খাবারে লবণ এড়িয়ে চলা অসম্ভব। তবে বেশি লবণ খাওয়ার কারণে শরীরে নানা ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে।
স্বাস্থ্যবিষয়ক একটি ওয়েবসাইটে অতিরিক্ত লবণ খাওয়ার ক্ষতিকর দিকগুলো তুলে ধরা হয়।
একজন মানুষের শরীরে দৈনিক ২০০ মিলিগ্রাম সোডিয়াম প্রয়োজন, যা মাত্র আধা গ্রাম লবণ থেকেই পাওয়া সম্ভব। এর বেশি লবণ অনেক রকম জটিলতার কারণ হতে পারে।
পানির ভারসাম্যহীনতা: অতিরিক্ত লবণের কারণে শরীরে সোডিয়াম, পটাশিয়াম এবং পানির ভারসাম্য রক্ষার প্রক্রিয়া ব্যহত হয়। স্বাভাবিকভাবে প্রক্রিয়াটিতে কিডনির গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা থাকে। কিডনি এখানে পানিকে ছাঁকনির মতো করে পরিশোধন করে। যখন রক্তে অতিরিক্ত জলীয় অংশ থাকে কিডনি আস্রবণ (osmosis) বা ছিদ্রযুক্ত পর্দার ভিতর দিয়ে তরল পদার্থের ক্ষরণ প্রক্রিয়ায় সেই পানিকে অপসারণ করে মূত্রথলিতে পাঠায়। সেখান থেকে তা মূত্র আকারে বেরিয়ে আসে। এভাবে শরীরে পানির ভারসাম্য রক্ষিত হয়। তবে রক্তে অতিরিক্ত সোডিয়াম কিডনির পানি অপসারণ করার প্রক্রিয়াকে ব্যহত করে।
দিনে কমপক্ষে আট গ্লাস পানি খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হলেও, যখন লবণ বেশি খাওয়া হয় তখন আরও বেশি পরিমাণে পানি পান করা উচিত। এটি শরীরে পানির ভারসাম্য রাখতে সহায়তা করবে।
হৃদপিণ্ডের ক্ষতি: অধিক সোডিয়াম রক্তে মিশে যাওয়ার ফলে এর ঘনত্ব বেড়ে যায়। ফলে সৃষ্টি হয় উচ্চ রক্তচাপ যা হৃদপিণ্ড ও ধমনীর ওপর অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি করে। ফলে অন্যান্য দেহযন্ত্রগুলো দুর্বল হয়ে যেতে পারে। এছাড়াও অধিক লবণ গ্রহণের ফলে করোনারি হৃদরোগ বা ধমনী রক্তজমাট বাঁধা, হৃদপিণ্ড ও কিডনি বিকল হয়ে যাওয়া এমন কি পক্ষাঘাতের ঝুঁকিও বৃদ্ধি পায়।
তাই রক্তচাপ নিয়মিত পরীক্ষা করা উচিত। যাদের বংশগত উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা রয়েছে, তাদের লবণ খাওয়া কমিয়ে আনা জরুরি।
শরীর ফুলে যাওয়া: অতিরিক্ত লবণ গ্রহণের ফলে শরীরে সোডিয়ামের মাত্রা বেড়ে যেতে পারে আর এই উপাদান প্রয়োজনের অধিক পানি ধরে রাখে। তাই এটি সাময়িকভাবে শরীর ফুলে যাওয়ারও কারণ। এই সমস্যা সাময়িক হলেও অস্বস্তি এবং দুশ্চিন্তা বাড়িয়ে দিতে পারে। তাই সমস্যা দীর্ঘস্থায়ী হওয়ার আগেই লবণ খাওয়ায় লাগাম টানা উচিত।