লক্ষণ যখন শ্বাসযন্ত্রে সংক্রমণ

লক্ষণ বুঝে আগেভাগেই চিকিৎসা নিলে রোগ থেকে হওয়া ক্ষতির পরিমাণ কমান যায়।

লাইফস্টাইল ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 30 Dec 2022, 03:11 PM
Updated : 30 Dec 2022, 03:11 PM

কাশি, সর্দি, বুক ব্যথা হেলাফেলা করা যাবে না।

কোভিড-১৯, ‘রেসপিরাটরি সিনসিশল ভাইরাস (আরএসভি), ‘স্ট্রেপ এ’ বা ‘গ্রুপ এ স্ট্রেপটোককাস’- ব্যাক্টেরিয়ার কারণে গলায় ও ত্বকে সমস্যা বৃদ্ধির কারণে সারা বিশ্বেই শ্বাসযন্ত্রের বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন অনেকে।

সিএনএন’কে এই তথ্য জানিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ‘ন্যাশনাল ফাউন্ডেশন ফর ইনফেকশাস ডিজিজ’য়ের পরিচালক এবং ‘ভ্যান্ডারবিল্ড ইউনিভার্সিটি মেডিকেল সেন্টার’য়ের সংক্রমক রোগ বিভাগের অধ্যাপক ডা. উইলিয়াম শ্যাফনার বলেন, “শ্বাসযন্ত্রে সংক্রমণের ঝুঁকি দিন দিন বাড়ছে। আর এই কারণে লক্ষণগুলো জানা থাকা দরকার। তাহলে দেরি হওয়ার আগেই সময় মতো চিকিৎসা নেওয়া সম্ভব হবে।”

হয়ত কাশছেন

শ্বাসযন্ত্রে সংক্রমণ হওয়া মানে শ্বাসপ্রশ্বাস ব্যবস্থায় সমস্যা দেখা দেওয়া। এর মধ্যে আছে নাঁক, গলা, শ্বাসনালি ও ফুসফুস।

বিভিন্ন ধরনের ভাইরাস, ব্যাক্টেরিয়া বা অন্যান্য অনুজীবের আক্রমণে সাধারণ ঠাণ্ডা লাগা থেকে মারাত্মক নিউমোনিয়া হতে পারে।

শ্বাসযন্ত্রে সংক্রমণের সাধারণ একটি লক্ষণ হল ক্রমাগত কাশি হওয়া। হতে পারে সেটা শুষ্ক অথবা শ্লেষ্মাযুক্ত।

গলা ব্যথা হওয়া

গলা ব্যথা হলে সাধারণভাবেই ধরে নেওয়া হয় শ্বাসযন্ত্রে সমস্যা হয়েছে। সংক্রমণের কারণে গিলতে সমস্যা হয়। আর এটা বেশি দেখা যাচ্ছে করোনাভাইরাস মহামারী শুরু হওয়ার সময় থেকে এখন পর্যন্ত।

ভাইরাসের কারণে প্রাথমিকভাবে গলা ব্যথা ও শ্বাসযন্ত্রের বিভিন্ন কোষে সমস্যা দেখা দেয়।

শুধু করোনাভাইরাস নয়, গলা ব্যথা অন্যান্য ভাইরাসের কারণেও হতে পারে।

নাঁক বন্ধ হওয়া

ঠাণ্ডা লাগলে নাঁক বন্ধ হওয়ার সমস্যায় ভুগতে হয়। তবে এটা শ্বাসযন্ত্রে সংক্রমণেরও সাধারণ লক্ষণ। পাশাপাশি থাকতে পারে সর্দি ঝরা ও পানি পড়ার সমস্যা।

জ্বর আসা

কাশি, সর্দির পাশাপাশি যদি জ্বর আসে তবে ধরেই নেওয়া হয় শ্বাসযন্ত্রে সংক্রমণ হয়েছে। সাধারণত এই অবস্থায় জ্বরে শরীর কাঁপা, ঘাম হওয়া ও দেহে চুলকানি দেখা দিতে পারে।

মানুষের শরীরের স্বাভাবিক তাপমাত্রা হচ্ছে ৯৮.৬ ডিগ্রি ফারেনহাইট। আর তাপমাত্রা ১০০.৪ ডিগ্রি ফারেনহাইট ছাড়ালেই ধরতে হবে জ্বর হয়েছে।

সংক্রমণ, ব্যথাসহ অন্যান্য স্বাস্থ্যগত কারণেও জ্বর আসতে পারে। তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে যা হয় তা হল, জ্বর হলে ধরে নিতে হবে শরীর কোনো রোগের বিরুদ্ধে লড়ছে। তাপমাত্রা বাড়িয়ে দেহ ভাইরাস ও ব্যাক্টেরিয়া মারার চেষ্টা করে। পাশাপাশি রোগপ্রতিরোধ ব্যবস্থার কার্যকারিতা বৃদ্ধি পায়।

হতে পারে নিঃশ্বাসে সমস্যা

যদি নিঃশ্বাস নিতে সমস্যা হয় বা ঘন ঘন শ্বাসপ্রস্বাস ফেলতে হয় তবে ধরে নিতে হবে শ্বাসযন্ত্রে মারাত্মক সংক্রমণ হয়েছে। সেটা হতে পারে নিউমোনিয়া কিংবা কোভিড।

ঘন ঘন নিঃশ্বাস নেওয়া বা ‘শর্টনেস অফ ব্রেথ’ হওয়ার কারণ হতে পারে আরএসভি। যা কিনা মৃদু থেকে মারাত্মক আকার ধারণ করতে পারে।

যাদের সাধারণত ফুসফুসে সমস্যা বা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল হয়, তারা এই ঝুঁকিতে বেশি পড়ে।

ভাইরাসের কারণে শ্বাসনালীতে সংক্রমণ হওয়া অথবা ফুসফুসে পানি জমার কারণে নিঃশ্বাসে সমস্যা দেখা দেয়।

তাই দেরি না করে এই পরিস্থিতে যত দ্রুত সম্ভব ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে। পাশাপাশি প্রচুর বিশ্রাম নেওয়া তরল গ্রহণের প্রয়োজন পড়তে পারে।

বুকে ব্যথা দেখা দিতে পারে

কাশি, নিঃশ্বাসে সমস্যা ও ঘন ঘন শ্বাসপ্রশ্বাসের পাশাপাশি যদি বুকে ব্যথা থাকে তাহলেও সেটা শ্বাসযন্ত্রের সংক্রমণের লক্ষণ।

ওপরের যে কোনো লক্ষণ দেখা দিলে অবশ্যই চিকিৎসকের শরণাপন্ন হয়ে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করাই হবে মঙ্গলজনক। সেই সঙ্গে শ্বাসযন্ত্রের সুস্থতা বজায় রাখতে বিভিন্ন স্বাস্থ্যকর অভ্যাস গড়তে হবে।

এর মধ্যে রয়েছে- ঘন ঘন হাত ধোয়া, হাঁচি কাশির সময় মুখ ঢাকা, অসুস্থদের কাছাকাছি না যাওয়া ইত্যাদি।

আরও পড়ুন

Also Read: যেভাবে বুঝবেন রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে গেছে

Also Read: অসুস্থ অবস্থায় যে ধরনের পানীয়তে আরাম মেলে

Also Read: হাত, পা ও মুখের রোগ