লবণের ম্যাগনেসিয়াম, ক্যালসিয়াম, সোডিয়াম এবং পটাসিয়াম ত্বকের সুস্বাস্থ্যের জন্য দারুণ কার্যকর। শুষ্ক ও মলীন ত্বক প্রাণবন্ত করে তুলতে জুরি নেই। তাই দৈনিক রূপচর্চায় লবণের ব্যবহার ত্বক সুস্থ রাখতে সাহয্য করে।
Published : 24 Oct 2014, 05:02 PM
সামুদ্রিক লবণ দিয়ে নানানভাবেই রূপচর্চা করার যায়। একটি সৌন্দর্য বিষয়ক ওয়েবসাইটের প্রতিবেদনে এমনি কিছু কৌশল তুলে ধরা হয়।
লবণ ও মধুর মাস্ক
ত্বকের প্রদাহ দূর করতে লবণ এবং মধুর মিশ্রণ একটি কার্যকরী প্যাক। দুই টেবিল-চামচ লবণের সঙ্গে চার টেবিল-চামচ মধু মিশিয়ে একটি ঘন পেস্ট তৈরি করতে হবে। মিশ্রণটি পুরো মুখে ভালো করে লাগিয়ে ১৫ মিনিট অপেক্ষা করতে হবে। কিছুটা শুকিয়ে আসলে গরম পানিতে একটি পাতলা কাপড় ভিজিয়ে অতিরিক্ত পানি চেপে নিয়ে গরম কাপড়টি মুখের উপর ৩০ সেকেন্ড চেপে ধরে হালকা হাতে ঘষে বেশি করে পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলতে হবে। এতে করে ত্বকের মৃত কোষ উঠে আসবে এবং ত্বক পরিষ্কার হবে।
তেল নিয়ন্ত্রণে লবণের টোনার
গভীরভাবে পরিষ্কারের পাশাপাশি ত্বকে তেলের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ, ত্বকে ব্যাক্টেরিয়ার সংক্রমণের হাত থেকে রক্ষা করে লবণ। একটি স্প্রে বোতলে এক টেবিল-চামচ লবণ এক আউন্স পানির সঙ্গে ভালোভাবে মিশিয়ে নিতে হবে। দিনে দুইবার চোখ এড়িয়ে ওই মিশ্রণটি মুখে স্প্রে করলে উপকার পাওয়া যাবে।
বডি স্ক্রাব
মৃতকোষ তুলে ত্বক প্রাণবন্ত করে তুলতে দারুণ কার্যকর লবণ। এক কাপের তিনভাগের একভাগ লবণের সঙ্গে আধা কাপ অলিভ অয়েল বা নারিকেল তেল ভালো করে মিশিয়ে নিতে হবে। চাইলে নিজের পছন্দের কোনও এসেনশিয়াল তেল ১০ ফোঁটা মিশ্রণের সঙ্গে মিশিয়ে নেওয়া যেতে পারে। গোসলের সময় বডি স্ক্রাবার হিসেবে ব্যবহার করা যায় এই মিশ্রণ।
ত্বক প্রাণবন্ত করতে লবণের স্ক্রাব
পরিষ্কার থাকলে কোমল হয় ত্বক। আর ত্বক সতেজ করতে দারুণ কার্যকর একটি উপাদান হল অ্যালোভেরা বা ঘৃতকুমারী। আধা কাপ লবণের সঙ্গে, কাপের তিন ভাগের এক ভাগ ঘৃতকুমারীর জেল বা রস, সমপরিমাণ পছন্দ মতো তেল এবং দশ ফোঁটা ল্যাভেন্ডার এসেনশিয়াল তেল মিশিয়ে একটি ঘন পেস্ট তৈরি করতে হবে। এই মিশ্রণ বেশি ঘন মনে হলে আরও কিছুটা তেল মিশিয়ে নেওয়া যেতে পারে। গোসলের সময় এই মিশ্রণ স্ক্রাবার হিসেবে ব্যবহার করা যায়।
চুলের খুশকি দূর করতে
মাথার ত্বকের মৃত কোষ দূর করতেও লবণ ব্যবহার করা যেতে পারে। তাছাড়া চুলে জমে থাকা অতিরিক্ত তেলও শুষে নিয়ে মাথার চামড়ায় ফাঙ্গাস সংক্রমণের হাত থেকে বাঁচায় লবণ। চুল ভাগ করে নিয়ে পুরো মাথায় ১ থেকে ২ টেবিল-চামচ লবণ ছড়িয়ে দিতে হবে। এরপর ভেজা হাতে আলতোভাবে ১০ থেকে ১৫ মিনিট পুরো মাথায় ভালো করে ম্যাসাজ করতে হবে। তারপর চুল ধুয়ে কন্ডিশনার লাগিয়ে নিতে হবে।
দাঁত চকচকে করতে
ভালো টুথপেস্ট ব্যবহার করা ও নিয়ম করে মাজার পরও দাঁতে হলদে দাগ হয়। এক টেবিল-চামচ লবণের সঙ্গে দুই টেবিল-চামচ বেকিং পাউডার মিশিয়ে নিন। একটি ভেজা ব্রাশে মাখিয়ে এই মিশ্রণ দিয়ে মাজলে দাঁত হবে ঝকঝকে সাদা। চাইলে টুথপেস্টের উপরেও এই মিশ্রণ ছড়িয়ে ব্যবহার করা যায়।
মাউথ ওয়াশ
মুখে গন্ধ সৃষ্টিকারী ব্যাক্টেরিয়া মেরে মুখের দুর্গন্ধ দূর করতে সাহায্য করে লবণ। এক কাপের তিনভাগের একভাগ পানিতে আধা টেবিল-চামচ লবণ এবং আধা চামচ বেকিং সোডা মিশিয়ে ভালোভাবে মিশিয়ে নিতে হবে। এই মিশ্রণ দিয়ে কুলিকুচি করলে ভালো মাউথ ওয়াশ হিসেবে কাজ করবে।
নখ উজ্জ্বল করতে
এক চা-চামচ লবণের সঙ্গে সমপরিমাণ বেকিং সোডা, ১ চা-চামচ লেবুর রস আধা কাপ কুসুম গরম পানিতে মিশিয়ে ছোট একটি পাত্রে নিয়ে ১০ মিনিট নখ ভিজিয়ে রাখতে হবে। এরপর নরম কোনও ব্রাশ দিয়ে নখ ঘষে পরিষ্কার করে নিতে হবে। এতে নখ পরিষ্কার ও চকচকে হবে। এরপর হাত ধুয়ে যে কোনও ময়েশ্চারাইজার ক্রিম লাগিয়ে নিতে হবে।