হাওরের পদাবলী ও অন্যান্য

সুমন বনিকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 12 June 2020, 04:42 AM
Updated : 12 June 2020, 05:01 AM

হাওরের পদাবলী

হাওরের শরীর জুড়ে রাশি রাশি অথৈ জল

বুক ডুবিয়ে হিজল জারুল হাসে খল খল।

রোদেলা আকাশের নীল রঙটি টুপটাপ ঝরে

হাওর যেনো সেই রঙটি তার বুকে পেতে ধরে।

বর্ষা এলে হাওরের দেহে ভরা যৌবন আসে

শীতকালে তার শীর্ণ কায়ায় খাল বিল হাসে।

বর্ষায় কালো মেঘ ভাসে হাওরের গোমড়া মুখে

হাওরবাসী মনের কষ্টে বিষণ্নতায় ধুকে।

হেমন্ত এলে পাকা ফসলের মো মো গন্ধে

মন ভরে পালা পার্বণ ধামাইলের ছন্দে।

পূর্ণিমার রাতে জোছনা ঝরে হাওরের জলে

মনের গহিনে হাসনের গীত ওঠে উছলে।

ঋতু বদলের রঙটা মেখে মানুষ যে হাসে

বন্যা খরায় সবাই থাকে একে অন্যের পাশে।

হাওরের মানুষ প্রকৃতিকে নিয়ে পথ চলে নিত্য

ওদের কান্না বাতাসে ঘুরে হাহাকার করে চিত্ত।

চা বাগানের গল্প

দুটি পাতা একটি কুঁড়ির সবুজ গালিচা ঘিরে

তার গা ছুঁয়ে সেই শিশুকাল আসে যে ফিরে ফিরে

দুই ধারে পাহাড় সর্পিল পথ চলে গেছে বহুদূরে

পাহাড়ের গায়ে জেগে উঠে সূর্য প্রতিটি নতুন ভোরে।

সারি সারি ছায়াবৃক্ষ দাঁড়িয়ে দেয় পরম ছায়া

চোখের পাতায় ভেসে ওঠে সেই সবুজের মায়া

চায়ের পাতার ফাঁকে শাদা শাদা ফুলের বাহারে

চা বাগানে এলে মনের দরজাটা খুলে আহা রে!

চা শ্রমিকের তপ্ত ঘামে ভেজা সবুজ ঘাস

জরাজীর্ণ জীবনের সঙ্গে নিত্য বসবাস

শ্রমিকের রক্ত চুষে জ্বলে চিমনির ধোঁয়া

দাসত্বের জীবনের শেকড় চা বাগানে রোয়া

শত শদীদের রক্তে ভেজা চা বাগানের মাটি

খেজুরিছড়া দেওয়াছড়া তেলিয়াপাড়ার ঘাঁটি।

পালা পার্বণ হোলি উৎসবে বাজে রে মধুর বীণ

চা শ্রমিকের জীবনে আঁধার কেটে আসে না সুদিন

প্রকৃতির সঙ্গে মিলেমিশে চলে জীবনের উৎসব

ষড়ঋতু আসে বছর বছর সঙ্গে বিপুল বৈভব।

ফুলের হাসিতে রাঙা সকাল

এই যে আমার উঠোন জুড়ে

মাধবীলতা দোলে

আবছা আলোর আঁধার নিয়ে

সন্ধ্যা যখন ঝুলে।

জবা টগর জুঁই চামেলির

কী যে রঙিন হাসি

মন তখন হাওয়ায় ভাসে

পুলক রাশি রাশি।

রাত বিরেতে হাস্নাহেনার

উদাস করা গন্ধে

মনটা তখন নেচে উঠে

ময়ূর নাচের ছন্দে।

জুঁই চামেলি কাঁঠালচাপার

মিষ্টি হাসি দেখে

সকালটা যে হচ্ছে রাঙা

ওদের রেণু মেখে।

কিডস পাতায় বড়দের সঙ্গে শিশু-কিশোররাও লিখতে পারো। নিজের লেখা ছড়া-কবিতা, ছোটগল্প, ভ্রমণকাহিনী, মজার অভিজ্ঞতা, আঁকা ছবি,সম্প্রতি পড়া কোনো বই, বিজ্ঞান, চলচ্চিত্র, খেলাধুলা ও নিজ স্কুল-কলেজের সাংস্কৃতিক খবর যতো ইচ্ছে পাঠাও। ঠিকানা kidz@bdnews24.com। সঙ্গে নিজের নাম-ঠিকানা ও ছবি দিতে ভুলো না!