মায়ালীনে ভেসে থাকা দুদিন

কাপ্তাই হ্রদের পানিতে দুলে দুলে সময় কাটবে; সঙ্গে মিলবে প্রকৃতির সৌন্দর্য।

চিররঞ্জন সরকারচিররঞ্জন সরকার
Published : 17 March 2024, 06:27 AM
Updated : 17 March 2024, 06:27 AM

হ্রদে ভেসে থাকা, খাওয়া-ঘুমানো-বেড়ানো, রাত্রিযাপনের জন্য আলাদা কোনো হোটেল-রিসোর্টের প্রয়োজন হবে না। এর চেয়ে চমৎকার আর কী হতে পারে?

এরকম ‘হাউজ বোট’ বলতে যা বোঝায়, সেগুলো সাধারণত ভারত (কাশ্মীরের ডাল লেকে), ভিয়েতনাম, চায়না, থাইল্যান্ড প্রভৃতি দেশে দেখা যায়। আমাদের রাঙামাটিতেও এই ধরনের হাউজ বোট চালু রয়েছে, তথ্যটি প্রথম পাই এক সময়ের সহকর্মী নাহরিন রহমান স্বর্ণার কাছ থেকে।

রাঙামাটির কাপ্তাইলেকে ‘মায়ালীন’ নামে হাউজ বোটের সে শেয়ার হোল্ডার। তার প্ররোচনাতেই ১০ জনের একটা টগবগে দল রাঙামাটি ভ্রমণে জন্য তৈরি হই।

ঢাকা শহরের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে কলাবাগান কাউন্টারে একত্র হয়ে সেন্ট মার্টিন পরিবহনের রবি এক্সপ্রেসে রাত ১১টায় আমরা রাঙামাটির উদ্দেশে যাত্রা শুরু করি। পথে রঙ্গ-তামাসা করতে করতেই সকাল হয়ে যায়।

সকাল সাড়ে সাতটার মধ্যেই আমরা রাঙামাটি পৌঁছে যাই। বাস থেকে নেমে সিএনজি অটোরিক্সায় চেপে আসাম বস্তির উদ্দেশে যাত্রা করি। আধা ঘণ্টার মধ্যে সেখানে পৌঁছে কটা হোটেলে হাতমুখ ধুয়ে খিচুড়ি, মুরগির মাংস আর চা দিয়ে সকালের নাস্তা করি।

নাস্তা শেষ হতেই আমাদের নিতে আসে ‘মায়ালীন’য়ের গাইড কল্যাণ। সে হাসিখুশি সপ্রতিভ একটা ছেলে। কল্যাণ আমাদের পথ দেখিয়ে পাশের একটি ঘাটে নিয়ে যায়। ঘাটে একটি ছোট ফাইবার বোট আমাদেরকে ‘ডিভাইন লেক আইল্যান্ডে’ নিয়ে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত ছিল।

বসন্তের বাতাসে কাপ্তাইয়ের নীল জলের মধ্যে হাঁসের মতো সাঁতার কাটতে কাটতে আমাদের ছোট্ট ইঞ্জিন নৌকাটি এগিয়ে চললো। দূরে পাহাড়। লেকের মাঝে ছোট ছোট টিলা। নির্জন, কোলাহলহীন। সকালের কাঁচা-সোনা রোদে লেকের জল চিক চিক করছিল।

আধা ঘণ্টা নৌপথ পাড়ি দিয়ে আমরা গেলাম ডিভাইন লেক আইল্যান্ডে। দ্বীপের ওপরে সুন্দর একটা রিসোর্ট। সেখানে বসে লেকের সৌন্দর্য দেখছিলাম। আমাদের চেক-ইনের সময় দুপুর বারোটা। এই সময়টা আমরা গল্প-আড্ডায় কাটিয়ে দিলাম। সেখানে আরেক দফা চা পানও হল।

অবশেষে, সাড়ে এগারটার দিকে ভাসমান ভিলা মায়ালীন’য়ে প্রবেশ করার সুযোগ পেলাম। প্রথম দর্শনেই আমরা এর অতুলনীয় সাজসজ্জা দেখে বিমোহিত হয়েছি।

এমনিতে এটাকে একটা দোতলা বাসস্থান বা ভিলা বলে মনে হয়। এটি মূলত একটি ফরাসি নৌকা, যার দুটি হুল একে অপরের সঙ্গে সমান্তরাল। এবং এর স্বাতন্ত্র হলো- ভিলার মতো আকৃতি। আর এই ভাসমান ভিলার ভেতরের সুবিধাগুলি সত্যিই অসাধারণ।

প্রথমেই দুটি বাঙ্ক বেডসহ চারটি জমকালো এসি কেবিন। কেউ সহজেই এই এসি কেবিনগুলিকে অত্যাধুনিক বেডরুমের সঙ্গে তুলনা করতে পারেন। বিছানার চাদর থেকে দেয়াল এবং ছাদ পর্যন্ত সাদার বিভিন্ন শেডে সজ্জিত।

সবচেয়ে আকর্ষণীয় দিক হচ্ছে স্বচ্ছ কাচের দেয়াল দিয়ে চারপাশ ঘেরা। ঘরের মধ্যে বসে চারদিকের প্রাকৃতিক পরিবেশ দেখার সুযোগ। কাচের দেয়ালগুলো স্লাইড করে খোলা ও বন্ধ করা যায়। ফলে ইচ্ছে হলে প্রকৃতির বাতাস উপভোগ করা যায়। আবার ইচ্ছে হলে এসি-ফ্যান চালু করে শহুরে জীবনও উপভোগ করা যায়!

শুধু তাই নয়- একটা বড় টেলিভিশন, কমন লাউঞ্জ, ডেকে বসার ব্যবস্থা, একটি জুস বারসহ দোতলার ছাদে লাউঞ্জ, বাচ্চাদের জন্য আর্কেড গেইমিং জোন এবং একটি বহনযোগ্য সুইমিং পুল রয়েছে। গোপনীয়তা বজায় রেখে একটি জ্যাকুজির ব্যবস্থাও রয়েছে, যাতে লোকেরা বাইরের প্রকৃতি উপভোগ করতে পারে। চাঁদ, তারা, নক্ষত্র দেখার জন্য রয়েছে একটি বিশাল টেলিস্কোপ।

আমরা মায়ালীনের ভেতরে প্রবেশ করে মুগ্ধ হয়ে যাই। দেয়ালের পাশে ছোট একটা কাঠের টেবিলে পানির বোতল। পাশে মোটা কাগজ দিয়ে বানানো একটা এক ফুট দৈর্ঘের একটি গোল কৌটো। কৌটোটার মধ্যে একটা মুখের ছবি আছে। যে মুখটা স্বচ্ছ নীল জলে নাক অব্দি ডুবে যাওয়া। লেকের নীল জলে মায়ায় ডুবে যাওয়ার প্রতীকি ছবি হয়তো! এই কৌটোর মধ্যে টুথব্রাশ পেস্ট, বাথজেল। ধবধবে সাদা বিছানা। কুশন আর কম্বলগুলো সবুজ ঢাকনায় আবৃত।

লেকের নীল জলের মৃদু স্রোত বোটটিকে হালকা দোলাচ্ছিল। এর ভেতরে প্রবেশ করে যেন স্বর্গের এক টুকরো অনুভূতি সৃষ্টি হয়। মনে হয়েছে, স্বর্গীয় অনুভূতির স্বাদ গ্রহণ করবার জন্যই মায়ালীন নামের এই ভাসমান ভিলা পৃথিবীতে নামিয়ে আনা হয়েছে! এটি আমাদের পুরো দেড় দিনের জন্য জীবনে এক অন্য রকম অভিজ্ঞতা ছিল। ব্যস্ত শহুরে জীবনের একঘেয়েমি থেকে মুক্তি দিয়ে এক অনন্য অনুভূতির স্বাদ দিয়েছে।

দ্রুত স্নানের পোশাক পরে তৈরি হই। মায়ালীন আমাদের নিয়ে যাত্রা করবে পাশের একটি টিলায়। যেখানে গাছ রোপন করা হবে। তারপর লেকে স্নান।

কাপ্তাই লেক অসাধারণ সুন্দর একটা জায়গা। স্বচ্ছ নীল জলের মধ্যে ছোট ছোট দ্বীপের মতো টিলা।

কাপ্তাই হ্রদটি দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বৃহত্তম মনুষ্যসৃষ্ট স্বাদু পানির জলাধার। মূলত জলবিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য কর্ণফুলী নদীতে বাঁধ দিয়ে এটি তৈরি করা হলেও প্রচুর পরিমাণে মিঠা পানির মাছ চাষ হয়। যদিও স্থানীয়দের কেউ কেউ এই লেকের জলকে ‘আদিবাসীদের অশ্রু’ হিসেবে বর্ণনা করেন। কারণ এই লেক আদিবাসীদের জীবনে সীমাহীন দুঃখ -দুর্দশার কারণ হয়ে দেখা দিয়েছে। লেকটির আয়তন ১৭২২ বর্গকিলোমিটার।

বার্গি লেকে রয়েছে একটি নান্দনিক রেস্তোরাঁ। তৈরি করা হয়েছে বার্গি পাখির আদলে; যেন দুটি ডানা দুদিকে ছড়িয়ে দাঁড়িয়ে আছে। এখানে রয়েছে পিকনিক স্পট, কায়াকিং ও ক্যাম্পিংয়ের ব্যবস্থা।

হ্রদের পাড়ে রয়েছে পাহাড়িদের বাসস্থানের আদলে তৈরি একটি মাচাংঘর।

এখানে আতপ চালের গরম ভাত মুরগির মাংস, লেকের তাজা মাছ, আলু ভর্তা, মসুর ডাল দিয়ে পেটপুরে খেলাম। তারপর লেকের পাড়ে দোলনায় দোল খেতে খেতে কফি পান। এখানে বসে লেকের সৌন্দর্য দেখতে খুব ভালো লাগছিল, তবে হাতে সময় ছিলো না।

সূর্য পশ্চিমাকাশে হেলে পড়েছে; আর দেরি নয়। মাঝ লেকে গিয়ে সূর্যাস্ত দেখব, মেয়েরা শাড়ি পরে ছবি ছবি তুলবে। তাই প্রস্তুতির একটা ব্যাপার আছে। ফিরলাম মায়ালীনে।

সামনের ডেকের খোলা জায়গায় দাঁড়িয়ে নানান ভঙ্গিতে ছবি তোলার পাশাপাশি এক অপরূপ দৃশ্যের সাক্ষী হই। সূর্য দিগন্তে একটু করে হেলে পড়ছে আর রূপ বদলাচ্ছে। হলুদ থেকে কমলা, কমলা থেকে টুকটুকে লালের বর্ণচ্ছটা ছড়িয়ে দিগন্তে হারিয়ে যাচ্ছে।

আমরা দুপুরের উজ্জ্বল রোদে কাপ্তাই হ্রদের ঢেউ খেলানো নয়নাভিরাম দৃশ্য দেখতে দেখতে বেরান্নে বা বেরাইন্না লেক ধরে এগোতে থাকি। এটা কাপ্তাই লেকেরই অংশ। চাকমা ভাষায় বেরাইন্না শব্দের অর্থ বেড়ানোর আমন্ত্রণ বা বেড়াতে যাওয়া পছন্দ করে এমন ব্যক্তি।

কিছুক্ষণ চলার পর আমরা একটা নির্জন দ্বীপে গিয়ে পৌঁছাই। এখানে গাছ লাগানো হবে। মায়ালীন বোটের মালিকপক্ষ একটি নিয়ম চালু করেছে। যারা এই বোটে ভ্রমণে আসবে তারা প্রত্যেকেই এই দ্বীপে এসে একটি প্রতীকী গাছ রোপণ করবে। পরে কোনো লোকালয়ে এই গাছটি পরিচর্যার জন্য প্রদান করা হবে। যে কোনো ভ্রমণে প্রকৃতির ক্ষতি হয়। সামান্য হলেও এই ক্ষতি পুষিয়ে দেওয়ার একটা ব্যবস্থা! বিষয়টি অভিনব ও মহৎ।

এখানেই আমরা লেকের জলে স্নান করার সুযোগ গ্রহণ করি। আকাশে তপ্ত সূর্য। নিচে আমরা শীতল জলে সাঁতার কাটছি। এই খরার মৌসুমেও লেকের গভীরতা অনেক। সতর্কতার জন্য আমরা সবাই লাইফ জ্যাকেট পরে বেশ খানিকক্ষণ লেকে ভেসে বেড়ালাম।

দুপুরের খাবারের সময় ছিল আড়াইটা। স্নান শেষ করে পোশাক বদলাতে আমাদের সোয়া তিনটা বেজে যায়।

এবার প্রমোদতরী ছুটছে অন্য গন্তব্যে। পড়ন্ত দুপুরে দিগন্ত বিস্তৃত কাপ্তাই হ্রদ যেন পরিণত হয় ঝিলমিলিয়ে ওঠা সোনালি নদীতে। প্রায় পৌণে চারটায় পৌঁছলাম মনোমুগ্ধকর আরেকটি রিসোর্ট বার্গি লেক ভ্যালিতে।

পাহাড়ের বিলুপ্ত একটি ঐতিহ্যবাহী পাখির নামে পর্যটন কেন্দ্রটির নামকরণ করা হয়েছে। শহর থেকে প্রায় আট কিলোমিটার দূরে অবস্থিত।

সর্যাস্তের পর মায়ালীন ডিভাইন লেক আইল্যান্ডে ফিরে আসে। রেস্তোরাঁয় গিয়ে চা-নাস্তা শেষে বসে আমাদের গানের আসর। মিথুন গিটার বাজিয়ে গান ধরে। সঙ্গে স্বর্ণা, আফরীন, ইভানা গান গায়। বৃষ্টি, নীনা, নাজিয়া, ফাহমিদা, ববি গলা মেলায়!

আকাশে তখন তারার মেলা। জলে ভাসা ভিলায় আমাদের সঙ্গীত উৎসব। সাড়ে দশটায় মুরগি, ফিস বার-বি-কিউ দিয়ে রাতের খাবার খাই।

ঢাকার বাইরে গেলে রাতের আকাশের তারা স্পষ্টভাবে দেখা যায়। আকাশের দিকে তাকালেই মন ভালো হয়ে যায়। পুরো আকাশে তারার মেলা, গ্রহ, নক্ষত্রের সমাহার। আবহাওয়া না গরম, না ঠাণ্ডা। অসাধারণ লাগছিল সব। ভ্রমণ ক্লান্তির পরও কারও মধ্যে ঘুমানোর তাড়া ছিল না। এক সময় অবসন্ন হয়ে আমরা নির্জন নক্ষত্র ভরা রাত, আর সূদুর নিহারিকাকে একলা ফেলে ঘুমাতে যাই।

দ্বিতীয় দিন

খুব ভোরে ঘুম ভেঙে যায় পাখির শব্দে। ঘুম থেকে উঠে বাইরে বের হয়ে কিছুক্ষণ চারপাশ দেখলাম। কি সুন্দর! কোলাহলমুক্ত নীরব পরিবেশ, বসন্তের উদীয়মান সূর্যের সাথে রাঙামাটির কাপ্তাই হ্রদের শান্ত জলরাশি আবছা সোনালি আভা দিচ্ছে। স্বচ্ছ কাচের দেয়াল, দূরের পাহাড়, হালকা কুয়াশায় আবৃত, স্বপ্নের মতো দেখাচ্ছে। পাখির কিচিরমিচির সুরেলা শব্দ বুনছে। জলের কোমল ঢেউ এক অপরূপ বিভা তৈরি করছে। পাহাড়ি বাতাসের মৃদু স্পর্শ আমাদের প্রলুব্ধ করে ঘুমানোর বদলে এই সৌন্দর্য আস্বাদের কথা বিবেচনা করতে।

একে একে আমরা উঠে পড়ি। ডিভাইন লেক আইল্যান্ডের রেস্তোরাঁয় পরোটা, ডাল, ভাজি, ডিম, চা ইত্যাদি দিয়ে নাস্তা শেষে তৈরি হতে হতে সকাল সাড়ে দশটা বেজে যায়। দশটায় আমাদের মায়ালীন ছেড়ে দেওয়ার কথা। সব কিছু গুছিয়ে আমরা উঠি একটি ফাইবার বোটে।

এই বোট আমাদের সারাদিন রাঙামাটির বিভিন্ন আকর্ষণীয় পর্যটন স্পটে নিয়ে যায়। এর মধ্যে রয়েছে ঝুলন্ত সেতু, শুভলং জলপ্রপাত, অনির্বাণ নগর বৌদ্ধ মন্দির। যদিও বোটে বসে আড্ডা দিতে এবং লেকের সৌন্দর্য দেখতেই বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করছিলাম।

শুভলং জলপ্রপাত দেখে ফিরতে ফিরতে দুপুর আড়াইটা বেজে যায়। কাপ্তাই হ্রদের আরেকটি নির্জন দ্বীপে মধ্যাহ্ন ভোজনের জন্য বিরতি দিই। টিলার ওপর ছিমছাম রেস্তোরাঁ; নাম স্বর্গ ছেঁড়া ক্যাফে। খাবারের মেনু আগে থেকেই ঠিক করা। আতপ চালের ভাত, লেকের ছোট মাছ ফ্রাই, ব্যাম্বু চিকেন আর ডাল।

রেস্টুরেন্ট থেকে কাপ্তাই লেকের ‘এরিয়াল ভিউ’। ছোট ছোট টিলার পাশে লেকের বেষ্টনী। পাশের টিলার উপর বাঁশের কয়েকটি ঘর। চারদিকে কলা গাছ। মাথার ওপর নীল আকাশ। মনে মনে ভাবি- এখানে যদি অনন্তকাল কাটানো যেত!

আবার যখন নৌকায় উঠলাম বেলা তখন প্রায় সাড়ে চারটা। সূর্যের আঁচ তেমন একটা নেই। টুরিস্ট বোটগুলো ফিরে চলছে। আমরাও ফিরে চলছি শহরপানে।

বিভিন্ন নৌকার শব্দে পাখির ঝাঁক উড়ে যাচ্ছে। আবার তারা ভিন্ন স্থানে বসছে। এই ওড়াউড়ির দৃশ্য দেখে মনটা ভরে যায়। সূর্য তখন একটু একটু পাহাড়ের কোলে হেলে পড়তে শুরু করেছে। সূর্যের লাল আভায় কাপ্তাইয়ের নীল জল কী যে এক অসাধারণ বর্ণ ধারণ করেছে, তা বলে বোঝানো যাবে না।

ঠিক সন্ধ্যা বেলা নৌকা আমাদের রিজার্ভ বাজারের ঘাটে নামিয়ে দিল। চালককে টিপস দিয়ে বিদায় নিলাম। ঘাট থেকে পায়ে হেঁটেই পৌঁছে গেলাম রবি এক্সপ্রেসের কাউন্টারে।

সেখানে ব্যাগ রেখে গেলাম তবলছড়ির টেক্সাইটাইল মার্কেটে। কিছু পাহাড়ি জিনিস কেনা-কাটা করে যখন কাউন্টারে ফিরলাম, রাত তখন সাড়ে আটটা। নয়টায় আমাদের গাড়ি ছাড়বে। এই সময়টুকু কাউন্টারেই কাটিয়ে দিলাম।

গাড়ি যখন ছাড়ল, আমরা সবাই সিটে শরীর এলিয়ে দিলাম। তিন দিনের ঘুমহীন দাপাদাপিতে ক্লান্ত শরীর। ঢাকায় ফিরে আবার চেনা রুটিনে ফেরা- এসবের ফাঁক দিয়েও মায়ালীনে রাঙামাটির কাপ্তাই হ্রদের নীলাভ স্বচ্ছ জলে ভ্রমণ স্মৃতিপটে নক্ষত্রের মতো জ্বলজ্বলে থাকবে।

(ছবি: লেখক)

মায়ালীনে (Mayaleen-Floating Villa at Kaptai) ভ্রমণ করতে চান, তাদের পুরো ভিলা রিজার্ভ করতে খরচ হতে পারে ৫৫ হাজার থেকে ৭৫ হাজার টাকা। এর মধ্যে ছোট বোটের ভাড়াও অন্তর্ভুক্ত আছে। খাবারের জন্য জনপ্রতি ব্যয় হবে ২ হাজার টাকা। ফেইসবুক বা ইনস্টাগ্রামে যোগাযোগ করে রুম ভাড়া নেওয়া যায়।