ঝুঁকিতে রোহিঙ্গা শিশু: শিশুরা কী ভাবছে?

বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া তিন লাখের বেশি শিশু কতটা ঝুঁকির মধ্যে আছে, রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোর প্রকৃত পরিস্থিতি কী, সেখানে শিশুদের কী ধরনের চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হচ্ছে, এ সংকট থেকে উত্তরণে সরকার ও আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর কী করা উচিৎ- এসব প্রশ্নে শিশু সাংবাদিকদের ভাবনা জানা গেল কক্সবাজারে এক আলোচনায়।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক কক্সবাজার থেকেবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 19 Nov 2017, 07:55 AM
Updated : 19 Nov 2017, 06:38 PM

কক্সবাজারের রয়েল টিউলিপ সি পার্ল বিচ রিসোর্টে ‘ঝুঁকিতে রোহিঙ্গা শিশু’ শিরোনামে এই আলোচনার আয়োজন করে বাংলাদেশে শিশু সাংবাদিকতার প্রথম ওয়েবসাইট ‘হ্যালো’; সঙ্গে ছিল জাতিসংঘের শিশু তহবিল-ইউনিসেফ।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের প্রধান সম্পাদক তৌফিক ইমরোজ খালিদীর সঞ্চালনায় রোববার বিকাল সাড়ে ৩টা থেকে প্রায় দুই ঘণ্টার এ আলোচনায় অংশ নেন ইউনিসেফের মুখপাত্র শাকিল ফয়জুল্লাহ।

আলোচনার প্রাণ ছিল সদ্য প্রশিক্ষিত ২০ জন শিশু সাংবাদিক, যারা শনিবার সারাদিন কক্সবাজারের বালুখালি ও কুতুপালং ক্যাম্প ঘুরে রোহিঙ্গা শিশুদের প্রকৃত অবস্থা জানার চেষ্টা করেছে; তাদের কথা, তাদের দুর্দশার চিত্র ধারণ করেছে ভিডিওতে।

রোহিঙ্গা শিশুদের নিয়ে শিশু সাংবাদিকদের এই আলোচনা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম এবং এর ফেইসবুক পাতায় দেখানো হয় সরাসরি।

হ্যালোর নির্বাহী সম্পাদক মুজতবা হাকিম প্লেটো বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, সোমবার বিশ্ব শিশু দিবস। এই মুহূর্তে রোহিঙ্গা সঙ্কট নিয়ে সারা বিশ্বে আলোচনা চলছে। আর কক্সবাজারে যারা আশ্রয় নিয়েছে তাদের বেশিরভাগই শিশু।

“আমরা শিশুদের চোখ দিয়ে পরিস্থিতি দেখে এ সঙ্কট নিয়ে তাদের ভাবনা জানতে চেয়েছি। সেজন্যই এ আয়োজন।” 

গত ২৫ অগাস্ট মিয়ানমারে সেনাবাহিনীর দমন অভিযান শুরুর পর এ পর্যন্ত ছয় লাখ ১৩ হাজার রোহিঙ্গা সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে এসেছে। ইউনিসেফের তথ্য অনুযায়ী, এই রোহিঙ্গাদের ৫৮ শতাংশই শিশু, যাদের অনেকেই মারাত্মক পুষ্টিহীনতার শিকার।

নিজেদের ভিটেমাটি ছেড়ে নানা ধরনের শারীরিক ও মানসিক ক্ষত নিয়ে এই শিশুরা বাংলাদেশে পৌঁছেছে। নিরাপদ পানির সঙ্কটের কারণে সংক্রামক রোগের ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে তারা।

প্লেটো বলেন, যে ৯ কিশোরী আর ১১ কিশোর এই আলোচনায় অংশ নিয়েছে, তারা কক্সবাজারের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্রছাত্রী। গত শুক্রবার এই রয়েল টিউলিপেই তাদের শিশু সাংবাদিকতা, ভিডিও ধারণ ও সম্পাদনার প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়।

“এক দিনের প্রশিক্ষণ নিয়েই তারা রোহিঙ্গা ক্যাম্পে গিয়ে নিজেদের চোখে পরিস্থিতি দেখে সঙ্কটের গভীরতা বোঝার চেষ্টা করেছে। আজ নিজেদের অভিজ্ঞতা আর মতামত তারা আমাদের জানিয়েছে।”

শিশুদের সংগ্রহ করা খবর নিয়ে শিশুদের জন্য বিশেষায়িত ওয়েবসাইট  হ্যালোর যাত্রা শুরু হয় ২০১৩ সালের ৩১ মার্চ। সংবাদ সংগ্রহ থেকে পরিবেশন পর্যন্ত এর সব কাজেই যুক্ত রয়েছে শিশু ও কিশোর সাংবাদিকরা।

এ পর্যন্ত সাত হাজারের বেশি শিশু-কিশোর হ্যালোর সঙ্গে নানাভাবে যুক্ত হয়েছে বলে জানান এর নির্বাহী সম্পাদক।

সংবাদভিত্তিক এই ওয়েবসাইটটি পরিচালনা করছে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম। প্রশিক্ষিত শিশু সাংবাদিকরা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের অভিজ্ঞ সাংবাদিকদের তত্ত্বাবধানে মূলধারার গণমাধ্যমেও ভূমিকা রাখছে।