বিভিন্ন আকার ও ডিজাইনের অ্যাকোয়ারিয়াম পাওয়া যায়। আকৃতি ও মানভেদে এসবের দামে ভিন্নতা রয়েছে। এক্ষেত্রে এক ফুট থেকে সাড়ে ৩ ফুট অ্যাকোয়ারিয়ামের দাম পড়বে ২শ’ থেকে ৪ হাজার টাকা। এরচেয়ে আকারে বড় অ্যাকোয়ারিয়াম কিনতে চাইলে আগে থেকেই অর্ডার দিতে হবে।
ফ্রেম, মোটর, পাথর ইত্যাদিসহ আকোরিয়াম কিনতে পাওয়া যায়। চাইলে আলাদাভাবে কিনে মনের মতো করে নিজের সাধের অ্যাকোয়ারিয়াম সাজিয়ে নিতে পারেন।
আবার অনেকেই বিভিন্ন ধরনের জারে মাছ রাখতে পছন্দ করে। ৬ ইঞ্চি থেকে ১২ ইঞ্চি জারগুলোর দাম ৬০ থেকে ২শ’ টাকা।
এ প্রসঙ্গে কথা হয় কাটাবনের ‘লাভ অ্যান্ড হবি’ দোকানের মালিক মো. আব্দুল হামিদের সঙ্গে। তিনি দীর্ঘ ২০ বছর ধরে অ্যাকোয়ারিয়াম ব্যবসার সঙ্গে জড়িত।
“শখ থেকেই এ ব্যবসায় আসা। তবে আগের চেয়ে অ্যাকোয়ারিয়াম কেনার চাহিদা এখন বেশি।”
দুই থেকে আড়াই ফিট আকোয়ারিয়ামের বিক্রি তুলনামূলক বেশি বলে জানান, মো: হামিদ।
অ্যাকোয়ারিয়ামের মাছ
প্রতি জোড়া গোল্ডফিশের দাম পড়বে ৮০ থেকে ৫শ’ টাকা। লম্বাটে গড়নের এক জোড়া টাইগার শার্ক পাওয়া যাবে ৮০ থেকে ১৬০ টাকায়।
কমেড-ফিশের দাম প্রতি জোড়া ৪০ থেকে ১২০ টাকা। রূপচাঁদা মাছের মতো দেখতে মাঝারি অ্যাঞ্জেল ফিস পাওয়া যাবে ২শ’ টাকায়।
বিচিত্র রঙের ডিসকাস ফিশ কিনতে হলে গুনতে হবে ৩শ’ থেকে ৬শ’ টাকা। কিছুটা ভিন্নতা আনতে ধূসর শরীর ও গুচ্ছ-লেজের ব্ল্যাকমুর ফিশ বেছে নেওয়া যেতে পারে। দাম পড়বে ২শ’ থেকে ৫শ’ টাকা।
হালকা কালো রংয়ের রূপচাঁদা মাছ দিয়ে অ্যাকোয়ারিয়াম সাজাতে খরচ করতে হবে ৪শ’ টাকা। নীল রংয়ের একজোড়া রূপচাঁদা পাওয়া যাবে ৫শ’ টাকায়।
এছাড়া অস্কার ফিশ ৬শ’ টাকা জোড়া, মালয়েশিয়ান নাইট ফিস ২ হাজার টাকা জোড়া এবং গোল্ডেন গোল্ডফিশ পাওয়া যাবে প্রতি জোড়া ৩ হাজার টাকায়।
অ্যাকোয়ারিয়াম সাজানোর উপকরণ
প্লাস্টিকের গাছ, ম্যাট, সিলিকন-কোরাল ইত্যাদি দিয়ে আকর্ষণীয়ভাবে অ্যাকোয়ারিয়াম সাজিয়ে নেওয়া যায়।
সাজানোর জন্য প্লাস্টিকের গাছের দাম পড়বে ২০ থেকে ৮শ’ টাকা। সিলিকন দিয়ে তৈরি কোরাল পাওয়া যাবে ২শ’ থেকে আড়াইশ টাকায়। ছোট বর্গাকৃতির ঘাসের মতো দেখতে প্লাস্টিকের ম্যাট কিনতে প্রতিটির জন্য খরচ করতে হবে ৯০ টাকা। টাইলসের সিমেন্ট দিয়ে বানানো শোপিস পাওয়া যাবে তিনশ থেকে ৩ হাজার টাকায়।
অ্যাকোয়ারিয়ামের ভেতর এলইডি লাইট বসাতে হলে প্রতি ফুটে খরচ করতে হবে ১শ’ থেকে দেড়শ টাকা। এছাড়া অ্যাকোয়ারিয়ামের পেছনের গ্লাসে লাগানোর জন্য ওয়ালপেপারের দাম পড়বে ৫০ থেকে ৭০ টাকা।
প্রতি বর্গফুট মার্বেলের দাম পড়বে প্যাকেট প্রতি ১২০ টাকা। এছাড়া অ্যাকোয়ারিয়ামে পাথর ব্যবহার করে আরও আকর্ষণীয় করে তোলা যায়।
এক্ষেত্রে বিদেশি রঙিন পাথরের দাম কেজি ৩শ’ টাকা এবং দেশি পাথরের কেজি ১শ’ টাকা। অ্যাকোয়ারিয়ামের মোটর পাওয়া যাবে দেড়শ থেকে ২শ’ টাকায়।
অ্যাকোয়ারিয়ামের যত্ন
এ সম্পর্কে ‘লাভ অ্যান্ড হবি’ দোকানের কর্ণধার আব্দুল হামিদ বললেন, “আন্ডারগ্রাউন্ড ফিল্টারের উপর পাথর বিছিয়ে পানি দিতে হবে। পানি দেওয়ার দুই থেকে তিন দিন পর মাছ রাখলে ভালো হয়।”
এক্ষেত্রে ১৫ দিন পর অ্যাকোয়ারিয়ামে রাখা পানির এক তৃতীয়াংশ এবং এক মাস পর পুরো পানি পরিবর্তন করতে হবে। মাছকে খাবার দেওয়ার ১৫ মিনিটের মধ্যে খাবার শেষ হয়ে যাবে এমন পরিমাণ খাবার দিতে হবে। বেশি খাবার দিলে মাছ মরে যেতে পারে। এক্ষেত্রে খাবার দেওয়ার আগে অভিজ্ঞ ব্যক্তির পরামর্শ নিতে হবে।
রাজধানীর কাঁটাবনসহ বিভিন্ন এলাকায় পাওয়া যায় বৈচিত্র্যময় অ্যাকোয়ারিয়াম। শহরের কৃত্রিমতার ভীড়ে স্বল্প পরিসরে প্রাকৃতিক আবহ তৈরি করে অন্দরসজ্জায় ভিন্নতা আনতে সাহায্য করে রঙিন মাছে ভরা অ্যাকোয়ারিয়াম।
ছবিঃ ফুয়াদ তানভীর অমি।