চিত্তরঞ্জন সাহা চিতু
গল্প শুনি কত
যুদ্ধ যখন বাঁধলো দেশে
ছিলাম শিশুর মতো,
এখন আমি মায়ের মুখে
গল্প শুনি কতো।
মুক্তিসেনা যুদ্ধ করে
জীবন বাজি রেখে
শত্রুসেনা কাঁপতে থাকে
এদের সাহস দেখে।
মা তো বলে যুদ্ধ চলে
দীর্ঘ ন'মাস ধরে,
ডিসেম্বরের ঠিক ষোলতে
দেশটা স্বাধীন করে।
মায়ের মুখের গল্প শুনে
কত্তো ভালো লাগে,
মনের ভেতর যুদ্ধে যাওয়ার
ইচ্ছেটা আজ জাগে।
অজিত রায় ভজন
মায়ের ছেলে
যুদ্ধে যাবো বিজয় পাবো
এমনি করে পণ,
স্বাধীন দেশে গর্বে হেসে
কেটেই যাবে ক্ষণ।
মায়ের ছেলে সবটা ফেলে
অস্ত্র তুলে হাতে,
যুদ্ধে চলে ‘জয় মা’ বলে
আঁধার কালো রাতে।
ন'মাস শেষে সূর্য হেসে
আলোক দিয়ে কয়,
বাংলাদেশে বীরের বেশে
আসলো প্রিয় জয়।
যুদ্ধ গেলো বিজয় এলো
মায়ের ছেলে কই?
দু'চোখ বুজে ছেলের খুঁজে
অশ্রু ঝরে ওই।
স্বাধীনতার গান
বুকের তাজা রক্ত দিয়ে
মুক্ত করে দেশ
নীল আকাশে কেতন খানি
উড়ছে দেখো বেশ।
মা'র ললাটে সিঁদুর যেনো
সবুজ মাঠে হাসে,
স্বাধীন এদেশ তাইতো সবে
যায় রে ভালোবেসে।
দেশের লাগি এমন করে
মায়ের ছেলে সবে
যুদ্ধ করে চলছে আজো
এমনি তাঁরা ররে।
দেশ পাহারা দেয় তো তাঁরা
রাখবে তারই মান
আনন্দে আজ গায়রে সবে
স্বাধীনতার গান।
রানাকুমার সিংহ
খোকা
একাত্তরে যুদ্ধ যখন শুরু
ঠা-ঠাঠা-ঠা গুলির আওয়াজ
চারদিকে যেন পড়ছিল বাজ
খোকার বুকে গেঁথেছিলো
কাঁপন দুরুদুরু!
সেই কথাটি পড়লে মনে
শিউরে গা আজ এই ক্ষণে!
কেমন করে ভুলতে পারে
সেই কথাটি বলো
খোকার চোখের কথা বোঝে
আকাশ নদী জলও।
একাত্তরের সেই এক রাতে
শেষ দেখা হয় বাবার সাথে
খোকার তখন বয়স সবে সাত
তখন থেকেই বাবার পরশ
খুঁজতো খোকার কোমল দুটি হাত।
বাবা গেলো যুদ্ধে চলে
ফিরে আসার কথা বলে
খোকার দুচোখ ভরেছিলো
সাগর সমান জলে।
নয়টি মাসের লড়াই শেষে
আসলো বিজয় হেসে হেসে
ষোলই ডিসেম্বরে
কিন্তু খোকার বাবা কভু
আসলো না আর ফিরে।
তখন থেকেই খোকার চোখে
বাস্তবতায় স্বপ্নলোকে
স্বাধীনতা বিজয় যে তার
বাবার স্মৃতি ঘিরে।
রফিক আহমদ খান
তাদের জন্য গান
নয় মাস জুড়ে যুদ্ধ শেষে
ষোল ডিসেম্বর
বীর বাঙালি বিজয় নিয়ে
ফিরলো মায়ের ঘর।
কেউ ফিরেছে, কেউ ফেরেনি
যারা দিলো প্রাণ
যুদ্ধ করে জীবন দিয়ে
রাখলো দেশের মান।
ডিসেম্বরে তাদের জন্য
ভালোবাসার গান
গাইবো আমরা শুনাবো আর
পাখির কলতান।
ইমরান পরশ
শেখ মুজিবুর নাম
একটি আঙুল গর্জে উঠে
করল যেদিন শাসন
উঠল কেঁপে পাকবাহিনীর
স্বৈরাচারি আসন।
তাঁর ইশারায় বীর বাঙালি
বুকের জমিন পেতে
মুক্ত করে স্বদেশভূমি
গর্বে ওঠে মেতে।
এই আঙুলই জাতির পিতার
শেখ মুজিবুর নাম
জাতির পিতার জায়গাতে তাঁর
নাম লিখে রাখলাম।
এই পতাকা
এই পতাকা আমার
এই পতাকা তোমার
এই পতাকার মান বাঁচাতে
ভয় করিনি বোমার।
এই পতাকা বাবার
এই পতাকা সবার
এই পতাকা দেয় প্রেরণা
মুক্ত হতে যাবার।
খায়রুল আলম রাজু
বিজয়
বিজয় মাসে ভোরের রবি, ছড়ায় আলো হাসিতে
যেমনি করে সুরের মায়া রাখাল ছড়ায় বাঁশিতে!
বিজয় ছবি আঁকতে থাকি পরীর ডানা, পাখিতে;
বন-বনানী গাছ-গাছালি অবুঝ শিশুর আঁখিতে।
বিজয় হাসি নাচতে থাকে পল্লী-বালার চুলেতে
সবুজ ঘাসে, ধানের শীষে, শিশির ভেজা ফুলেতে।
বিজয় সুরে উড়তে থাকি বিজয় খুশির ঘুড়িতে
উড়ে উড়ে যাই হারিয়ে নাম না জানা পুরীতে।
বিজয় বাজে প্রাণের মাঝে তাক ধিনা-ধিন সুরেতে
আপন মায়ায় আপন সুরে আকাশ নীলের দূরেতে।
বিজয় আমার মুক্ত স্বাধীন বাউল-কবির ভাষাতে
বিজয় আলো যাক ছড়িয়ে দেশটা গড়ার আশাতে।
ঘুঘু পাখির বিজয়
একটি ঘুঘুর দুইটা ছানা তিড়িং বিড়িং নাচে
দূরের বনে বসতি তাদের শিউলী ফুলের গাছে।
হাসতো রোজই খেলতো রোজই ঘুরতো তারা বনে
বনটা তাদের মায়ের মতোই ভাবনা পুষে মনে।
একদা বনে আসলে শকুন করলো আদেশ জারি
থাকতে বনে রাখবে মনে আমার হুশিয়ারি।
কিন্তু ঘুঘুর বাচ্চা দুটো ভীষণ প্রতিবাদী
থাকবো নাকো রাজার শানে, এক কথা এক দাবি।
শুনেই শকুন চমকে উঠে দেখবো বেটা নবাব
রক্ত আগুন বুলেট ছুড়ে দিবোই কথার জবাব।
দেখবি তখন বুঝবি বাছা মরার কেমন সাধ
ঘুঘু ছানার কণ্ঠে তবু জয়ের প্রতিবাদ।
কিন্তু মায়ের হাজার-বারণ হৃদ মাজারে ভয়
ঘুঘু ছানার কণ্ঠে তবু জয় বাংলা জয়।
ছেলের মায়া প্রাণের মায়া আজকে মাগো থাক
বনটা জুড়ে রক্ত আগুন যুদ্ধে যাবার ডাক।
এমনি করে ঘুঘুর ছানা জয়ের মুকুট পরে
যুদ্ধ শেষে বীরের বেশে ফিরলো মায়ের ঘরে।
সেদিন থেকেই ওই পতাকা লাল-সবুজে আঁকা
বিজয় তুমি দেশ ও জাতির স্বপ্ন কাজলমাখা।
বিজয় কেতন
কিচিরমিচির পাখির সুরে উঠোন কোণে বসে
রোজ সকালে খোকন সোনা রঙের হিসাব কষে।
শিশির ভেজা মিষ্টি রোদের মায়ার পরশ মেখে
কিসের ছবি খোকন সোনা যাচ্ছো শুধুই এঁকে!
খোকার হাতে সবার চেনা দুইটা প্রিয় রঙ
কিন্তু মায়ের হয় না বোঝা খোকন সোনার ঠঙ।
ছবির আঁচড় দেখতে কেমন? ঠিক গোলাকার ডিম
তার উপরে আয়তক্ষেত্র দেখেই শরীর হিম!
খোকন সোনা মায়ের চোখে ক্যামনে দেবে ফাঁকি
কিসের ছবি বুঝতে মায়ের রইলো না আর বাকি।
ছবির গঠন দেখেই মায়ের চাঁদের হাসি গালে
কিসের ছবি? বিজয় কেতন সবুজ এবং লালে।
মাহমুদ লতিফ
আহ্বান
এসো খোকা এসো খুকু
ঘুমিয়ে থেকো না আর
তাকিয়ে দেখ সম্মুখে তোমার
মুক্ত আলোর দুয়ার।
চলো খোকারা চলো খুকুরা
হও প্রাণ উচ্ছল
জাতি হিসেবে স্বাধীন তোমরা
রেখো দৃঢ় মনোবল।
তোমাদের পিতা তোমাদের মাতা
ছিলো এ দেশেরই সন্তান
স্বাধীন করতে এ দেশ তারা
করেছেন জান কোরবান।
তাদেরই আশিস পেয়েছো তোমরা
গড়ে তুলবে এ দেশ
সাজিয়ে দিও বাংলাদেশেরে
প্রাণ করে নিঃশেষ।
সাকিব জামাল
বিজয় ফুল
আয় বন্ধু খুশি মনে
ইশকুলেতে যাই
ইশকুলেতে গিয়ে মোরা
‘বিজয় ফুল’ বানাই।
বিজয় ফুলের মানে
এসো, তুমি আমি জানি
ছয় পাঁপড়ি ছয় দফা
মাঝে উজ্জ্বল ৭ মার্চ খানি।
বিজয় ফুল পড়ি বুকে
মুক্তিযুদ্ধের চেতনায়
বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা
গড়ে তোলার বাসনায়।
কিডস পাতায় বড়দের সঙ্গে শিশু-কিশোররাও লিখতে পারো। নিজের লেখা ছড়া-কবিতা, ছোটগল্প, ভ্রমণকাহিনী, মজার অভিজ্ঞতা, আঁকা ছবি,সম্প্রতি পড়া কোনো বই, বিজ্ঞান, চলচ্চিত্র, খেলাধুলা ও নিজ স্কুল-কলেজের সাংস্কৃতিক খবর যতো ইচ্ছে পাঠাও। ঠিকানা kidz@bdnews24.com । সঙ্গে নিজের নাম-ঠিকানা ও ছবি দিতে ভুলো না! |