এমন প্রকাণ্ড বাসায় কোন পাখি থাকে? নিশ্চয়ই ওই পাখি আকারেও প্রকাণ্ড! কিন্তু এত বড় বাংলো বাসা নিয়ে যে পাখি থাকে তার আকার ছোটো, অনেকটা চড়ুই কিংবা বাবুই পাখির মতো।
এ পাখির নাম ‘সোস্যায়েবল ওয়েবার’, তাঁতি পরিবারের এ প্রজাতির পাখি দক্ষিণ আফ্রিকা, নামিবিয়া ও বতসোয়ানা জুড়ে পাওয়া যায়।
এ প্রজাতিটি বৃহৎ যৌথ সম্প্রদায়ের বাসা তৈরি করে যা ঝুপড়ির মতো, এতে আছে খড়-ঘাসের ঢালু ছাদ যা রোদ-বৃষ্টি থেকে রক্ষা করে। পালক, ঘাস, বাতাসে ভেসে আসা খড়-তুলো, মরা ডালপাতা ইত্যাদি দিয়ে নিজেদের বাসা তৈরি করে ‘সোস্যায়েবল ওয়েবার’।
সাপ, বেবুন বা ইঁদুরের মতো শিকারী থেকে বাঁচতে ‘সোস্যায়েবল ওয়েবার’ পাখির পছন্দের বাসা বাঁধার স্থানগুলো সাধারণত লম্বা, মসৃণ খুঁটি বা অল্প-শাখাযুক্ত গাছ। দূর থেকে বাসাটি বড় গাছ বা টেলিফোনের খুঁটিতে আটকে থাকা খড়ের গাদার মতো দেখায়।
এক একটা বাসা এক একটা কলোনি বা গ্রামের মতো, গাছের নিচ থেকে ওপরে তাকালে একে অনেকটা মৌচাকের মতো মনে হবে। এতে একশর বেশি ছোট ছোট ঘর থাকে। একটি বাংলোয় কয়েক প্রজন্মের তিন থেকে চারশ পাখির বসবাস। এর ভেতর ছোট ছোট কামরা বা কুঠুরিতে আলাদা আলাদা পরিবার নিয়ে বা জোড়ায় জোড়ায় বসবাস করে তারা। বাসায় ঢোকার টানেল একেকটা দৈর্ঘ্যে প্রায় ১০ ইঞ্চি ও প্রস্থে প্রায় ৩ ইঞ্চি হয়ে থাকে।
যেসব অঞ্চলে ‘সোস্যায়েবল ওয়েবার’ পাখির বসবাস সেখানে দিনে তাপমাত্রা প্রচণ্ড বেশি। আবার রাতে একেবারে উল্টো। তাদের এ বাসা অতিরিক্ত গরম ও ঠান্ডা থেকে রক্ষা করে থাকে। বাসার মাঝখানের ঘরগুলো বেশি উষ্ণ। তবে বাইরের ঘরগুলো তুলনামূলক ঠান্ডা। দিনের গরম থেকে রক্ষা পেতে এসব ঘরগুলোতে আশ্রয় নেয় ওই পাখি।
মাঝে মাঝে নতুন বিচালি দিয়ে মেরামত করতে হয় বাসাটি। এ বাসা প্রায় একশ বছর পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে। কিন্তু বাসা অক্ষত থাকলেও অনেক সময় মারা যায় আশ্রয়দাতা গাছটি। এমনকি বাসার ওজনে নুয়ে কিংবা ভেঙেও পড়ে সে। বংশপরম্পরায় বাসার উত্তরাধিকার পায় পাখির ছানা এবং তাদের পরবর্তী ছানারা।
বতসোয়ানার কালাহারি মরুভূমিতে ‘সোস্যায়েবল ওয়েবার’ পাখির বসবাস সবচেয়ে বেশি। এর চারটি উপ-প্রজাতি রয়েছে। তারা গড়ে ১২ বছর বাঁচে। এ পাখি তাদের বাসা মরুভূমির অন্যান্য পাখিদেরও ব্যবহার করতে দেয়, অন্য পাখিদের সঙ্গে সহবস্থান করে।
তথ্যসূত্র: আফ্রিকাজিওগ্রাফিক ডটকম
কিডস পাতায় বড়দের সঙ্গে শিশু-কিশোররাও লিখতে পারো। নিজের লেখা ছড়া-কবিতা, ছোটগল্প, ভ্রমণকাহিনি, মজার অভিজ্ঞতা, আঁকা ছবি, সম্প্রতি পড়া কোনো বই, বিজ্ঞান, চলচ্চিত্র, খেলাধুলা ও নিজ স্কুল-কলেজের সাংস্কৃতিক খবর যতো ইচ্ছে পাঠাও। ঠিকানা kidz@bdnews24.com সঙ্গে নিজের নাম-ঠিকানা ও ছবি দিতে ভুলো না! |