দোয়া ও মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছে।
মঙ্গলবার সকালে রাজধানীর মিরপুর বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে গোলাম সারওয়ারের কবরে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানায় সমকাল পরিবার।
ঈদের ছুটির পর দৈনিক সমকাল ও গোলাম সারওয়ার ফাউন্ডেশন যৌথভাবে একটি স্মরণসভারও আয়োজন করবে বলে জানানো হয়েছে পত্রিকাটির এক প্রতিবেদনে।
১৯৪৩ সালের ১ এপ্রিল বরিশালের বানারীপাড়ায় জন্ম নেওয়া গোলাম সারওয়ার বানারীপাড়া হাই স্কুল, চাখার ফজলুল হক কলেজে উচ্চ মাধ্যমিক শেষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগ থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি নেন।
১৯৬২ সালে চট্টগ্রামের দৈনিক আজাদীর বিশ্ববিদ্যালয় সংবাদদাতা হিসেবে সাংবাদিকতা শুরু তার। ওই বছরই দৈনিক সংবাদের সহসম্পাদক হিসেবে যোগ দেন।
একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয়ভাবে অংশ নেওয়ার পর বানারীপাড়ায় ফিরে কয়েক মাস বানারীপাড়া ইউনিয়ন ইনস্টিটিউশনে প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করেছিলেন গোলাম সারওয়ার। ১৯৭৩ সালে তিনি যোগ দেন দৈনিক ইত্তেফাকে।
ইত্তেফাকে দীর্ঘদিন কাজের পর ১৯৯৯ সালে যুগান্তর সম্পাদক হিসেবে নতুন অধ্যায় শুরু করেন গোলাম সারওয়ার। অল্প দিনেই প্রচার সংখ্যায় সামনের দিকে নিয়ে আসেন পত্রিকাটিকে।
এরপর ২০০৫ সালে তার হাত ধরেই সমকাল প্রকাশিত হয়। মাঝে কিছু দিনের জন্য যুগান্তরে ফিরলেও পরে আবার ফিরে আসেন সমকালে।
গোলাম সারওয়ার দেশের প্রতিনিধিত্বশীল সম্পাদকদের সংগঠন সম্পাদক পরিষদের সভাপতি ছিলেন; জাতীয় প্রেস ক্লাবের ব্যবস্থাপনা পর্ষদেও একাধিকবার দায়িত্ব নিয়েছিলেন।
বাংলাদেশ প্রেস ইনস্টিটিউটের (পিআইবি) চেয়ারম্যান এবং ফিল্ম সেন্সর বোর্ডের আপিল বিভাগে দায়িত্ব পালন করা গোলাম সারওয়ার সাংবাদিকতায় অবদানের জন্য ২০১৪ সালে একুশে পদকে ভূষিত হন।
‘সম্পাদকের জবানবন্দি’, ‘অমিয় গরল’, ‘আমার যত কথা’ ও ‘স্বপ্ন বেঁচে থাক’ নামে তার চারটি প্রবন্ধ সংকলন রয়েছে তার। এছাড়া বাংলা একাডেমি থেকে ‘রঙিন বেলুন’ নামে একটি ছড়ার বইও প্রকাশিত হয়েছে।