বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী এই রন্ধনশিল্পী যে ঢাকায় আসছেন, সেটি তার বন্ধু, ফলোয়াররা জেনেছিলেন তার ফেসবুক পোস্ট থেকে। গত ১৬ মার্চ সিঙ্গাপুরের চাঙ্গি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বসে ফেইসবুকে কিশোয়ার জানান, তার গন্তব্য ঢাকা।
এর পর বৃহস্পতিবারের পোস্টেই দেখা যায় ঢাকায় তার সকালের নাশতার বেশ কিছু খাবারের ছবি; সেখানেই থামেননি কিশোয়ার, জিভে জল আনা কয়েক ধরনের মিষ্টির ছবি দিয়ে ভোজনরসিকদের উসকে দিয়েছেন।
তিন মাস ধরে চলা ওই প্রতিযোগিতায় নানা পর্বে ‘মাছের ঝোল’, আলু ভর্তা’, পান্তা ভাত’, ‘চিংড়ি ভর্তা’, ‘মাংসের কালাভুনা’, ‘ফুচকা’, ‘চটপটি’র মতো বাঙালি খাবার রান্না করে বাংলাদেশে ও ভারতের দর্শকদের হৃদয়ে জায়গা করে নেন কিশোয়ার।
চূড়ান্ত পর্বে তিনি ‘পান্তা ভাত’ ও ‘আলু ভর্তা’ পরিবেশন করে বিচারকদের মন জয় করে জিতে নেন দ্বিতীয় রানার আপ'র পুরস্কার।
ঢাকায় এসে বৃহস্পতিবার সকালে বিক্রমপুরের মেয়ে কিশোয়ারের নাশতায় ছিল চালের আটার রুটি, আলু ভাজি, পরোটা, চিকেন কারি, কোরনো নারকেল আর নারকেলের ফোপরা, রসমালাই, আনারসের জুস আর কলা।
সেদিন দুপুরে কাজের ফাঁকে তোলা ছবিতে বোঝা যায় মিষ্টির নানা পদও চেখে দেখেছেন কিশোয়ার।
ফেইসবুকে তিনি লিখেছেন, শহরে ঘুরে ঘুরে মজাদার সব দেশীয় খাবার চেখে দেখার জন্য তার আর তর সইছে না।
ঢাকার দুর্জয় ফাউন্ডেশনের আমন্ত্রণে তাদের দপ্তরেও গিয়েছিলেন কিশোয়ার। অলাভজনক এই প্রতিষ্ঠানটি ২০০৮ সাল থেকে দক্ষিণ এশিয়ার শিল্প নিয়ে কাজ করছে। সেখানে সবার সঙ্গে তোলা ছবিও ফেইসবুকে দিয়েছেন কিশোয়ার।
তার আগ্রহ আছে ঢাকার স্ট্রিট ফুডেও। কিছুদিন আগে বন্ধু সাইমনকে বাসায় দাওয়াত দিয়ে একেবারে দেশি কায়দায় খবরের কাগজে মুড়িয়ে 'মুড়িমাখা' খাইয়েছে। সেই মুড়িমাখার পোস্টের হ্যাশট্যাগ ছিল ‘ঢাকা’, ‘স্ট্রিট ফুড ’।
অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী কামরুল হোসাইন চৌধুরী ও লায়লা চৌধুরীর মেয়ে কিশোয়ারের জন্ম ও বেড়ে ওঠা মেলবোর্নেই। বাংলাদেশ ও জার্মানিতে কয়েক বছর কাটিয়েছেন তিনি।
মেলবোর্নের মোনাশ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাণিজ্যে স্নাতক শেষ করে বিজনেস ভেভেলপার হিসেবে পেশাজীবন শুরু করেন কিশোয়ার। স্বামী এহতেশাম নেওয়াজ আর দুই সন্তানকে নিয়ে তার সংসার।
মালয়েশীয় বংশোদ্ভূত অস্ট্রেলীয় মাস্টারশেফ ফো লিং ইয়োকে দেখে কিশোয়ার অনুপ্রাণিত হন রন্ধন শিল্পে। বাংলাদেশের রান্না নিয়ে একটি বই লেখার ইচ্ছাও তার আছে।