উত্তর আমেরিকার রূপকথা: মাহাতোর মাছ শিকার

মাহাতো, জন্মের সময় এত্তটুকুন একটা ভাল্লুক ছিলো। সে পৃথিবীর গভীর একটি গুহায় জন্ম নিয়েছিলো।

রানাকুমার সিংহরানাকুমার সিংহ
Published : 10 Oct 2020, 08:38 AM
Updated : 10 Oct 2020, 08:38 AM

মাহাতো ধীরে ধীরে বড়ো হচ্ছিল। তবে কারও ক্ষতি করার মতো এতটা বড় ছিলো না। তার মা তাকে ‘মাহতোকিকালা’ বলে ডাকতো।

যখন তার মা দীর্ঘ ঘুম থেকে জেগে উঠলেন, তখন তিনি ছোট্ট মাহাতোকে ধরে বসন্তের উজ্জ্বল রোদে তুললেন- ‘আমার মাথার উপর উড়তে থাকা এই প্রাণীগুলো কী?’ মাহাতো জিজ্ঞাসার ভঙ্গিতে মায়ের দিকে তাকায়।

‘ওম্বলি’, তার মা নিচু স্বরে জবাব দিল। ‘এটি ঈগল। ঈগল থেকেই আমরা নিজের জীবনকে নিয়ে মর্যাদায় বাঁচতে শিখি। ঈগলের চোখ আমাদের চাইতে অনেক আগ্রহী, তাই ঈগল সবসময় উপর থেকে যে সতর্কবাণী পাঠায় তা আমরা শুনতে পাই।’

ছোট্ট ভাল্লুকের মা তাকে মিষ্টি গন্ধযুক্ত তৃণভূমি পেরিয়ে নদীর ধারে নিয়ে গেলেন। সেখানে তিনি তাকে পানি পান করা শেখালেন। সে ঠান্ডা-পরিষ্কার জলে মুখ ঢুকিয়ে স্বাদ নিলো। বয়ে যাওয়া জলের স্রোত তাকে সতর্ক ও সজাগ করে তুলেছিল।

বহু বছর পর যখন সে যোদ্ধা হয়ে উঠবে, মাহাতো তার প্রথম পানীয়টি মনে রাখবে নিশ্চয়। যখনই শিকারের বা সতর্কতার প্রয়োজন হয়েছিল, তখন সে নিজেকে প্রস্তুত করতে নদীর তীরে মায়ের সঙ্গে ডুবে যেত।

মাহাতো বড় হয়েছে। তার প্রথম দিনগুলোকে স্নেহের সঙ্গে স্মরণ করা যেতে পারে, কারণ তার মা ছিলেন এক দুর্দান্ত শিক্ষক। তিনি সবসময় তাকে রক্ষা করেছিলেন এবং সুন্দরভাবে বেঁচে থাকার দিকনির্দেশনা দিয়েছিলেন।

তিনি তাকে শিখিয়েছিলেন কীভাবে পতিত ফার গাছের গুঁড়োগুলোর ভেতরে গ্রাবের শিকার করতে হয়। তিনি তাকে শিখিয়েছিলেন কোন ফুল এবং ঘাস সবচেয়ে মিষ্টি, কোন শেকড়গুলো তাকে শক্তিশালী করবে এবং কোন বেরি শীতের প্রথম দীর্ঘ ঘুমের জন্য তার মাংস পূর্ণ করবে।

পিচ্ছিল নদীতে কীভাবে লাল মাছটি ধরতে হয় মা তাকে শিখিয়েছিলেন। মাহাতোর মা তাকে দুটি নদীর পারে কঠিন শিলার মধ্যে একটি বিশেষ জায়গা দেখিয়েছিলেন যেখানে তিনি শিকারের জন্য নিজেকে প্রস্তুত রাখতেন। মা বলতেন, ‘এই জায়গায় চুপচাপ এবং ধৈর্য সহকারে অপেক্ষা কর’।

তিনি বলেছিলেন, ‘দুর্দান্ত লাল মাছগুলো লাফিয়ে উঠবে এবং সরাসরি তোমার মুখের মধ্যে চলে আসবে’। এভাবে মাহাতো লাল মাছ শিকারে পাকা হয়ে ওঠে।

আর মাহাতো ও তার মাকে দেখে মানুষেরা লাল মাছ ধরা শেখে। সেই সময় থেকে মাহাতো এবং আশপাশের লোকেরা কখনও ক্ষুধার্ত হয়নি। লোকেরা মাহাতো এবং তার মায়ের উপহারের জন্য খুশিমনে নাচ-গান করতো।

কিডস পাতায় বড়দের সঙ্গে শিশু-কিশোররাও লিখতে পারো। নিজের লেখা ছড়া-কবিতা, ছোটগল্প, ভ্রমণকাহিনী, মজার অভিজ্ঞতা, আঁকা ছবি, সম্প্রতি পড়া কোনো বই, বিজ্ঞান, চলচ্চিত্র, খেলাধুলা ও নিজ স্কুল-কলেজের সাংস্কৃতিক খবর যতো ইচ্ছে পাঠাও। ঠিকানা kidz@bdnews24.com । সঙ্গে নিজের নাম-ঠিকানা ও ছবি দিতে ভুলো না!