পুরুষের শীতের বাজার

শাল, জ্যাকেট কিংবা হুডি; অনুষ্ঠানে ব্লেজার কিংবা স্যুট আর পায়ের জন্য জিন্স, কিডস ও লোফার- পুরুষের সাজ-পোশাকে নানারূপতা যেন শীতকালে প্রকাশ পায়।

লাইফস্টাইল ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 15 Jan 2019, 08:59 AM
Updated : 15 Jan 2019, 09:00 AM

কারণ গায়ে শার্ট বা টি-শার্ট, পরনে জিন্স, গ্যাবার্ডিন কিংবা সুতি কাপড়ের প্যান্ট- যাই পরা হোক না গ্রীষ্মকালে, ঘেমে নেয়ে নাজেহাল হতেই হয়।

শীতে যেহেতু ঘাম হওয়ার সুযোগ নেই, তাই প্রিয় পোশাকটা সারাদিন পরও দুর্গন্ধহীন থাকে। সবমিলিয়ে শীতকাল যেন পুরুষের ঠাঁটবাট দেখানোর ঋতু।

তাই জেনে নিন এবারের শীতে কাপড়ের বাজারের হালচাল।

ছবি সৌজন্যে: টুয়েল্ভ

এ বছরে শীতের কাপড়ের বাজারে ছেয়ে আছে কৃত্রিম চামড়া জ্যাকেট ও প্যারাসুট কাপড়ে তৈরি নানান ধরনের শীতের কাপড়ে। আর মানুষের গায়েও এগুলোর দেখা মিলছে অহরহ।

সুতি কিংবা গ্যাবার্ডিন কাপড়ের জ্যাকেট এবং হুডি চোখে পড়ছে কম। তবে স্যুট ও ব্লেজার তার পুরানো অবস্থাতেই বিদ্যমান।

অফিসের পার্টি কিংবা পারিবারিক উৎসবে স্যুটের জায়গা দখল করা যেন অসম্ভব। তবে অনুষ্ঠানে পাঞ্জাবির সঙ্গে কোটি পরার চলটাও রয়েছে দাপটের সঙ্গেই।

প্যারাসুট কাপড়ের শীতের কাপড়

ছবি সৌজন্যে: ক্যাটস আই।

শীতের ঠাণ্ডা বাতাস থেকে বাঁচতে ‘উইন্ডব্রেকার’ হিসেবে প্রধানত ব্যবহার হয় প্যারাসুট কাপড়ের পাতলা জ্যাকেট। এগুলো শীত থেকে বাঁচায় না, শুধু বাতাস গায়ে লাগতে দেয় না। একই কাপড়ের আস্তরের ভেতরে এক প্রস্থ উলের কাপড় জুড়ে দিয়ে বানানো জ্যাকেটগুলো বাতাস থেকেও বাঁচায়, শরীরও গরম থাকে।

এই জ্যাকেটগুলোর মধ্যে মোটা পাতলা বিভিন্ন ধরন থাকে। কিছু জ্যাকেটের সঙ্গে হুডিও আছে।

মানভেদে এগুলোর দাম পড়বে ৩শ’ থেকে ২ হাজার টাকার মধ্যে।

রাজধানীর নিউমার্কেট ও বঙ্গবাজারে এই জ্যাকেটগুলো সবচাইতে বেশি পরিমাণে চোখে পড়বে। তবে সব মার্কেটেই এদের অস্তিত্ব বিদ্যমান।

ব্র্যান্ডের ফ্যাশন হাউজগুলোতে প্যারাসুট কাপড়ের জ্যাকেট কিনতে গুনতে হবে ১ হাজার থেকে ৩ হাজার টাকা।

ছবি সৌজন্যে: ক্যাটস আই।

এছাড়াও উইন্ডব্রেকার কিনতে সাইকেল ও মোটরসাইকেলের অনুসঙ্গের দোকানগুলোও ঘুরে দেখা যেতে পারে।

কাপড়ের হুডি

এ বছর মার্কেটগুলোতে হুডির সমারহ কম হলেও কমবেশি আছে। ৫শ’ থেকে ১ হাজার ৫শ’ টাকায় মোটামুটি ভালোমানের একটি হুডি নিজের করে নিতে পারা যাবে।

বিভিন্ন রং ও ডিজাইনের হুডি মিলবে বাজারে। কোনোটার সামনে চেইন তো কোনোটার বোতাম, কোনোটাতে আবার কিছুই নেই। হালকা শীতের জন্য হুডি বেশ কার্যকর।

সঙ্গে মানানসই একটি মোটা কাপড়ের টি-শার্ট কিংবা শার্ট পরে অনায়াসেই ঘরের বাইরে কাজ সেরে ফেলতে পারবেন। সব মার্কেটেই কমবেশি হুডি পাওয়া যাচ্ছে।

জিন্সের জ্যাকেট

ছবি সৌজন্যে: ক্যাটস আই।

পুরানো দিনের ফ্যাশন হলেও একেবারে হারিয়ে যায়নি এই জ্যাকেটগুলো।

ভালোমানের একটি জিন্সের জ্যাকেট কনকনে শীতকেও হার মানাতে যথেষ্ট।

ঢাকা কলেজের উল্টাপাশের নূরজাহান মার্কেটে জিন্সের জ্যাকেটের সবচাইতে বেশি ধরন পাওয়া যাবে।

দাম ১ হাজার ৫শ’ থেকে ৩ হাজার হাজার টাকা।

এছাড়াও বিভিন্ন এলাকায় গড়ে উঠেছে অসংখ্য এক্সপোর্টের পোশাক বিক্রয়কেন্দ্র। এই দোকানগুলো তুলনামূলক কম দামে ভালোমানের জিন্সের জ্যাকেট পাওয়া যাচ্ছে।

বেইলি রোড, মোহাম্মদপুরের রিং রোড এবং বসুন্ধরা সিটির ভেতরের দিকের দোকানগুলোতে জিন্সের জ্যাকেটের দেখা মিলবে।

চামড়া ও কৃত্রিম চামড়ার জ্যাকেট

ছবি সৌজন্যে: জেন্টেল পার্ক।

চামড়ার জ্যাকেট বানিয়ে নিতে চাইলে চলে আসবে হবে জিগাতলার হাজারিবাগ এলাকায়। ট্যানারি এলাকার আশপাশ থেকে চামড়া কিনে এখানেই বানাতে পারেন কিংবা আপনার পছন্দের টেইলার্সের দোকানেও বানাতে পারেন। চামড়ার পরিমাণ এবং কেমন ডিজাইনে বানাবেন তার উপর নির্ভর করবে খরচ।

তবে সর্বনিম্ন ৫ হাজার টাকা তো গুনতে হবেই।

ছবি সৌজন্যে: কে ক্রাফট

রেডিমেইড চামড়ার জ্যাকেট কিনতে নিরাপদ পছন্দ হবে ব্র্যান্ডের চামড়ার জুতার দোকানগুলো। খরচ পড়বে ৮ হাজার থেকে ১৫ হাজার টাকা।

অপরদিকে কৃত্রিম চামড়ার জ্যাকেট পাওয়া যাচ্ছে অহরহ এবং কম দামে।

এজন্য সবচাইতে উপযুক্ত স্থান হবে বসুন্ধরা সিটি, এলিফ্যান্ট রোড ও নিউ মার্কেট।

১ হাজার থেকে ৩ হাজার টাকার মধ্যেই মোটামুটি ভালোমানের কৃত্রিম চামড়ার জ্যাকেট পাওয়া যাচ্ছে। ব্র্যান্ডের দোকানগুলো দাম আরেকটু বেশি পড়বে।

চাদর

আজিজ সুপার মার্কেট চাদর কেনার জন্য আদর্শ স্থান। ৫শ’ থেকে ১ হাজার ৫শ’ টাকার মধ্যেই নজরকাড়া চাদর কেনা যাবে। দেশীয় ব্র্যান্ডের ফ্যাশন হাউজ থেকেও এই দামেই চাদর কেনা যাবে।

এক্ষেত্রে আড়ং, দেশীদশ ও মিরপুরের বুটিক হাউজগুলো ঘুরে দেখা যেতে পারে।

স্যুট ও ব্লেজার

ক্যাজুয়াল কিংবা ফরমাল, কোট কিংবা ব্লেজার যাই চান না কেনো- মনের মতো একটি রেডিমেইড স্যুটের জন্য এলিফ্যান্ট রোডই যথেষ্ট। ব্র্যান্ডের দোকান, স্যুট বানানোর দোকান, গুলিস্তানের হকার্স মার্কেট সবখানেই স্যুটের ছড়াছড়ি।

দাম ১ হাজার থেকে ৫ হাজার পর্যন্ত যেতে পারে। বানাতে চাইলে নুন্যতম খরচ ১০ হাজার টাকা।

অন্যান্য

জ্যাকেট, সোয়েটার, কোট সবই ভারী শীতের কাপড়। এগুলো ছাড়াও পাতলা সোয়েটার, উলের টি-শার্ট, ফ্লানেল কাপড়ের শার্ট, মোটা কাপড়ের গেঞ্জি, ট্রাউজার এগুলোও শীতকালের প্রয়োজনীয় পোশাক। এজন্য মিরপুরের মার্কেটগুলো, নিউ মার্কেট, বঙ্গবাজারে ঘুরে আসলে কম খরচেই ভালোমানের জিনিস কেনা যাবে।

ভ্রাম্যমান শীতবস্ত্রের দোকান, বিশেষ করে ভ্যানে বিক্রি করা শীতের কাপড়ের দোকানগুলোও বেশ ভালোমানের পোশাক পাওয়া যায়। তবে এজন্য একটু ধৈর্য্য ধরে সময় নিয়ে খুঁজতে হবে।