রঙিন করি নখ

একটা সময় ছিল যখন নখ রাঙাতে লাল, গোলাপি আর কমলা রংয়ের নেইল পলিশ বেশি ব্যবহার করা হত। তবে নখ রাঙাতে রং সীমানা অতিক্রম করেছে। এখন পোশাকের সঙ্গে মিলিয়ে হাত-পায়ের নখে নীল, সবুজ, রেডিয়াম কালার এমন কি কালো-সাদা রংও শোভা পায়।

ইরা ডি.কস্তাবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 22 Oct 2013, 02:45 AM
Updated : 22 Oct 2013, 12:17 PM

রাঙানোর পাশাপাশি নখ ও হাতের যত্নের দিকেও এখন অনেকেই বেশ সচেতন। বাজারেও রয়েছে নানান ব্র্যান্ডের এবং বিভিন্ন দামের নেইল পলিশের সমাহার।

তবে নখ রাঙানোর আগে এবং পরে বেশ কিছু বিষয় লক্ষ রাখতে হয়। আর সেই বিষয়গুলি নিয়েই বলেছেন প্রিয়াংকা’স অ্যারোমা থেরাপি অ্যান্ড স্পা’র কর্ণধার অ্যারোমা থেরাপিস্ট শিবানী দে।

নেইল পলিশ লাগানোর আগেই বাছাই করতে হবে নেইল পলিশের রং। প্রথমেই নিজের ত্বকের সঙ্গে কী ধরনের রং মানানসই সে বিষয়ে সচেতন থাকতে হবে। উজ্জ্বল ত্বকে প্রায় সব ধরনের রংই মানিয়ে যায়। তবে কিছুটা শ্যামলা রংয়ের ক্ষেত্রে বেশি হাইলাইট বা উজ্জ্বল রং বেছে না নেওয়াই ভালো।

এরপরই আসে জামার রং। বর্তমানে পোশাকের রংয়ের সঙ্গে মিল করার জন্য নেইল পলিশ পাওয়া যায়। লাল, গোলাপি, কমলা, খয়েরি, বেগুনি ছাড়াও নীল, হলুদ, সবুজ, রেডিয়াম কালার এবং সাদা-কালো নেইল পলিশ পাওয়া যাচ্ছে যে কোনো কসমেটিকসের দোকানেই। তবে নীল, সবুজ, হলুদ কারও পছন্দের তালিকায় না থাকলে পোশাকের রংয়ের সঙ্গে মানিয়ে যায় এমন যে কোনো রংই নখে ব্যবহার করা যায়।

নখের রং নির্বাচনের আগে কোথায় যাচ্ছেন, অবশ্যই সে বিষয়টি মাথায় রাখবেন। পার্টি বা অনুষ্ঠান হলে ভিন্ন বিষয়। আর অফিস, কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয়ে বেশি হাইলাইটিং বা উজ্জ্বল রং ব্যবহার না করাই ভালো।

নতুন নেইল পলিশ ব্যবহারের আগে অবশ্যই আগের নেইল পলিশ ভালো করে তুলে ফেলতে হবে। এর জন্য প্রথমে ভালো রিমুভার তুলায় ভিজিয়ে নখে ঘষে রং তুলুন। তারপর হালকা গরম পানিতে শ্যাম্পু মিশিয়ে হাত ধুয়ে ফেলুন। হাত শুকিয়ে তবেই নতুন করে নেইল পলিশ লাগাতে হবে। সবসময় ভালো ব্র্যান্ডের নেইল পলিশ বেছে নিন। যা বেশি টেকসই হওয়ার পাশাপাশি নখেরও ক্ষতি করবে না।

অনেক সময় নখে সাদা সাদা দাগ পড়ে। এগুলোর অন্যতম একটি কারণ হতে পারে নেইল পলিশের কেমিকল। এই কারণেও ভালো ব্র্যান্ডের নেইল পলিশ বেছে নেওয়া জরুরি। একটানা নেইল পলিশ ব্যবহার করবেন না। নতুন নেইল পলিশ ব্যবহারের আগে অন্তত কিছুদিন নেইল পলিশ ছাড়াই থাকুন।

অনেকের ক্ষেত্রে দেখা যায়, নখ কিছুটা বড় হলেই ভেঙে যায় বা ফেটে যায়। এর প্রধান কারণ শরীরে ক্যালসিয়ামের অভাব। তাই ক্যালসিয়াম-জাতীয় খাবার এবং ‘ভিটামিন সি’ যুক্ত ফলমূল খেতে হবে। বেশিক্ষণ পানি নিয়ে কাজ করার পর নারিকেল তেল, অলিভ অয়েল, আমন্ড অয়েল একসঙ্গে মিশিয়ে, এর মধ্যে কিছুক্ষণ নখ ভিজিয়ে রাখুন। এরপর হাত ধুয়ে লোশন লাগিয়ে রাখলেও উপকার পাওয়া যায়।

সপ্তাহে একদিন অন্তত হাত এবং নখ পরিষ্কার করা উচিত। এর জন্য ভালো কোনো পার্লারে গিয়ে মেডিকিউর করানো যায়। আবার এ কাজটি ঘরে বসেই চট জলদি সেরে নিতে পারেন। হালকা গরম পানিতে কিছুটা লেবুর রস ও লবণ গুলিয়ে এর মধ্যে শ্যাম্পু মিশিয়ে হাত কিছুক্ষণ ভিজিয়ে রাখুন। তারপর হাত পরিষ্কারের ব্রাশ দিয়ে হাত এবং নখের গোড়ায় ঘষে পরিষ্কার করতে হবে।

অনেক সময় কিউটিকলস বা মড়া চামড়া নখের উপর জমে। এই সমস্যা থাকলে কিউটিকলস কাটার দিয়ে কেটে পরিষ্কার করে হাতে লোশন লাগিয়ে নিতে হবে। সপ্তাহে অন্তত ১ দিন এই পদ্ধতিতে হাত পরিষ্কার করলেই যথেষ্ট।

দরদাম

মার্কেটে এখন বিভিন্ন ধরনের, বিভিন্ন দামের এবং ভিন্ন ভিন্ন ব্র্যান্ডের নেইল পলিশ পাওয়া যাচ্ছে। সেখান থেকে নিজের পছন্দসই রং বেছে নেওয়াটাই আসল। ছোট কসমেটিকসের দোকান থেকে শুরু করে সুপারশপগুলোতে রয়েছে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের নেইল পলিশ। এখন রংয়ের পাশাপাশি নেইল পলিশের ধরনেও রয়েছে পার্থক্য। কোনোটা বেশি চকচকে, কোনোটা আবার ম্যাট। আবার রেডিয়াম কালার এবং ম্যাগনেটিক নেইল পলিশও রয়েছে বাজারে।

সহজলভ্য ব্র্যান্ডগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল জ্যাকলিন, ফারমাসি, জরডানা, লা ফেম, ফ্লোরমার, ইজাবেল, সি আর, ভিওভি এবং আরও ভিন্ন ভিন্ন নামের ব্র্যান্ড। এই নেইল পলিশগুলির দামেও রয়েছে রকমভেদ। ভিওভি-এর প্রতিটি নেইল পলিশের দাম ৪০ থেকে ৫০ টাকা। জ্যাকলিন এবং ফারমসি’র দাম ১০০ থেকে ১২০ টাকা।

ফ্লোরমারের বিভিন্ন ধরনের নেইল পলিশ রয়েছে। প্রিটি, সুপারশাইন, ম্যাট, নিওন, নেইল আর্ট, ম্যাগনেটিক এবং গ্রাফিটি। রকমভেদে দাম ৯০ টাকা থেকে ২৮০ টাকা।

বিদেশি ভালো ব্র্যান্ডের নেইল পলিশ কিনতে আরও কিছু বেশি টাকা খরচ হতে পারে। তবে গুণগতমানের দিক থেকে সেগুলো বেশ ভালো। সেই সব ব্র্যান্ডের মধ্যে রয়েছে ম্যাক, এলফ ও লরিয়াল।

ছবি কৃতজ্ঞতায় : সাকিব-উল-ইসলাম, নাবিলা ফিরোজ স্বর্ণা ও ইরা ডি.কস্তা