মেদ না কমার তিন কারণ

পেটের চর্বি ঝরাতে হলে পুরো শরীরের চর্বি ঝরাতে হবে।

লাইফস্টাইল ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 17 June 2015, 11:05 AM
Updated : 17 June 2015, 11:05 AM

স্বাস্থ্যবিষয়ক এক ওয়েবসাইটের তথ্য মতে— শুধু পেটের চর্বি নয়, শরীরের কোনো নির্দিষ্ট অংশের চর্বি কমানোর কোনো নির্দিষ্ট উপায় নেই। ব্যায়াম করার মাধ্যমে একটি নির্দিষ্ট মাংসপেশি আরও শক্তিশালী ও সুগঠিত করা সম্ভব। তবে একটি নির্দিষ্ট অংশের চর্বি কমানো সম্ভব নয়।

চর্বি কমার তিনটি ধাপ আছে। আর তা হল:

১. চর্বি অবশ্যই ঝরতে হবে চর্বির কোষ থেকে। আর চর্বি ঝরার একটি কারণ থাকতে হবে, তাই শারীরিক পরিশ্রম বাড়াতে হবে।

২. যে চর্বি ঝরে গেল তা রক্তের মাধ্যমে প্রবাহিত হয়ে সক্রিয় কোষ খুঁজবে, যেখানে তা জ্বালানি হিসেবে ব্যবহৃত হওয়ার সুযোগ পাবে।

৩. এরকম কোনো সক্রিয় কোষ খুঁজে পেলে সেখানে তা জ্বালানি হিসেবে ব্যবহৃত হবে।

আমাদের শরীরে করটিসোল, ইনসুলিন, দুই ধরনের অ্যাড্রেনালেন, পুরুষের ক্ষেত্রে টেস্টোস্টেরন, নারীদের ক্ষেত্রে ইস্ট্রোজেন এবং প্রজেস্টেরন ইত্যাদি কয়েক ধরনের হরমোন আছে যা উপরের প্রক্রিয়াগুলো ঘটতে সাহায্য করে অথবা বাধা দেয়। এ কারণে যে কোনো ধরনের ব্যায়াম শুরু করার আগে ডাক্তরের পরামর্শ নেওয়া দরকার। তিনিই জানাবেন হরমোনগুলো ওই প্রক্রিয়াগুলোর উপর কী ধরনের প্রভাব ফেলবে।   

চর্বি খরচ হওয়ার পদ্ধতি জানা থাকলেও কেনো আপনার চর্বি ঝরছে না সে প্রশ্নের উত্তর পেতে চাইলে মিলিয়ে দেখতে পারেন নিচের তিনটি কারণ।

ভুল ব্যায়াম

নিয়মিত ক্রান্চ, প্ল্যাঙ্ক বা সিট-আপ ধরণের ব্যায়াম করার পরও পেটের চর্বি কমছে না অনেকেরই। কারণ এই ব্যায়ামের মাধ্যমে আপনি চর্বি কমাচ্ছেন না, চর্বির নিচের মাংসপেশি শক্তিশালী করছেন।

এ ভুল শোধরাতে ‘কার্ডিও’ বা ‘ওয়েট ট্রেইনিং’ করা জরুরি। শুধু কার্ডিও ব্যায়াম করা চর্বি ঝরানোর জন্য যথেষ্ট না হলেও সারা শরীরের মাংসপেশির ব্যায়াম বিপাকীয় প্রক্রিয়া দ্রুত করে। ফলে প্রতিদিন ব্যায়াম না করলেও শরীরে বেশি ক্যালরি খরচ হয়। ফলে দ্রুত চর্বি কমানো সম্ভব হয়।

দুশ্চিন্তা

চর্বি না কমার একটি অন্যতম কারণ দুশ্চিন্তা। অনেকের আবার দুশ্চিন্তাই হল বাড়তি চর্বি নিয়ে। মানসিক চাপে থাকলে শরীরে নির্গত হয় ‘করটিসোল’ নামক হরমোন যা অপরিণত চর্বি কোষকে পরিণত করে তোলে। চর্বি বাড়ায় এমন খাবারের প্রতি আসক্তি হওয়ার কারণও এই হরমোন।

সমাধান: নিজেকে সময় দেওয়া। তারমানে এই নয় ব্যায়াম করা বা পরিবার কিংবা বন্ধুদের সঙ্গে সময় কাটানো। বরং একটি নির্জন স্থানে আয়েশ করে বসে থেকে শরীরকে প্রকৃত অর্থে বিশ্রাম দিতে পারলেও দুশ্চিন্তা মুক্ত হওয়া সম্ভব।

অপর্যাপ্ত ঘুম

পেটের চর্বি না কমার আরেকটি বড় কারণ অপর্যাপ্ত ঘুম।

ঘুম শরীরকে বিশ্রাম দেয়। পাশাপাশি না খাওয়া এবং ব্যায়াম না করলেও চর্বি ঝরানোর সুযোগ করে দেয়। প্রতি রাতে ৭ বা সাড়ে ৭ ঘণ্টা ঘুম না হলে আমাদের শরীর সেই সুযোগ পায় না। ফলে দিনের বেলা অবসাদগ্রস্ত করে ক্লান্তি বাড়ায়।

বেশির ভাগ মানুষেরই পেটের চর্বি না কমার জন্য কমবেশি এই তিনটি কারণই দায়ী হয়ে থাকে। তবে এর বাইরেও বিভিন্ন সমস্যা থাকতে পারে, যার জন্য স্বাস্থ্যবিশেষজ্ঞ এবং ফিটনেস বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া উচিত।

ছবি: রয়টার্স।