বাড়ির পাশের আবর্জনা দিয়েও বাসা তৈরি করে অনেক পাখি। কাঁদা দিয়েও অনেকে বাসা তৈরি করে। যেমন ফ্লেমিঙ্গো। বালু দিয়েও অনেক পাখি তাদের বাসা বানায়। বাসা তৈরিতে মানুষের চেয়ে বিচিত্রতায় পাখিরাই সেরা।
পৃথিবীতে কত রকমের পাখির বাসা আছে তার ইয়ত্তা নেই। পাখির মধ্যে একই নামের বিভিন্ন প্রজাতির পাখির রঙ-চেহারায় অমিল আছে। বিভিন্ন নান্দনিক রঙের মিশ্রণে ভিন্নতা রয়েছে। পাখির বাসার কথার ক্ষেত্রেও পার্থক্য আছে। কিছু কিছু পাখির বাসা তৈরির কৌশলে মারপ্যাঁচ আছে।
একটা কবিতা তোমরা শুনেছো নিশ্চয়। রজনীকান্ত সেনের ‘স্বাধীনতার সুখ’ কবিতা। এখানে বাবুই আর চড়ুই পাখির বাসা নিয়ে তর্কাতর্কি হয়েছে। তাহলে কিছু অংশ তুলেই ধরি আবার-
‘বাবুই পাখিরে ডাকি, বলিছে চড়াই/ কুঁড়েঘরে থেকে কর শিল্পের বড়াই/ আমি থাকি মহাসুখে অট্টালিকা পরে/ তুমি কত কষ্ট পাও রোদ, বৃষ্টি, ঝড়ে...’
এ থেকে আমাদেরকেও শিক্ষা নিতে হবে। তাই বলি তোমাদেরকেও নিজের পায়ে দাঁড়াতে শিখতে হবে। বাবা-মা বা আত্মীয়-স্বজনের কাছে মুখাপেক্ষী হওয়া যাবে না। এর জন্য পড়াশোনা করে ভালো মানুষ হতে হবে।
টুনটুনি আমাদের প্রিয় পাখিদের মধ্যে অন্যতম। এরাও পাতার সাথে পাতা মিলিয়ে সুন্দর বাসা তৈরি করে। ছোট্ট পাখি এরা। এদেরকে ‘দর্জি পাখি’ বলা হয়। টুনটুনি পাখি তার বাসা তৈরি করার আগে দুটি কি তিনটি পাতা সেলাই করে একটা বাটির মতো তৈরি করে; তার মধ্যে নরম ঘাস পাতা দিয়ে সে তার বাসাটি বানায়। সেলাইয়ের সুতো সাধারণত রেশমেরই ব্যবহার করে; কাছে রেশম না থাকলে যে সুতো পায় তাই দিয়ে করে। সেলাইয়ের ছুঁচ হলো তার সরু ঠোঁট-জোড়া।
কাকের বাসা থাকলেও ডিম পাড়ে কোকিলের বাসায়। এটা তোমরা গল্পেও শুনেছ। দোয়েল অন্য পাখিদের বাসা দখলের ক্ষেত্রে প্রথম বলতে হবে। এরা আবাবিল, কাঠঠোকরা, টিয়া, বসন্তবৌরি ইত্যাদি পাখির বাসা দখল করে বাস করে। আবার নিজেরাও বাসা বানায়। বাসা বানানোর ক্ষেত্রে বোকামি করে। মানুষ চলাচল করে এমন জায়গায় বা বন্য প্রাণীর নাগালেই বাসা করে ফেলে।
কিছু পাখি পানিতে থাকে। এদের আমরা জলজ পাখি বলি। যেমন ডাহুক, কালিম পাখি ইত্যাদি জলজ পাখি পানির ওপর কলমি, শাপলা, পদ্মফুল বা জলজ কোনো উদ্ভিদের ঝোপে খড়কুটা দিয়ে বাসা বানায়। অনেক সময় পানির চলমান স্রোতে কলমি বা কচুরিপানার সঙ্গে এসব পাখির বাসাও ভেসে যেতে থাকে।
অনেক জাতের পাখি কাদা দিয়েও তাদের বাসা বানায়। আফ্রিকার ফ্লামিঙ্গোর বাসা কাদার তৈরি। একটা ঢিপির মতো কাদা সাজিয়ে তার মাঝে একটা গর্ত করে ফ্লামিঙ্গো ডিম পাড়ে। আরো অনেক জাতের পাখিও কাদার বাসা বানায়; তাদের অধিকাংশই আফ্রিকার।
কিডস পাতায় বড়দের সঙ্গে শিশু-কিশোররাও লিখতে পারো। নিজের লেখা ছড়া-কবিতা, ছোটগল্প, ভ্রমণকাহিনী, মজার অভিজ্ঞতা, আঁকা ছবি,সম্প্রতি পড়া কোনো বই, বিজ্ঞান, চলচ্চিত্র, খেলাধুলা ও নিজ স্কুল-কলেজের সাংস্কৃতিক খবর যতো ইচ্ছে পাঠাও। ঠিকানাkidz@bdnews24.com । সঙ্গে নিজের নাম-ঠিকানা ও ছবি দিতে ভুলো না! |