মজাদার তরকারি

মৌসুমি সবজি আর ফলের মধ্যেই থাকে ঋতুভিত্তিক রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতা। এখন গরম আবার বৃষ্টি, এই মিশ্র আবহাওয়ায় একটুতেই জ্বর, কাশি, সর্দি লেগেই থাকে। তাই এখন গ্রীষ্মকালীন সবজি খাওয়া শরীরের জন্য ভালো। আবার প্রতিদিন একই রকম তরকারি খেতেও  ভালো লাগে না। সেই দিকে লক্ষ্য রেখে রন্ধনশিল্পী ফৌজিয়া  খান  মঞ্জু  দিয়েছেন ভিন্ন স্বাদের সুস্বাদু খাবারের রেসিপি।

প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 15 May 2013, 06:09 AM
Updated : 15 May 2013, 06:13 AM
ডাল-পাটশাকের মিশেল

উপকরণ : তিতা পাটশাক ৪ আঁটি। বুটের ডাল ২৫০ গ্রাম। তেজপাতা ৪টা। আদা বাটা ১ চা চামচ। জিরা বাটা ১ চা-চামচ। জিরা গুঁড়া ১ চা-চামচ। ধনিয়া গুঁড়া আধা চা-চামচ। রসুন ২টা। পেঁয়াজ ৩টা। হলুদ  আধা চা-চামচ। তেল  ৪ টেবিল-চামচ। মরিচ ৪/৫টা। লবণ স্বাদমতো।

প্রণালী : ডাল ধুয়ে পানিতে ভিজিয়ে রাখতে হবে। ভাজা জিরা বাদে বাকি সব মসলা তেলে ভুনতে হবে, সঙ্গে মেশাতে হবে ১ কাপ পানি।  মসলা তেলের উপর আসলে ডাল দিয়ে দিন। ডাল ভুনে ৪ কাপ পানি দিয়ে জ্বাল বাড়িয়ে সিদ্ধ করুন। পানি টেনে গিয়ে ডাল ভাজা ভাজা হয়ে আসলে পাটশাক দিয়ে দিন। এরপর হালকা করে নাড়াতে থাকুন। অল্প আঁচে রাখতে হবে, তবে ঢাকা লাগবে না। এভাবে ৫ মিনিট রেখে জিরার গুঁড়া ছিটিয়ে নামিয়ে ফেলতে হবে।

কাঁঠালের মাংস

উপকরণ : ২ কেজি বা বড় আকারের ১টা কাঁচা কাঁঠাল। নারিকেল বাটা, আদা বাটা, জিরা বাটা ২ টেবিল-চামচ। ভাজা জিরা ১ টেবিল-চামচ। হলুদ ১ চা-চামচ। ধনিয়া গুঁড়া ১ চা-চামচ। মাঝারি আকারের রসুন ৪টি। ৫টা বড় আকারের পেঁয়াজ। এলাচ ৬টা। দারুচিনি ৬ টুকরা। তেজপাতা ৫টা। তেল ১২৫ গ্রাম। ঘি ২ টেবিল-চামচ। মরিচ ৮ থেকে ১০টা। লবণ স্বাদমতো।

প্রণালী : কাঁঠালকে লম্বাভাবে চার ভাগ করে কেটে উপরের চোকলাটা ফেলে দিন। এরপর মাংসের টুকরার মতো দানাসহ কাটুন। নারিকেল ভালো করে মিহিভাবে বেটে নিতে হবে। ঘি  আর ভাজা জিরা ছাড়া বাকি সব মসলা তেলের মধ্যে কষান। সঙ্গে ১ কাপ পানি দিতে হবে। মসলা তেলের উপর আসলে নারিকেল বাটা সবটুকু দিয়ে কষাতে থাকুন। নারিকেলসহ মসলা তেলের উপর আসল কিনা খেয়াল করে তাতে কাঁঠালের টুকরোগুলো দিন। ২ থেকে ৩ মিনিট ভালো করে নাড়তে হবে যাতে কাঁঠালের সঙ্গে মসলাটা ভালো করে মিশে যায়। এরপর ৩ কাপ পানি দিয়ে আবার নাড়তে থাকুন। জ্বাল একটু বাড়িয়ে ৫ মিনিট ঢেকে রাখতে হবে। এবার জ্বাল কমিয়ে ১০ থেকে ১৫ মিনিট রাখুন। এই সময় বারবার নেড়ে দিতে হবে। কাঁঠালের টুকরোগুলো নরম হয়ে তেলের উপর আসলে, জিরা গুঁড়া আর ঘি দিয়ে নামিয়ে ফেলতে হবে।

মাছ-উস্তে

উপকরণ: উস্তে ২৫০ গ্রাম। যে কোনো মাছ ২৫০ গ্রাম (বড় আকারের মাছ)। আদা বাটা আধা চা-চামচ। হলুদ  আধা চা-চামচ। জিরা গুঁড়া ১ চা-চামচ। রসুন ৩টা। পেঁয়াজ  ৫টা। কাঁচা মরিচ ৫টা। তেল ৩ টেবিল-চামচ। লবণ স্বাদমতো।

প্রাণালী : জিরা বাদে সব মসলা আর তেল দিয়ে মাছ হাত দিয়ে মাখিয়ে উঠিয়ে ফেলতে হবে। এরপর  মসলা চুলায় দিয়ে দিন। উস্তে লম্বা করে কেটে  মসলার মধ্যে দিন। আধা কাপ পানি দিয়ে জ্বাল বাড়িয়ে ৩ মিনিট রাখুন। জ্বাল কমিয়ে মাছের টুকরোগুলো উপর দিয়ে ছিটিয়ে দিয়ে ৫ মিনিটের জন্য ঢেকে রাখতে হবে। এরপর ঢাকনি উঠিয়ে জিরা গুঁড়া ছিটিয়ে আরও ২ মিনিট ঢেকে জ্বাল দিন। এ সময় হালকা একটু নাড়ুন। খেয়াল রাখুন মাছ যেন না ভাঙে। ২ মিনিট পর চুলা থেকে নামিয়ে ফেলুন।

পাঁচমিশালি ডাল-করলা

উপকরণ : মুগ ডাল, মসুরের ডাল, খেসারির ডাল, ছোলার ডাল, মাষকলাইয়ের ডাল- ২৫০ গ্রাম (প্রতিটি ডাল সমান মাপে মোট ২৫০ গ্রাম)। করলা আধা কেজি (বড় আকারের)। আদা বাটা ১ টেবিল-চামচ। রসুন   ৩টা মাঝারি আকারের। জিরা বাটা  ১ চা-চামচ। ভাজা জিরা ১ চা-চামচ। পেঁয়াজ বড় ৪টা। তেজপাতা ৪টা। হলুদ ১ চা-চামচ। ধনিয়া ১ চা-চামচ। পাঁচফোড়ন ১ টেবিল-চামচ। তেল ৪ টেবিল-চামচ। চিনি ১ চা-চামচ। ঘি ১ টেবিল-চামচ। কাঁচা মরিচ ৮টা। লবণ স্বাদমতো।

প্রণালী : পাঁচ পদের ডাল একসঙ্গে ভাজতে হবে তেল ছাড়া। এরপর ধুয়ে এক ঘণ্টা ভিজিয়ে রাখুন। করলা চাকচাক করে মোটা আকারে কাটুন।  ঘি, চিনি, পাঁচফোড়ন, ভাজা জিরা বাদে বাকি সব মসলা তেলে ভাজতে হবে। ভাজার সময় ১ কাপ পানি দিয়ে ভুনতে হবে। মসলা তেলের উপর আসলে, ডাল থেকে পানি ঝরিয়ে মসলার মধ্যে দিয়ে দিন। ডাল মসলা ভালো করে ভুনতে হবে। এরপর ৬ বা ৮ কাপ পানি ডাল মসলার মধ্যে দিয়ে জ্বাল বাড়িয়ে ঢেকে রাখুন ৫ মিনিট। একটু পরপর ঢাকনা উঠিয়ে দেখুন ডাল সিদ্ধ হল কি না। সিদ্ধ হলে করলাগুলো দিয়ে আরও ৫ মিনিট রাধুন। চিনি মিশিয়ে নাড়া দিতে হবে। ভাজা জিরা উপর দিয়ে ছিটিয়ে দিন। তারপর আবার ৫ মিনিটের জন্য ঢেকে দিতে হবে। এই সময় পাঁচফোড়ন, ঘি দিয়ে ভাজতে হবে অন্য একটি পাত্রে। ডাল ঘন হল কি না আর করলা সিদ্ধ হল কি না সেটা দেখতে হবে। যদি হয়ে থাকে তবে উপর দিয়ে ঘিয়ে ভাঁজা পাঁচফোড়ন ঢেলে দিয়ে ঢেকে ২ মিনিট রেখে চুলা থেকে নামিয়ে নিন।

সমন্বয়কারী: ইশরাত জাহান মৌরি