ইভেন্ট লজিস্টিকস সাপোর্ট ফোরাম অব বাংলাদেশ এর আত্মপ্রকাশ

দেশের পাঁচ লাখ ইভেন্ট লজিস্টিক কর্মীর জীবন ও জীবিকা সুরক্ষার দাবিতে গঠিত হল এই ফোরাম।

লাইফস্টাইল ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 11 May 2020, 11:47 AM
Updated : 11 May 2020, 11:47 AM

মহামারীর এই কঠিন বাস্তবতার নিরিখে নিজেদের প্রাতিষ্ঠানিক পরিচয় ও অস্তিত্ব রক্ষায় ইভেন্ট লজিস্টিকস সাপোর্ট ফোরাম অফ বাংলাদেশ (ইএলএসএফওবি) নামে নতুন একটি ফোরাম গড়ে তুলেছে বাংলাদেশে ইভেন্ট লজিস্টিকস সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর তিনটি সংগঠন- ভিজুয়াল ইকুইপমেন্ট সার্ভিস প্রোভাইডারস ব্যবসায়ী সমবায় সমিতি লিমিটেড, লাইট অ্যান্ড সাউন্ড বিজনেস কো-অপারেটিভ অ্যাসোসিয়েশন লিমিটেড এবং বাংলাদেশ সাউন্ড লাইট অ্যান্ড লজিস্টিকস রেন্টাল কো-অপারেটিভ।

নবগঠিত এ ফোরামের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, এর আহ্বায়ক মো. ফুয়াদ শিহাব, সদস্য সচিব মো. রফিকুল ইসলাম, অর্থ সচিব এ জেড মামুনসহ মোট ২৭ জনের একটি কার্যনির্বাহী কমিটি রয়েছে।

বছরভর সরকারি-বেসরকারি বিবিধ অনুষ্ঠান আয়োজনের নেপথ্যে নিবেদিতপ্রাণ ছয় হাজারের বেশি ইভেন্ট লজিস্টিকস সহায়তা প্রতিষ্ঠান রয়েছে দেশে। যার সঙ্গে সক্রিয়ভাবে জড়িয়ে রয়েছেন লাইট-অ্যান্ড-সাউন্ড, এলইডি-ডিসপ্লে, ভিজুয়াল, জেনারেটর, ক্যামেরা, মঞ্চনির্মাণ, সাজসজ্জা, ডেকোরেশনসহ বিভিন্ন খাতে বহু কর্মী। কোভিড-১৯ এর প্রাদুর্ভাবে বিশ্বব্যাপী অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও আচমকাই বন্ধ হয়ে গেছে দেশব্যাপী মুজিব শতবর্ষ উদযাপনের অনুষ্ঠান আয়োজনসহ এ শিল্প সংশ্লিষ্ট সব ধরনের কার্যক্রম।

ফলে রাতারাতি নিদারুণ বিপর্যয়ের মধ্যে পড়ে গেছে এসব উদ্যোগ, পায়ের নিচের মাটি সরে গেছে উদ্যোগসংশ্লিষ্ট কর্মীর পরিবার পরিজনের।     

আত্মপ্রকাশ আয়োজনে ফোরামের আহবায়ক মোঃ ফুয়াদ শিহাব বলেন, মহান ৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ভাষণের সাথে জড়িয়ে গিয়ে আজ ইতিহাস হয়েছে কলরেডি, শব্দ প্রক্ষেপণ যন্ত্র সরবরাহকারী। একই ধারাবাহিকতায় আমরাও রাষ্ট্রীয়, শিল্প-বাণিজ্য-সংস্কৃতি ও অন্যান্য মন্ত্রণালয়সহ সরকারি, আধা-সরকারি ও স্বায়ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন অনুষ্ঠান আয়োজনের পাশাপাশি বিয়ে, ধর্মীয়, সামাজিক ও বিভিন্ন সভা-সেমিনারসহ রাজনৈতিক-অরাজনৈতিক অনুষ্ঠান আয়োজনের দায়িত্ব বরাবর পালন করে আসছি। আমাদের ঘাম ঝরানো হাড়ভাঙা পরিশ্রম রাতের আঁধারেই শুরু হয়ে আঁধারেই বিলীন হয়ে যায়। দিনের আলোয় প্রকাশ হয় কেবল তার সৃষ্টি। ফলে বিগত কয়েক যুগেও আমাদের এই একনিষ্ঠ অবদান সেইভাবে নজরে আসেনি সরকার কিংবা শীর্ষ মহলের।

চলতি বছরও মুজিব শতবর্ষ উদযাপনের প্রস্তুতিমূলক আয়োজনের অংশ হিসেবে বিগত বছর থেকেই আমরা বিভিন্ন খাত- যেমন, এলইডি ডিসপ্লে, স্পিকার, ট্রাস (স্টেজ ইকুইপমেন্ট) ও গোডাউনসহ বিভিন্ন ধরনের জিনিসপত্রের জন্য ভাড়াসহ আগাম বুকিং দেওয়ার পাশাপাশি অন্যান্য কেনাকাটা খাতে বিপুল বিনিয়োগ করে আসছি। কিন্তু কোভিড-১৯ এর কারণে অপ্রত্যাশিত এক ভয়াবহ ঝুঁকির মধ্যে পড়ে গেছে এই বিপুল প্রস্তুতি। হাত-পা গুটিয়ে বসে থাকতে বাধ্য হওয়ায় সর্বস্বান্ত হওয়ার মুখে চলে গেছে ইভেন্ট লজিস্টিকস সহায়তা প্রদানকারী এসব প্রতিষ্ঠান।

দুঃখজনক হলেও সত্যি যে আমাদের এই খাতটির বিকাশ তুলনামূলক নতুন, ফলে বাংলাদেশের শিল্প তালিকায় ইতোমধ্যেই বিরাজমান কোনো ক্যাটাগরিতে সেটি না পড়ায় বর্তমান পরিস্থিতিতে এই শিল্পটির টিকে থাকা প্রায় অসম্ভব হয়ে দাঁড়িয়েছে। স্বপরিচয়ে তালিকাভুক্ত হতে না পারার কারণে সরবরাহকারী হিসেবে বা ডেকোরেটর সার্ভিস হিসেবে আমাদের লাইসেন্স নিতে হয়, যা এই শিল্পের সঠিক পরিচায়ক হিসেবে আদৌ যথার্থ নয়। অথচ এই খাতটি হতে পারে একটি বিরাট ও সম্ভাবনাময় শিল্প। সরকারি তালিকাভুক্ত হতে না পারায় আমরা কোনো ব্যাংকঋণের সুবিধাও পাচ্ছি না। পাচ্ছি না কোনো সরকারী অনুদান বা প্রনোদনা। এসব কারণে আমাদের চাওয়া, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়, যেমন, শিল্প, বাণিজ্য ও সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের স্বীকৃতি ও ব্যবসায়ী সংগঠন থেকে প্রাতিষ্ঠানিক স্বীকৃতি দেয়া হোক। একটি স্বতন্ত্র শিল্প হিসেবে দেশের শিল্পনীতির তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়ে সুনির্দিষ্ট কাঠামোয় ট্রেড লাইসেন্স পাওয়ার সুযোগ দেয়া হোক।

টিকে থাকার স্বার্থেই আমরা এ মুহূর্তে সরকারের শীর্ষ পর্যায় ও সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়সহ মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর গভীর দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। আমরা আগেও অনুষ্ঠান আয়োজন করেছি, আগামীতেও করব। কিন্তু এই মুহূর্তে আমরা পাঁচ লাখের বেশি কর্মী পুরোপুরি কাজহারা এবং আয়শূন্য। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কোভিড-১৯ এর কারণে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের জন্য বিভিন্ন ধরনের প্রণোদনা ঘোষণা করেছেন। এসব প্রণোদনা সহায়তা থেকেও আমরা যাতে বঞ্চিত না হই, একইসঙ্গে সে বিষয়ে কর্তৃপক্ষের বিবেচনাপ্রসূত সজাগ দৃষ্টি রাখারও আহবান জানাচ্ছি।